জুবিন গার্গ। এক্স থেকে
জুবিন গার্গ। এক্স থেকে

জুবিনের শেষ সিনেমা মুক্তি পেল, কাঁদছেন ভক্তরা

গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হয়েছে আসামের সংগীতশিল্পী, সুরকার ও অভিনেতা জুবিন গার্গ। সিঙ্গাপুরে মাত্র ৫২ বছর বয়সে প্রয়াত হন ভারতের এই প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী। সংগীত, সিনেমা, ভাষা—সব সীমানা পেরিয়ে তিনি ছিলেন এক সত্যিকারের সাংস্কৃতিক প্রতীক।
জুবিনের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ তাঁর অনুরাগীরা যখন পুরোনো গানগুলোয় ফিরে যাচ্ছেন, তখনই নতুন খবর—তাঁর স্বপ্নের অসমিয়া চলচ্চিত্র ‘রই রই বিনালে’ মুক্তি পেল আজ। ঠিক সেই দিনই, যেদিন তিনি মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর সিনেমা মুক্তির দিনে আবেগাপ্লুত ভক্তরা। অনেকেই সিনেমাটি দেখতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছেন। জুবিনের সিনেমা মুক্তিকে ঘিরে আসামে ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায়। সিনেমাটির টিকিকের দাম বেড়ে যায়। তবে সব উপেক্ষা করে ভক্তরা ছোটেন হলে প্রিয় শিল্পীকে আরও একবার পর্দায় দেখতে।

জুবিনের অসম্পূর্ণ স্বপ্নের চলচ্চিত্র
জনপ্রিয় অসমিয়া পরিচালক রাজেশ ভূঞা জানিয়েছেন, ‘এই ছবি জুবিনদার ব্যক্তিগতভাবে খুব প্রিয় ছিল। গল্প, সুর, গানের কথা—সব কিছুতেই ছিল তাঁর হাতের ছোঁয়া।’ ভূঞা আরও বলেন, ‘আমরা তিন বছর ধরে ছবিটি তৈরি করেছি। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ছাড়া সব কাজই শেষ ছিল। তাই তাঁর মৃত্যুর পরও আমরা তাঁর কণ্ঠের আসল রেকর্ডিং রেখেই ছবিটি মুক্তি দিয়েছি।’

‘রই রই বিনালে’ সিনেমার পোস্টার। ইনস্টাগ্রাম থেকে

ছবিতে ব্যবহৃত ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সংলাপ ও গানই জুবিনের নিজের গলার, যা ল্যাপেল মাইকে রেকর্ড করা হয়েছিল। ফলে দর্শকেরা আবারও প্রেক্ষাগৃহে শুনতে পাবেন তাঁর সেই অনন্য কণ্ঠ—এ যেন জীবনের পর্দা থেকে মৃত্যুর পর্দায় এক আবেগঘন প্রত্যাবর্তন।

টিকিটের দাম নিয়ে ক্ষোভ
মুক্তির দিন ঘনিয়ে আসতেই আসামসহ দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে টিকিটের দাম হঠাৎ বেড়ে যায়। স্থানীয় দর্শকেরা অভিযোগ করেছেন, প্রযোজক ও হল কর্তৃপক্ষ জুবিনের মৃত্যুকে ঘিরে আবেগের সুযোগ নিচ্ছেন। ‘জুবিনদা জীবিত থাকলে এটি সহ্য করতেন না,’ লিখেছেন এক ভক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

তবে আয়োজকেরা জানিয়েছেন, দর্শকের বিপুল আগ্রহ সামলাতে প্রযুক্তিগত ও সিকিউরিটি খরচ বেড়েছে। কিন্তু সাধারণ দর্শকের কাছে এ ব্যাখ্যা সান্ত্বনার চেয়ে ক্ষোভই বাড়িয়েছে।

জুবিন গার্গ

সংগীতের সীমা ছাড়িয়ে এক সংস্কৃতির প্রতীক
জুবিন গার্গ কেবল অসমিয়ার সংগীতজগতে নন, সমগ্র ভারতের এক পরিচিত নাম। তাঁর গাওয়া বলিউড গান ‘ইয়া আলী’ (‘গ্যাংস্টার’, ২০০৬) ভারতজুড়ে তাঁকে নতুন পরিচিতি দেয়।
চল্লিশের বেশি ভাষায় গান গাওয়া এই শিল্পী ছিলেন এক বিরল প্রতিভা। তিনি হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলেগু, মারাঠি, নেপালি ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় গান গেয়েছেন। ‘ইকোজ অব সাইলেন্স’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার, সেরা সংগীত পরিচালনার জন্য।
হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে