
প্রসূন রহমানের শেকড় সিনেমায় অভিনয় করেছেন আইশা খান। কানাডায় শুরু হওয়া ইফসা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে ছবিটি। এর বাইরে ম্যাজিক বাউলিয়ানা রিয়েলিটি শোর উপস্থাপনা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অভিনেত্রী। ছবিটিসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন নাজমুল হক।
অভিনন্দন। আপনার অভিনীত সিনেমা বাইরের একটা উৎসবে যাচ্ছে...
আইশা খান: শেকড় সিনেমার প্রিমিয়ার হবে কানাডার টরন্টোয় ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব সাউথ এশিয়া (ইফসা) চলচ্চিত্র উৎসবে। দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগেই বিদেশে প্রিমিয়ার। অনেক ভালো লাগা কাজ করছে। শুনেছি, এ উৎসবে দক্ষিণ এশিয়ার আরও বেশ কিছু ভালো চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। যেকোনো শিল্পীর জন্যই এটা সম্মানের। আমাদের চলচ্চিত্রটিতে অভিবাসন, ভিটেহারা, আত্মপরিচয়ের সংকট, অনুসন্ধানসহ জীবনের নানা গল্প এতে উঠে এসেছে।
ছবিটির সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?
আইশা খান: ছবিতে আমি ফাল্গুনী চরিত্রে অভিনয় করেছি। চরিত্রটির জন্য নির্মাতা প্রসূন রহমান লম্বা উচ্চতার একজন পারফরমার খুঁজছিলেন। আমার সহশিল্পী নাঈম (এফ এস নাঈম) ভাই আমাকে সাজেস্ট করেন। এরপর নির্মাতার সঙ্গে দেখা করে গল্প ও পরিকল্পনা শুনি। সবকিছু মিলিয়ে মনে হয়, গল্পটিতে আমার দেওয়ার মতো কিছু আছে। এরপর হ্যাঁ বলি।
যত দূর জানি, এফ এস নাঈমের সঙ্গে এটাই আপনার প্রথম কাজ।
আইশা খান: এটা আমাকেও অবাক করেছে। ভাইয়ার সঙ্গে এর আগে আমার কখনো কাজ হয়নি। তারপরও উনি আমাকে সাজেস্ট করেছেন। অভিনেতা হিসেবে তিনি যতটা ভালো, মানুষ হিসেবে এর চেয়েও বেশি ভালো তিনি। শুটিংয়ে আমাদের অনেক আড্ডা হয়েছে। অনেক বিষয় নিয়ে আড্ডায় মেতেছি আমরা। নির্মাতা প্রসূন রহমান ভাইও অনেক মজার মানুষ। সব মিলিয়ে শুটিংয়ের সময়টা আমাদের সবারই ভালো কেটেছে।
উপস্থাপনায়ও ব্যস্ত আপনি। কতটা উপভোগ করছেন?
আইশা খান: ম্যাজিক বাউলিয়ানার এবার পঞ্চম আসর চলছে। এর আগে তৃতীয় ও চতুর্থ আসরে অডিশন রাউন্ডে কাজ করলেও এবার পুরো আয়োজনেই উপস্থাপনা করছি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া হচ্ছে। সামনে নির্বাচিতদের নিয়ে স্টুডিও রাউন্ড শুরু হবে। আমি তো গানের মানুষ নই, কিন্তু এখানে এসে গান নিয়ে আমার জানার ভান্ডার বড় হচ্ছে। গানের মানুষদের সঙ্গে মিশছি। বিশেষ করে বলব কামরুজ্জামান রাব্বি ভাইয়ের কথা, তৃতীয় আসরে আমার সহ–উপস্থাপক ছিলেন, এবার অডিশন রাউন্ডের বিচারক আর মূল পর্বে গ্রুমারের দায়িত্বে আছেন তিনি। তাঁর গাওয়া অনেক গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শুটিংয়ে আসা-যাওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে কথা হয়। কোথাও আমার কনফিউশন থাকলে রাব্বি ভাইয়ের পাশাপাশি আমার প্রোগ্রাম প্রডিউসার আর কপিরাইটার টিমের থেকেও সহযোগিতা পাচ্ছি। আমাদের বিচারক প্যানেলও বেশ অভিজ্ঞ, তাঁদের ক্যারিয়ারের নানা জানা-অজানা ঘটনা, গল্পও জানতে পারছি। নাটক–সিনেমার মতো সারা দিন তো কাজ থাকে না, শুটিং শেষে একটা অবসর সময়ও পাই।
অবসর সময়টা কীভাবে কাটে?
আইশা খান: অবসরে আমি বই পড়ি। কয়েক দিন আগে কাছের একজন মানুষ আমাকে একটা নির্বাচিত জাপানি অনুবাদ সংকলন দিয়েছেন, এটা পড়ছি। আর আগের মতো তেমন সিনেমা ইদানীং দেখা হচ্ছে না, তবে বেশ কিছু পুরোনো ছবি আবারও দেখে মুগ্ধ হচ্ছি। এ মুহূর্তে ঋতুপর্ণ ঘোষের কিছু সিনেমা দেখা হয়েছে; এর মধ্যে রেইনকোট, চোখের বালি আমার ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ। দেশ ও বিদেশের ওটিটির কিছু কাজ দেখেছি। আরও কিছু তালিকা করা আছে, একটু সময় পেলেই দেখে নেব।
উপস্থাপনার ব্যস্ততার কারণেই নাটকে কম দেখা যাচ্ছে?
আইশা খান: এটা একটা কারণ। তবে প্রধান কারণ গল্পের অভাব। ভালো গল্প পাচ্ছি না। একই ধাঁচের গল্পে কাজ করতে ভালো লাগে না। ওটিটির ক্ষেত্রেও তা হচ্ছে, প্রথম দিকে আমার বেশ কিছু কাজ এলেও এরপর আর কেন জানি মনের মতো কোনো গল্প পাইনি। সব মিলিয়ে এ কারণেই দর্শকেরা হয়তো আমার উপস্থিতি কম পাচ্ছেন। তবে আমি সব সময় ভালো গল্প ও চরিত্রের অপেক্ষায় ছিলাম, আছি।