তাঁর জন্ম নাটোরের সিংড়ায়। তবে বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়। লালনের গান গাইতেন ফরিদা পারভীন, তাই অনেকে মনে করেন তিনি বোধ হয় কুষ্টিয়ারই মেয়ে। আদতে বাবার চাকরিসূত্রে কুষ্টিয়ায় ছিলেন গতকাল রাতে প্রয়াত এই সংগীতশিল্পী। কুষ্টিয়ার আগে আরও ছোটবেলায় ছিলেন মাগুরায়। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরের সঞ্চালনায় দেশ টিভির ‘বেলা অবেলা সারাবেলা’ অনুষ্ঠানে শৈশব নিয়ে আরও অনেক কথাই বলেছিলেন ফরিদা পারভীন।
সেই সাক্ষাৎকারে ফরিদা পারভীন জানিয়েছিলেন, পাঁচ কি ছয় বছর বয়সে তাঁর গান শেখার শুরু। তখন থাকতেন মাগুরায়। প্রথম ওস্তাদ ছিলেন কমল চক্রবর্তী। মা বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় গান গাইতেন। সেই সুরের অনুরণন সারা জীবনই তাঁর মধ্যে ছিল। ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘আমার একটু একটু মনে আছে, মা–ও অনেকবার গল্প করেছেন। মা তখন বান্ধবীদের নিয়ে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমা দেখতে যেতেন। আমাকে দুধ খাওয়ার সময় গাইতেন; সেই সুরের অনুরণন এখনো আমার মধ্যে রয়ে গেছে।’
একই অনুষ্ঠানে প্রথম হারমোনিয়াম পাওয়ার গল্পও করেন ফরিদা পারভীন। তিনি বলেন, ‘আমার তখন হারমোনিয়াম ছিল না। বাবাকে বলেছিলাম, আমাকে হারমনিয়াম বানিয়ে না দিলে খাব না, পড়ব না, কিচ্ছু করব না। বাবা হারমোনিয়াম বানিয়ে দিলেন।’
তাঁকে ‘কুষ্টিয়ার মেয়ে’ বলা প্রসঙ্গে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘কুষ্টিয়ায় এখনো থাকি। কিন্তু আমার জন্ম নাটোরের সিংড়ায়। বাবা চিকিৎসক ছিলেন, বদলির চাকরি; বিভিন্ন জায়গা যেতে হয়েছে। বাবা কুষ্টিয়ায় অবসর নিয়েছেন, পরে ওখানেই স্থায়ী হই। ছোটবেলা থেকে ওখানেই থাকি বলে অনেকে আমাকে কুষ্টিয়ার মেয়ে মনে করেন।’
বাবার চাকরিসূত্রে নানা জায়গায় থেকেছেন, এর মধ্যে কোন ঘটনাটি সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে—এমন প্রশ্নের উত্তরে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘মেহেরপুরে স্কুলে যখন পড়ি, গানের জন্যই শিক্ষকেরা আমাকে বেশি ভালোবাসতেন। তখন যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। তখন প্যান্ট-শার্ট পরে, মাথায় হ্যাট পরে সাহেব সেজেছিলাম। সেবার আমি ফার্স্ট হয়েছিলাম।’