
সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গত বৃহস্পতিবার রাতের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ভস্মীভূত প্রথম আলো কার্যালয় দেখতে এসেছিলেন ‘মনপুরা’ নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম। তিনি প্রথম আলোর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পুড়ে যাওয়া ভবন সরেজমিন দেখার পর বলেন, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, সভ্যতা-ভব্যতাপরিপন্থী।
কথা হয় গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে। পুড়ে যাওয়া ভবনটি দেখার পর তাঁর কী প্রতিক্রিয়া, জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার কাছে সব সময় মনে হয়, প্রথম আলো সুশাসন ও গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে। প্রথম আলোর সাংবাদিকতা ও সংবাদ পরিবেশনের ধরনের কারণে আমি তার কাছে যাই। এদিক-ওদিক ঘুরে সত্যতা নিশ্চিতে বারবার যাই। এটা আমার একটা আবেগের জায়গা। সেই প্রতিষ্ঠানকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী এভাবে পুড়িয়ে ফেলল! পুরো অবস্থা দেখতে, সহমর্মিতা জানাতে এবং প্রতিবাদ জানাতে যাওয়া।’
‘মনপুরা’ নির্মাতা তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমি প্রথম আলোকে যদি একটা মানুষ হিসেবে দেখি, তাহলে সেই মানুষটার ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, সভ্যতা ও ভব্যতাপরিপন্থী। কোনো সভ্য দেশের একজন মানুষ আরেকজন মানুষের ওপর, প্রতিষ্ঠানের ওপর, সম্পদের ওপর কোনোভাবেই এ রকম আক্রমণ করতে পারে না, হামলা চালাতে পারে না। এ ধরনের অপরাধ ও অন্যায়কে রাষ্ট্রেরও কোনোভাবেই প্রশয় দেওয়া উচিত নয়। হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করা উচিত।’
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি গিয়াস উদ্দিন সেলিমের আহ্বান, ‘খুব দ্রুত আইনবহির্ভূত কমকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে তাদের ওপর আইনের সঠিক প্রয়োগ যেন করা হয়, এটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। শক্ত পদক্ষেপ যেন নেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ দেশের মধ্যে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটানোর চিন্তাও মনে আনতে না পারে।’ সবশেষে যাওয়ার সময় সেলিম বলেন, ‘এই ধ্বংসযজ্ঞ কেবল সংবাদকর্মী বা ভবনের ক্ষতি নয়; এটি দেশের গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি আক্রমণ।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রথম আলোর কার্যালয় ভস্মীভূত হয়ে যায়। একই রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়েও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করা হয়।