
প্রবাসে দেশি সিনেমা দেখাটা একধরনের সামাজিক উৎসবের মতো। অস্ট্রেলিয়ায় সেই উৎসবেই মেতেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। উৎসবের আবহে সিডনির অবার্নের রিডিং সিনেমায় তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ দেখতে সপরিবার ভিড় করছেন প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষ।
রিডিং সিনেমায় ছবিটির প্রদর্শনী ছিল হাউসফুল। দর্শকের ভালোবাসা দেখে বাড়ানো হয়েছে আরও অনেক শো। অস্ট্রেলিয়ায় ছবিটি পরিবেশন করছে ‘পথ প্রোডাকশনস’। পরিবেশক শাওন অরিজিৎ খুশি, ‘সিডনি, মেলবোর্নের দর্শকদের সাড়া দেখে অভিভূত। এখন পার্থ, ক্যানবেরা, ব্রিসবেনে যাচ্ছে উৎসব। ১৫ জুলাই থেকে নিউজিল্যান্ডেও দেখানো হবে।’
ব্ল্যাকটাউন হাসপাতালের চিকিৎসক সোনিয়া ভট্টাচার্য বললেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, এত দিন পর একটা সিনেমা দেখে মনটা ভরে গেল। আমাদের মায়ের প্রজন্ম, আমাদের প্রজন্ম এবং আমার মেয়ের প্রজন্ম—সবাই একসঙ্গে বসে দেখলাম, একসঙ্গে হাসলাম, কাঁদলাম। চিকিৎসক জীবনের ব্যস্ততা, জীবনযাত্রার গতি—সবকিছুর বাইরে এসে যেন একটুখানি শ্বাস ফেলার মতো সুযোগ পেলাম।’
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্ট সৌমেন চক্রবর্তীর মতে, ‘“উৎসব” যেন আমাদের ফেলে আসা শৈশব, যৌবনের পারিবারিক রেশগুলোকে আবার নতুন করে মনে করিয়ে দেয়। সিনেমার চিত্রনাট্যে একদিকে জাহাঙ্গীরের (জাহিদ হাসান) মতো চরিত্র, অন্যদিকে চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, অপি করিম, আফসানা মিমি—প্রত্যেকেই যেন নিজের মতো করে গল্পকে টেনে নিয়ে গেছেন।’
প্রবীণ প্রবাসী নূরুন নাহার বলেন, ‘সিনেমার দ্বিতীয়াংশে চোখ মুছতে মুছতেই আবার হেসে ফেলেছি। হাসি আর কান্নার এত নিখুঁত মিশ্রণ—আমি বহুদিন দেখিনি।’
কেউ কেউ বলেছেন, ‘সিনেমাটা আমাদের ফেলে আসা বিটিভির সোনালি সময়ের নাটক বা সিনেমার ঘ্রাণ নিয়ে এসেছে।’ জাহিদ হাসান, চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, অপি করিম, আফসানা মিমিসহ একঝাঁক প্রিয় মুখের অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। সৌম্য জ্যোতি ও সাদিয়া আয়মানের অভিনয় দর্শক হৃদয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে—জানালেন কয়েকজন।
জানা গেছে, বাবা নাট্যকার বৃন্দাবন দাসকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ‘উৎসব’-এর বিশেষ প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন অভিনেতা সৌম্য জ্যোতি। তাঁর মা অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি ও ভাই দিব্য জ্যোতিও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। বলা যায়, পুরো পরিবারই অস্ট্রেলিয়ায় ‘উৎসব’-এ মিলিত হবেন।
সিনেমাটির গল্প লিখেছেন তানিম নূর, আয়মান আসিব স্বাধীন, সুস্ময় সরকার ও সামিউল ভূঁইয়া। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে ডোপ প্রোডাকশনস, সহপ্রযোজনায় চরকি।