দেশে আজ মুক্তি পাচ্ছে দুটি সিনেমা। সাদেক সিদ্দিকীর ডাইরেক্ট অ্যাটাক দিয়ে দীর্ঘদিন পর দর্শকদের সামনে আসছেন চিত্রনায়িকা পপি। অন্যটি লোককথা নিয়ে রিপন নাগ পরিচালিত সাত ভাই চম্পা আদি পার্ট-ওয়ান ও পার্ট টু। সিনেমা দুটির বিস্তারিত জানাচ্ছেন মনজুরুল আলম
ছয় বছর পর ফিরছেন পপি
২০১৯ সালে দি ডিরেক্টর সিনেমায় সর্বশেষ পপিকে দেখা গিয়েছিল। তার পরে চলচ্চিত্রে তাঁকে তেমন একটা দেখা যায়নি। এর মধ্যে ২০২০ সালে ডাইরেক্ট অ্যাটাক সিনেমায় নাম লেখান। শিডিউল জটিলতা দিয়েই শুরু হয় সিনেমার শুটিং। বারবার শিডিউল জটিলতা, করোনাসহ নানা জটিলতায় আটকে থাকা সেই সিনেমা দিয়েই দীর্ঘ ছয় বছর পরে পর্দায় ফিরছেন এই নায়িকা পপি।
২০২৩ সালের পর নিজেকে গুটিয়ে নেন পপি। বিয়ে নিয়েও তৈরি হয় গুঞ্জন। এ বছরের শুরুর দিকে জমি নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলে কয়েক দিনের জন্য সামনে আসেন এই নায়িকা। তারপর আবার নিজেকে আড়ালে রেখেছেন। এমনকি নিজের সিনেমার প্রচারেও তিনি নেই।
সিনেমার পরিচালক সাদেক সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক তারকা নিয়ে শুটিং করেছি। কিন্তু প্রচারণায় কাউকেই পাচ্ছি না। কেউ একটি স্ট্যাটাসও দিচ্ছেন না। প্রচারণায় সবাই থাকলে হয়তো আরেকটু সুবিধা পেতাম। তারকারা অনেকেই দেশের বাইরে। কেউ আবার আড়ালে। সিনেমাটার প্রতি কারও ভালোবাসা আছে কি না জানি না। সিনেমাটির প্রচারে নিজেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
সিনেমাটি কেন দেখবেন দর্শক? এমন প্রশ্নে এই পরিচালক জানান, সিনেমায় দেশের কথা রয়েছে। মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার জন্য আইটেম গান রয়েছে। ‘আমার সিনেমা পুরো অ্যাকশন ঘরানার। এটি পুরোপুরি বাণিজ্যিক সিনেমা। এই সিনেমার ৩০ ভাগেই অ্যাকশন, মারপিট রয়েছে। এমন অ্যাকশন দর্শক অনেক দিন দেখেনি।’
প্রচারে না থাকলেও নায়িকার প্রশংসাই করলেন পরিচালক, ‘সিনেমার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন পপি। অনেক ঝুঁকি নিয়ে ফাইটিং দৃশ্যের শুটিং করেছেন। এসব দৃশ্যে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। তিনি অনেক ভালো অভিনয়ও করেছেন। দর্শক পর্দায় দেখলেই বুঝতে পারবেন।’ ছবিতে পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন পপি। পপির বিপরীতে আছেন আমিন খান। আরও অভিনয় করেছেন মামুনুর ইমন, অভি, শিরিন শিলা, রীতা প্রমুখ। অতিথি চরিত্রে রয়েছেন হেলাল খান। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ৩০টি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি আজ মুক্তি পাচ্ছে।
ধারাবাহিক থেকে সিনেমা
বড় বাজেটের কারণে ২০১৭ সালের দিকে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল সাত ভাই চম্পা। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সিনেমাটির সেট নির্মাণ করতেই নাকি খরচ হয়ে যায় কোটি টাকা। এসব নানা আলোচনার মাঝেই সিনেমাটি মেগা ধারাবাহিক নাটক হয়ে যায়। সেভাবে কার্যক্রম চললেও গত বছর হঠাৎ করেই জানা যায় ধারাবাহিক নাটকটি ওয়েব সিনেমা হিসেবে মুক্তি পাচ্ছে।
ওয়েব ফিল্ম হিসেবে সার্টিফিকেশন সনদও পায় সাত ভাই চম্পা। তখন জানা যায়, ওয়েব সিনেমাটি দুটি পর্বে মুক্তি পাবে। প্রথম পর্বের নাম সাত ভাই চম্পা আদি পর্ব-১ ও সাত ভাই চম্পা আদি পর্ব ২। প্রথম পার্ট আইস্ক্রিনে মুক্তি পায়। পরে দ্বিতীয় পার্ট আর মুক্তি পায়নি। প্রথম পার্টসহ দ্বিতীয় পার্ট এবার একসঙ্গে সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে।
সিনেমাটির পরিচালক রিপন নাগ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ একটা সময় চলে গেছে। শুরুতে চেয়েছিলাম দর্শকদের সামনে বড় পর্দায় আসব। পরে সেটা হয়নি। এখন শেষ পর্যন্ত সিনেমা হয়েই দর্শকদের সামনে আসতে পারছি। যত দূর শুনেছি, শুধু মাল্টিপ্লেক্সেই এটি মুক্তি পাচ্ছে। সিনেমাটির দৈর্ঘ্য ৩ ঘণ্টা ২ মিনিটের মতো। আশা করছি দর্শকদের ভালো লাগবে।’
বালক আমির চাঁদকে গল্প শোনাতেন মা। সে গল্পে ছিল রাজপুত্র ও রাজকন্যার প্রণয়। বঙ্গের রাজপুত্র বিজয়বাহু ও রাজজামাতা তাতার খাঁর প্রচণ্ড যুদ্ধ করে হারানো রাজ্যজয়ের কাহিনিসহ সিনেমায় উঠে আসবে বিভিন্ন রূপকথা মেশানো কাহিনি। ৫২টি লোকেশনে প্রায় ২০০ শিল্পী এতে অভিনয় করেছেন।
সিনেমায় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মুনমুন আহমেদ, আহমেদ শরীফ, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত সিনহা, নওশাবা আহমেদ, শানারেই দেবী শানু, কেয়া পায়েল প্রমুখ। পরিচালনার পাশাপাশি যৌথভাবে চিত্রনাট্য করেছেন রিপন নাগ, নাজাকাত খান ও ইমতিয়াজ সজিব। প্রযোজনা করেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম।