‘মিস ডিভা ইউনিভার্স ২০১৯’ খেতাবজয়ী ভর্তিকা সিং এবার বলিউডে পা রাখলেন। জংলি পিকচার্সের ছবি ‘হক’ দিয়ে বড়পর্দায় তাঁর অভিষেক হলো। ইমরান হাশমি ও ইয়ামি গৌতম অভিনীত সুপর্ণ ভার্মা পরিচালিত ছবিটি শাহ বানো মামলা দ্বারা অনুপ্রাণিত। অভিনয়জীবনের শুরুতে এমন এক সিনেমার সঙ্গে নিজের নাম জুড়তে পেরে দারুণ খুশি ভর্তিকা। ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনকে এক সাক্ষাৎকারে অভিনয়জগতে পা রাখা নিয়ে কিছু কথা ভাগ করে নিয়েছেন এই নবাগতা অভিনেত্রী।
প্রথম সিনেমা মুক্তির পর নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে ভর্তিকা বলেন, ‘সত্যি বলতে, এখনো সবকিছু অবিশ্বাস্য লাগছে। ছোটবেলা থেকে এমন মুহূর্তের স্বপ্ন দেখে এসেছি; কিন্তু যখন বাস্তবেই ঘটেছে। তখন নিজেকে আত্মস্থ করার জন্য কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকতে ইচ্ছা হয়েছিল। উত্তেজনা, নার্ভাসনেস আর গভীর কৃতজ্ঞতা—সবকিছুই একসঙ্গে অনুভব করেছিলাম। বড় পর্দায় নিজেকে প্রথমবার দেখার অভিজ্ঞতা কখনো ভুলব না। সেটা ছিল গর্ব, বিস্ময় আর নিখাদ আনন্দের এক মিশ্র অনুভূতি।’
ছবিতে ভর্তিকাকে ‘সায়রা’ চরিত্রে দেখা গেছে। অভিনেত্রী বলেন, ‘সায়রার সরলতা আর নীরব শক্তি আমাকে টেনেছিল। খুব বেশি কথা সে বলে না, কিন্তু তার ভেতরে আছে গভীর আবেগ আর অনুভূতি। কীভাবে কথা না বলেও এত কিছু প্রকাশ করা যায়—এটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে। “হকের” লেখাটাও খুব বাস্তব বলে মনে হয়েছিল। কাহিনিতে কোথাও বাড়িয়ে বলার চেষ্টা নেই। গল্পের মধ্যে সততা ধরা পড়েছে এবং এটা মাটির কাছাকাছি। এই ছবির চিত্রনাট্য একজন অভিনেতা হিসেবে আমার হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল, তখনই মনে হয়েছিল যে এটা আমাকে করতেই হবে।’
সমালোচকেরা তাঁদের লেখায় ভর্তিকার প্রশংসা করেছেন। অভিনেত্রী বলেছেন, ‘সবার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পড়ার অভিজ্ঞতা সত্যি দুর্দান্ত। আমাকে অনেকে আত্মবিশ্বাসী, স্থির এবং প্রথম সিনেমা হিসেবে সাবলীল বলে মন্তব্য করেছেন, এ সবকিছু আমার জন্য খুবই বড় পাওয়া। আমার অভিনয়ের সঙ্গে তাঁরা যে সংযোগ বোধ করেছেন এবং আমার প্রয়াসকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, তার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। একজন অভিনেতা হিসেবে প্রতিটি চরিত্রে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উজাড় করে দিতে হয়। আর অভিনেতার পরিশ্রম মানুষ যখন বুঝতে পারেন, তখন সেটা এক বড় প্রাপ্তি। আমার পরিশ্রম অন্যের চোখেও ধরা পড়েছে, এ অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ।’
র্যাম্প থেকে অভিনয়ে আসার যাত্রা প্রসঙ্গে ভর্তিকা বলেন, ‘এই যাত্রা ছিল শেখা, ভুলে যাওয়া আর আবার নতুন করে বেড়ে ওঠার এক মিশ্র অভিজ্ঞতা। দুই জগৎই আলাদাভাবে সৃজনশীল, তবে অভিনয় আপনাকে খুব ব্যক্তিগত ও খাঁটি অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ দেয়। মডেল থেকে অভিনেত্রী—এই বদলটা সহজ ছিল না। কিন্তু আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি যে সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলাতে হবে, আর এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি ধাপে কিছু না কিছু মূল্যবান শিক্ষা আমি পেয়েছি।’
ভবিষ্যতে কোন ধরনের চরিত্রে নিজেকে দেখতে চান? ভর্তিকার উত্তর, ‘যে চরিত্র আমাকে চ্যালেঞ্জ করবে, আমার আবেগকে নাড়িয়ে দেবে—এমন চরিত্র আমাকে বেশি টানে। এমন গল্প ভালো লাগে, যা বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকে, কিন্তু তবু ভেতরে কোনো আশার আলো বা কাব্যময় সৌন্দর্য বহন করে। আমার টান এমন সব চরিত্রের প্রতি, যারা সময়ের সঙ্গে বদলায়, যারা নিখুঁত নয়; কিন্তু খুব বাস্তব।’