দুই নারীকে যৌন ব্যবসায়ে প্রলুব্ধ করার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত প্রভাবশালী র্যাপার ও সংগীত উদ্যোক্তা শন ‘ডিডি’ কম্বসকে ৫০ মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনি ইতিমধ্যে এক বছর জেলে কাটিয়েছেন, ফলে আরও তিন বছর তাঁকে দণ্ড ভোগ করতে হবে। গতকাল নিউইয়র্কের একটি আদালত এই রায় ঘোষণার পর কম্বসের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
বিচারকের পর্যবেক্ষণ
রায় ঘোষণার সময় বিচারক অরুণ সুব্রামানিয়ান বলেন, কম্বসের সংগীতজীবনের অবদান প্রশংসনীয় হলেও, আদালত তাঁর সহিংস আচরণ উপেক্ষা করতে পারেন না। বিচারক উল্লেখ করেন, আদালতে উপস্থাপিত ভিডিওতে দেখা যায়, ২০১৬ সালে তিনি তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যাসান্দ্রা ‘ক্যাসি’ ভেনচুরাকে নির্মমভাবে মারধর করেন।
বিচারক বলেন, ‘আপনি যে অপরাধ করেছেন তা দুই নারীর জীবনকে চিরদিনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আপনার অপরাধ কখনো মুছে যাবে না, তবে আপনি চাইলে এই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারেন।’
কম্বসের বক্তব্য
রায় ঘোষণার আগে কাঁদতে দেখা যায় র্যাপারকে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আমার কাজ জঘন্য ও লজ্জাজনক। আমি নেশায় ডুবে গিয়েছিলাম, সাহায্য প্রয়োজন ছিল, কিন্তু নিইনি। আমার মা আমাকে ভালোভাবে মানুষ করেছেন—আমি জানতাম, আমি ভুল করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অহংকারে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, নিজের আত্মসম্মান হারিয়েছি। আমি এখন নিজেকে ঘৃণা করি।’ এ সময় সন্তানদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমাদের আরও ভালো একজন বাবার প্রয়োজন ছিল।’
বিচারকের রায়
শেষ পর্যন্ত আদালত তাঁকে ৫০ মাসের জেল, ৫ লাখ ডলারের জরিমানা ও ৫ বছরের পর্যবেক্ষণকালীন মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। বিচারক ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সাহসী। সহিংসতা গোপনে থাকা উচিত নয়।’
আইনজীবীদের যুক্তি
কম্বসের পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, তিনি মাদকাসক্তি ও মানসিক ট্রমায় ভুগছিলেন। জেলে থাকা অবস্থায় তিনি অন্য কয়েদিদের ব্যবসা শেখানোর ক্লাস নিয়েছেন, যা তাঁর পরিবর্তনের প্রমাণ। অন্যদিকে, কৌঁসুলিরা বলছেন, কম্বস এখনো নিজের অপরাধ পুরোপুরি স্বীকার করেননি।
পটভূমি
২০২৪ সালে শন কম্বস যৌন নির্যাতন, মানব পাচার ও সহিংসতার একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন। তবে বড় অভিযোগগুলো থেকে তিনি খালাস পেলেও, নারীদের যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে প্ররোচিত করার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।
ভুক্তভোগীর প্রতিক্রিয়া
ক্যাসি ভেনচুরা আদালতে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আজকের রায় আমার জীবনের ক্ষত মুছে দিতে পারবে না, তবে আংশিকভাবে ন্যায়বিচার পেয়েছি।’
তথ্যসূত্র: ভ্যারাইটি