
২০১৮ সালে যখন লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার হন, মিম মানতাসা তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থী। পড়াশোনার কারণে কাজ কম করতেন। এখন নিয়মিত কাজ করছেন। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর নতুন নাটক ‘নাইস টু মিট ইউ’। নাটকটিসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো
‘নাইস টু মিট ইউ’ বেছে নেওয়ার কারণ কী?
মিম মানতাসা : গল্পের ক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত দর্শন হচ্ছে, যে কাজটা করব, সেটার প্রতি পরিচালক থেকে শুরু করে সবার উদ্দেশ্য সৎ থাকতে হবে। পরিষ্কার ধারণা থাকবে, কী দেখাতে চান। আমার এমন অভিজ্ঞতাও হয়েছে, শুধু নাটক বানাতে হবে, তাই কাজটা করেছে। ওই ধরনের প্রোডাকশনে আমি খুব নিবেদিত হয়ে কাজ করেও যে অনেক ভালো কিছু করতে পারব, তা না। কিন্তু এই কাজের যখন কথা হচ্ছিল, পরিচালক গল্পটা শোনাচ্ছিলেন, ভাবনাচিন্তা পছন্দ হয়। মনে হয়েছে, তিনি কাজটা ঠিকঠাক করতে চান। আমার মনে হয়, যে টিম চায় একটা ভালো প্রোডাকশন বানাবে, সেই টিমের সঙ্গে কাজ করাও আনন্দের। তখন মনে হয়, এই কাজটা করা উচিত—এই কাজটা তেমনই একটা ব্যাপার ছিল।
নাটকে আপনার সহশিল্পী মুশফিক আর ফারহান। এটি আপনাদের প্রথম কাজ
মিম মানতাসা : বেশির ভাগ শিল্পীর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা প্রায় একই রকম। আমাদের আসলে সবারই চেষ্টা থাকে, কাজটা ঠিকঠাক শেষ করা। এ কাজের ক্ষেত্রে পরিচালক, সহশিল্পী থেকে শুরু করে পুরো ইউনিট আমার কাছে নতুন। এরপরও সবাই ভীষণ বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম দিনের শুটিং করেছি সেন্ট মার্টিনে। এমন সুন্দর পরিবেশে কাজ করাটা ভালো হয়। আগে আমি শুটিংয়ের সময় সেটে খুব একটা কথা বলতাম না, চুপচাপ থাকতাম। শুধু ক্যামেরার সামনে গেলে সহশিল্পীর সঙ্গে কথা হতো। এখন তো আগেই কথা বলি, মহড়া করি। কীভাবে দৃশ্যকে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য করা যায়, সে চেষ্টা করি। ভাবতে থাকি, এভাবে সংলাপ দিলে ভালো হবে। ওভাবে বললে, ভালো হবে। আমার মনে হয়, কাজটা অনেক মজার হয়, যখন সহশিল্পী সাপোর্টিভ হয়। এবারের কাজের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে।
তুলনামূলকভাবে কম কাজ করার কারণ কি নিজস্ব সিদ্ধান্ত, নাকি পরিস্থিতি?
মিম মানতাসা : আমার শুরুর সময় দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। পড়াশোনার একটা চাপ ছিল। পরিবারের প্রাধান্য ছিল, পড়াশোনা শেষ করতে হবে। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার হওয়ার পর এত বেশি কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলাম এবং ইনভলবও হয়ে যাচ্ছিলাম, তখন সবাই বলছিল, এভাবে কাজ করতে গেলে পড়াশোনা আর হবে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার চাপ সাধারণত বেশি। পরীক্ষা, ক্লাস—সব ঠিকমতো করতে হতো। চাইলেও তখন আমি বেশি কাজ করতে পারিনি। এদিক থেকে পরিস্থিতির শিকার। এটা আমার সচেতন সিদ্ধান্তও ছিল। এ নিয়ে আমার কোনো অনুশোচনা নেই। আমার মনে হয়, এখন আমি পুরোপুরি প্রস্তুত। কাজটা আগের চেয়ে ভালো করতে পারব। ওই মুহূর্তে বিরতি নিয়েছি, হয়তো আমার ভালোর জন্য। এখন আমি অনেক ম্যাচিউরড হয়েছি। আমার অনার্স–মাস্টার্স শেষ হয়েছে। এখন কাজে অনেক বেশি ফোকাস করছি। প্রস্তুতিও নিচ্ছি।
কী প্রস্তুতি?কাছাকাছি সময় এমন কী দেখেছেন, যা আপনাকে মুগ্ধ করেছে?
