মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন অভিনেতা ম ম মোর্শেদ

অভিনেতা ম ম মোর্শেদ
ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ দিন ধরে মানসিকভাবে কঠিন সময় পার করছেন অভিনেতা ম ম মোর্শেদ। অভিনেতার অভিযোগ, গত ৩১ জানুয়ারি তাঁর দুই ছেলে ও ছেলের বন্ধু স্কুল থেকে ফেরার পথে উত্তরার দিয়াবাড়ি গোলচত্বরে হামলার শিকার হয়; দুই ছেলেরই মাথা ফেটে যায়, নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। ১১টি সেলাই করতে হয়। তারা এখনো ট্রমার মধ্যে রয়েছে। ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় মামলাও করেছেন এই অভিনেতা। কিন্তু এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন এই অভিনেতা। পুলিশ জানিয়েছে, আসামিদের ধরতে তাদের অভিযান চলছে।

ম ম মোর্শেদ বলেন, ‘গত পাঁচ দিনে মানসিক অবস্থা এমন, মনে হচ্ছে আমি বুড়ো হয়ে গেছি। এখন দুই–তিন ঘণ্টা করে ঘুম হয়। বেশির ভাগ সময় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না।’

এ সময় মোর্শেদ আরও বলেন, ‘মামলার পর ঘটনা জানার জন্য অনেকেই ফোন দেন। তখন জানতে চান কী করতে চাই। এর মধ্যেও একধরনের হুমকির ব্যাপার থাকে। কিছু মানুষ আছেন, তাঁরা ফোন করে কুশল বিনিময় করে পরামর্শ দেন, সেই পরামর্শের মধ্যেও হুমকি থাকে। তাঁরা ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করেন। এই হচ্ছে আমার অবস্থা।’

ম ম মোর্শেদের বড় ছেলে ম ম পৃথ্বী এ ঘটনায় তুরাগ থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর ৩/৪৪। ২ ফেব্রুয়ারি মামলাটি করা হয়। মামলাটির এজাহার সূত্রে জানা যায়, পৃথ্বীর ছোট ভাই ম ম রাজ্য দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন কলেজের ইংরেজি ভার্সনে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। ঘটনার দিন রাজ্যের সঙ্গে তার সহপাঠী সাইফুল আলম ও আল-শাহরিয়ারের সঙ্গে বেঞ্চে বসাকে কেন্দ্র করে তর্ক–বিতর্ক হয়। সেই সময় তারা রাজ্যকে হুমকি দিয়ে বলে, রাস্তার বের হলেই তাকে মারবে। রাজ্য ভয়ে ঘটনাটি তার বড় ভাই পৃথ্বীকে জানায়।

পৃথ্বী তাঁর তিন বন্ধুকে নিয়ে দুটি মোটরসাইকেলে রাজ্যকে নিতে আসেন। বাসায় ফেরার পথে সাইফুল, আল–শাহরিয়ারসহ ৮– ১০ জন রড, লাঠি, রামদা নিয়ে পথ অবরোধ করে ও এলোপাতাড়ি আঘাত করে রক্তাক্ত করে। পরে হাতে থাকা স্বর্ণের ব্রেসলেট নিয়ে যায় ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আক্রমণকারীরা। সর্বশেষ তারা হুমকি দিয়ে চলে যায়।
গুরুতর অবস্থায় সেদিনই তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ম ম মোর্শেদ বলেন, ‘আমার ছেলে ও তাদের বন্ধুরা এখনো মানসিকভাবে ঘোরের মধ্যে রয়েছে। কয়েক দিন ধরে ছেলেদের জ্বরের সঙ্গে বমি হচ্ছিল। অবস্থা সিরিয়াস।’

মামলা ও বিচার প্রসঙ্গে ম ম মোর্শেদ বলেন, ‘মামলা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আমি কিছু জিজ্ঞাসা করছি না। তারাই বলছে, “আসামি ধরার চেষ্টা করছি।” আমার কথা, বন্ধু–সহপাঠীদের মধ্যে দুকথা হতেই পারে। সেখানে বহিরাগত দিয়ে আক্রমণ করানো হলো, একজনের ১১টি দুজনের ১টি করে সেলাই লেগেছে। এই হামলা কোনো সাধারণ হামলা নয়।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব–ইন্সপেক্টর এমরান হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক। তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনার পর থেকে অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু আসামিদের সবাই পলাতক। কেউই বাড়ি নেই। আমরা লোকও লাগিয়েছি। হয়তো খুব শিগগির ভালো একটি খবর দিতে পারব।’