৪ অভিনেতার রহস্যময় মৃত্যুর পেছনের কারণ কী

এই অভিনয়শিল্পীরা কেউ শুটিং নিয়ে প্রস্তুতির মধ্যে ছিলেন। কেউ ছিলেন শুটিং সেটে। কেউ শুটিং থেকে ফিরেছিলেন। তাঁরাই একসময় রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। কারও স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও কারও কারও মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। কীভাবে মারা গিয়েছিলেন এসব তারকারা?    

ব্যান্ডন লি
ছবি: আইএমডিবি

মর্মান্তিক এক ঘটনা ঘটেছিল মার্শাল আর্টের কিংবদন্তি ব্রুস লির ছেলের সঙ্গে। ১৯৯৩ সালে ‘দ্য ক্রো’ সিনেমার শুটিং সেটে মাত্র ২৮ বছর বয়সে মারা যান ব্যান্ডন লি। একটি অ্যাপার্টমেন্টে চলছিল শুটিং। অভিনয় করার সময় দুর্ভাগ্যক্রমে আসল বুলেটের একটি গুলি এসে লাগে এই অভিনেতার পেটে। বন্দুক খালি থাকার কথা থাকলেও সেখানে ছিল গুলি। কেন গুলি ছিল, এই ঘটনার রহস্য আর বের হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন এই অভিনেতা মারা যান। সিনেমার শুটিং প্রায় শেষের দিকে ছিল। পরবর্তী সময়ে ডাবল বলি তৈরি করে সিনেমাটির শুটিং শেষ হয়।

অলিভার রিড

তখন ‘গ্লাডিয়েটর’ সিনেমার শুটিং চলছিল। সেই শুটিং শেষ করে একটি বারে সময় কাটাচ্ছিলেন অভিনেতা অলিভার রিড। পরবর্তী দিনের শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুতির কথা থাকলেও তিনি আর কখনোই ফেরেননি। সেই সময় বারের ফ্লোর ধসে তিনি আহত হন। পরে হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। ৬১ বছর বয়সে তিনি মারা যান। বেশির ভাগ সিনেমার শুটিং শেষ হওয়ার পরে তিনি মারা যান। যে কারণে পরে তাঁর মুখ কৃত্রিমভাবে তৈরি করে শুটিং করা হয়। এতে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের বাড়তি খরচ পড়ে ৩ মিলিয়ন ডলার। সেই সিনেমা ১৮৭ মিলিয়ন ডলার আয় করে। রিডের ক্যারিয়ারের এটা ছিল অন্যতম সেরা সিনেমা। সিনেমাটি পরে অস্কার জেতে।

রিভার ফনিক্স

তরুণ অভিনেতা রিভার ফনিক্স মাত্র ২৩ বছর বয়সে মারা যান। তখন তাঁর ‘ডার্ক ব্লাড’ সিনেমার শুটিং চলছিল। শুটিং শেষে এই অভিনেতা সেই সময়ে হ্যালোইনে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। নাইট ক্লাবে খুব উত্তেজনার মধ্যে ছিলেন। সেখানে দর্শক তাঁকে ঘিরে ধরেন। একই সঙ্গে তাঁর খিঁচুনি শুরু হয়। তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্তে জানা যায়, কোকেইন, মারিজুয়ানাসহ একাধিক নেশার দ্রব্যাদি খাওয়ার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে ফনিক্সের চরিত্রে ক্রিশ্চিয়ান স্লাটারকে নেওয়া হয়। তিনি ফনিক্সের সম্মানে সিনেমা থেকে কোনো অর্থ নেননি, দান করে দেন সব অর্থ।

মেরিলিন মনরো

মেরিলিন মনরো ১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট লস অ্যাঞ্জেলেসে মারা যান। কারণ হিসেবে জানা যায়, অতিরিক্ত মাত্রায় ঘুমের ওষুধ নেওয়ার কারণে তিনি মারা যান। তবে আত্মহত্যার কথাও শোনা যায়। কারণ হিসেবে গণমাধ্যমে আসে, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘটনা। এমনকি সেই রাতে একটি ফোনকলের রহস্য সামনে এসেছিল। এ ছাড়া তিনি বিয়ে, সংসার, প্রেম, মা হওয়া নিয়ে হতাশায় ছিলেন। জন এফ কেনেডির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল শোনা যায়। হতাশা থেকেই মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর।

এই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে ‘সামথিংস গট টু গিভ’ সিনেমার শুটিং ইউনিট বিপদে পড়ে। সেই সিনেমা আর পরে মুক্তি পায়নি। সেই সিনেমার কিছু দৃশ্যে ২০০১ সালে ‘মেরিলিন: দ্য ফাইনাল ডেজ’ নামে তথ্যচিত্রের ব্যবহার হয়। এটাও ছিল রহস্যময় মৃত্যুর একটি।