আমি তো অনেক কিছু দেখি, তবে এর মধ্যে আমার ভালো লাগার মতো ছিল নেটফ্লিক্সের ‘হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিচুড’। কাজটা আমার কাছে বেশ চিন্তাশীল কাজ মনে হয়েছে, ভালো লেগেছে। পরিচালক যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, সেটাও ভালো লেগেছে। এর বাইরে দেশে মুক্তি পাওয়া ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ দেখেছি। দুটি কাজ আমার ভালো লেগেছে।
মিম মানতাসা : যা কাজ পাব, তাই করব—এমনটা চাই না। অনেক বেশি কাজ আমার জন্য যাতে বাজে অভিজ্ঞতা না হয়। আমি এখন প্রচুর ফিল্ম ও সিরিজ দেখি। ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ও ভিন্ন সংস্কৃতির ছবি, সিরিজ দেখছি। তাদের ছবি সিরিজ উপস্থাপনের ধরন দেখে বোঝার চেষ্টা করি—এসব আমার কাছে পরিষ্কারও। কারণ, আমি চারুকলা বিভাগের। এদিক থেকে আমার মধ্যে আর্টিস্টিক ব্যাপারটা আছে। আমার কাছে লক্ষ্যটা পরিষ্কার। আগেকার নায়িকারা কীভাবে কাজ করেছিলেন, আমাদের পাশের দেশের নায়িকারা কীভাবে সংলাপ বলতেন, কতটা বাস্তবসম্মতভাবে চরিত্র ফুটিয়ে তুলতেন—এসব দেখি। এখন যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদেরও দেখি। সবার কাছ থেকে কিছু না কিছু শিখি। এটা নিজের উন্নতিতে ভূমিকা রাখে।
কাছাকাছি সময় এমন কী দেখেছেন, যা আপনাকে মুগ্ধ করেছে?
মিম মানতাসা : আমি তো অনেক কিছু দেখি, তবে এর মধ্যে আমার ভালো লাগার মতো ছিল নেটফ্লিক্সের ‘হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিচুড’। কাজটা আমার কাছে বেশ চিন্তাশীল কাজ মনে হয়েছে, ভালো লেগেছে। পরিচালক যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, সেটাও ভালো লেগেছে। এর বাইরে দেশে মুক্তি পাওয়া ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ দেখেছি। দুটি কাজ আমার ভালো লেগেছে।
ভবিষ্যতে যদি সুযোগ পান, কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হবেন?
মিম মানতাসা : আমার কাছে মনে হয়, সব ধরনের চরিত্রে কাজ করা উচিত। এখন আমার যে সময়, তাতে ভিন্ন ভিন্ন সব অভিজ্ঞতা নেওয়া দরকার। মাঝেমধ্যে মনে হয়, কখনো যদি অ্যাকশন চরিত্রে অভিনয় করতে পারি, তাহলে ভালো হবে। দেশের বাইরে অনেক হিরোইনকে প্রায়ই দেখি, হিরোর পাশাপাশি ফাইট করছেন, দেখতে এত ভালো লাগে। ওই ব্যাপারটা আমাকে মুগ্ধ করে। সুযোগ পেলে এমনটা করতে চাই।
অভিনয় করছেন, এটা আপনার কাছে কী?
মিম মানতাসা : অভিনয়টা নিজের জন্য করি। মনে হয়, কিছু চরিত্র তৈরি করতে পারছি, এটার মধ্যে একটা আনন্দ পাই। এখনো কিন্তু অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিইনি, শখ ও ভালোবাসার জায়গা।