অড্রে হেপবার্ন। উইকিমিডিয়া কমন্স
অড্রে হেপবার্ন। উইকিমিডিয়া কমন্স

জন্মদিনে জেনে নিন অড্রে হেপবার্ন সম্পর্কে জানা–অজানা ১০ তথ্য

অড্রে হেপবার্নকে নিয়ে জানার কী আর শেষ আছে। এই যেমন কিছুদিন আগেই জানা গেল, গুপ্তচরও ছিলেন এই ব্রিটিশ অভিনেত্রী! আজ ৪ মে অড্রের জন্মদিন। এ উপলক্ষে আইএমডিবি অবলম্বনে জেনে নেওয়া যাক অভিনেত্রী সম্পর্কে ১০ তথ্য।

১৯২৯ সালে ৪ মে জন্মগ্রহণের পর মা-বাবা তাঁর নাম রেখেছিলেন অড্রে ক্যাথলিন রুস্টন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ছদ্মনাম নেন—এডা ভন হেমেস্ট্রা। একটি ইংরেজি নাম সে সময় ছিল বিপজ্জনক। পরে যখন অড্রে ছবির দুনিয়ায় আসেন, পরিচিতি পান অড্রে হেপবার্ন নামে। আইএমডিবি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গুপ্তচর হিসেবেও কাজ করেছেন অড্রে। নাৎসি দখলদারির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ডাচ প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ব্যালে মঞ্চস্থ করতেন এই অভিনেত্রী। তখন তিনি কেবল কিশোরী। আইএমডিবি
অস্কারের জন্য পাঁচবার মনোনীত হয়েছিলেন অড্রে হেপবার্ন। ‘রোমান হলিডে’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার জিতেছিলেন ১৯৫৩ সালে। আইএমডিবি
অড্রে হেপবার্ন সারা দুনিয়ার কাছে ‘রাজকুমারী’ বনে গেছেন ‘রোমান হলিডে’ দিয়ে। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে তিনি রাজকুমারীর চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন কিনা। সেই যে রোমের রাস্তায় রাজকুমারী আর মার্কিন সাংবাদিকের স্কুটিতে চড়ে ঘুরে বেড়ানো, সেই ছবি সিনেমাপ্রেমীদের মনে স্থায়ীভাবে গেঁথে গেছে। আইএমডিবি
যে ‘রোমান হলিডে’ দিয়ে এত পরিচিতি, আদতে সেই সিনেমায় তাঁর অভিনয়ের কথাই ছিল না। প্রযোজকের প্রথম পছন্দ ছিলেন সেই সময়ের আরেক দাপুটে অভিনেত্রী এলিজাবেথ টেলর। কিন্তু স্ক্রিন টেস্টে অড্রে এমনই মুগ্ধতা ছড়ান, তা উপেক্ষার সাধ্য প্রযোজকের ছিল না। পরে এ প্রসঙ্গে সিনেমাটির প্রযোজক ও পরিচালক উইলিয়াম ওয়াইলার বলেন, ‘আমি প্রতিভাধর এমন একজনের খোঁজে ছিলাম, যাঁর মধ্যে সারল্য আর আকর্ষণের ক্ষমতা আছে, তাঁর মধ্যে সবই ছিল। তাঁকে দেখার পর বলে উঠি, এই তো সেই মেয়ে, যাঁকে খুঁজছি।’ আইএমডিবি
‘ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফ্যানিস’ নিয়ে আলাদাভাবে বলা দরকার। ‘রোমান হলিডে’ তারকা বানালেও এ সিনেমাই অড্রেকে আইকনে পরিণত করে। যদিও এই সিনেমায় অভিনয় করে মনোনয়ন পেলেও অস্কার পাননি, তবু তাঁর অভিনীত চরিত্রটির প্রভাব বিস্তার করেছে যুগের পর যুগ। সিনেমাটিতে তাঁর বিশেষ ধরনের চুল বাঁধার ধরন আর হাতে সিগারেট হোল্ডার হয়ে উঠেছিল গত শতাব্দীতে হলিউডের অন্যতম আইকনিক ছবি। সিনেমাটিতে অড্রের পরা সেই কালো পোশাক এতই জনপ্রিয়তা পায় যে ২০০৫ সালে সেটা নিলামে বিক্রি হয় প্রায় সাড়ে ৯ লাখ ডলারে! আইএমডিবি
দেড় দশক ধরে পর্দায় টানা সাফল্যের পর ১৯৬৭ সালে কাজ কমিয়ে দেন অড্রে হেপবার্ন। যেটাকে বলা যায় আধা অবসর। মূলত পরিবারকে সময় দিতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আইএমডিবি
১৯৫৯ সালে ‘দ্য আনফরগিভেন’ সিনেমায় শুটিংয়ের সময় ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন। তিনি তখন ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। এই আঘাতে তাঁর গর্ভপাত হয়। মনে করা হয়, এ জন্যই তিনি কাজ কমিয়ে দেওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বড় পর্দায় প্রধান চরিত্রে করা তাঁর শেষ সিনেমা ‘দে অল লাফড’ মুক্তি পায় ১৯৮১ সালে। আইএমডিবি
অভিনয় ছেড়ে অড্রে মন দেন জনকল্যাণমূলক কাজে। ১৯৮৯ সালে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত নিযুক্ত হন অড্রে হেপবার্ন। ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবেই ১৯৮৯ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকায় এসেছিলেন এই অভিনেত্রী। এক সপ্তাহ থেকে ফিরে যান ২৪ অক্টোবর। এর মধ্যে তিনি ঘুরে দেখেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের বিভিন্ন দাতব্য কর্মকাণ্ড
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। ১৯৯৩ সালের ২০ জানুয়ারি ৬৩ বছর বয়সে সুইজারল্যান্ডে নিজ বাড়িতে ঘুমের মধ্যে মারা যান অড্রে। শেষকৃত্যে আরও অনেকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘রোমান হলিডে’তে তাঁর জুটি গ্রেগরি পেক। প্রিয় ‘রাজকুমারী’র প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেদিন গ্রেগরি আবৃত্তি করেছিলেন অড্রের প্রিয় রবীন্দ্রনাথের কবিতা, ‘আনএন্ডিং লাভ’। উইকিমিডিয়া কমন্স