
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)। চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের এই সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক রুহুল আমিন ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। বাচসাস সভাপতি কামরুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল মনে করেন, এ ধরনের হামলা ও অগ্নিসংযোগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তা বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।
বাচসাস সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এই হামলা ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘আমরা আশা করি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা সরকার অক্ষুণ্ন ও অটুট রাখতে সহায়তা করবে। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো গণমাধ্যম আক্রান্ত না হয়, আমরা সরকারের প্রতি সেই দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। একই সঙ্গে হামলার শিকার হয়েছে শীর্ষ ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারও। এদিন রাতে সন্ত্রাসীরা কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় কার্যালয় দুটি। হামলা শুরু হলে প্রথম আলোর সাংবাদিক ও কর্মীরা প্রাণ বাঁচাতে দ্রুত কার্যালয় ত্যাগ করেন। হামলার কারণে কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় গত শুক্রবারের প্রথম আলো প্রকাশিত হয়নি। প্রতিষ্ঠার ২৭ বছরে প্রথমবারের মতো সংবাদপত্রের ছুটি বাদে এক দিনের জন্য প্রথম আলোর প্রকাশনা বন্ধ থাকল। প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণের কার্যক্রম বন্ধ ছিল প্রায় ১৭ ঘণ্টা। ঢাকার বাইরে কুষ্টিয়া, খুলনা ও সিলেটে প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। চট্টগ্রাম, বগুড়া ও বরিশাল কার্যালয়েও হামলার চেষ্টা হয়েছে।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও নাগরিক সমাজের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বাচসাস মনে করে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় গণমাধ্যমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব।