আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় তাদের দশম প্রযোজনা ‘মুনীর চৌধুরী’
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় তাদের দশম প্রযোজনা ‘মুনীর চৌধুরী’

মুনীর চৌধুরীকে নিয়ে থিয়েটার অঙ্গনের নাটক

আধুনিক বাংলা নাটকের পথিকৃত, ভাষা আন্দোলনের প্রথম নাটকের রচয়িতা শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, নাট্যকার ও সাহিত্য সমালোচক। গতকাল ছিল মুনীর চৌধুরীর ৯৮তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে তাঁর জীবন, কর্ম ও দর্শন নিয়ে আলোচনা ও নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে নাট্য সংগঠন থিয়েটার অঙ্গন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় তাদের দশম প্রযোজনা ‘মুনীর চৌধুরী’। নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রবীর দত্ত। আজ ছিল নাটকটির ২৫তম মঞ্চায়ন।

থিয়েটার অঙ্গনের প্রচার সম্পাদক মঞ্জুর রনি জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টায় আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহুম্মদ নুরুল হুদা, নাট্যজন আতাউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন থিয়েটার অঙ্গনের সভাপতি মাহবুব আমিন। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর জীবন, কর্ম ও দর্শন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ। আলোচনার পর সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘মুনীর চৌধুরী’।  
নাটকটিতে মুনীর চৌধুরীর জীবনদর্শনের পটভূমি দৃশ্যকাব্যে রূপায়ণ করা হয়েছে।

এতে উঠে এসেছে মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটক রচনার ট্র্যাজেডি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে তিনি ঝুঁকে পড়েন নাটকের শিল্প–কৌশলের দিকে। ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’, ‘চিঠি’ প্রভৃতি নাটক বিশেষ সাফল্য লাভ করলেও জনমানুষের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ও প্রশংসা পেয়েছে ‘কবর’ নাটকটি।

‘মুনীর চৌধুরী’ নাটকের দৃশ্য

গভীর জীবনবোধের আলোকে সজ্জিত এ নাটক ছিল পূর্ব বাংলার প্রথম প্রতিবাদী নাটক। বাংলা শিল্প-সাহিত্যে তাঁর ব্যাপক অবদান রয়েছে। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন। ১৯৬৬ সালে রেডিও ও টেলিভিশনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান প্রচারে পাকিস্তান সরকারের নিষেধাজ্ঞা ছিল।

ওই সময় প্রতিবাদ করেন মুনীর চৌধুরী। এর দুই বছর পর পাকিস্তান সরকার বাংলা বর্ণমালাকে রোমান বর্ণমালা দিয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নিলে তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম একজন শিকার। ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন মুনীর চৌধুরী। তাঁর পৈতৃক নিবাস নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানাধীন গোপাইরবাগ গ্রামে।

নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রবীর দত্ত

এর আগে নাটকটির বাংলা একাডেমির বইমেলার মঞ্চে, বাংলাদেশ টেলিভিশনে, শিল্পকলা, মহিলা সমিতি ও উত্তরায় ২৪টি শো প্রদর্শিত হয়। আজকের প্রদর্শনী শেষে নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনাকারী আলী আহমেদ মুকুল, পোশাক পরিকল্পনাকারী আইরিন পারভীন লোপা, সংগীত পরিকল্পনাকারী শিশির রহমান, আলোক পরিকল্পনাকারী শামীমুর রহমানের হাতে নাটকের স্মারক পোস্টার তুলে দেওয়া হয়।