সাফা কবির
সাফা কবির

‘বরিশাল, তুমি আমার হৃদয় জিতে নিয়েছ’

বিরতির পর আবার শুটিংয়ে ফিরেছেন সাফা কবির। নতুন নাটকের শুটিংয়ে গেলেন বরিশাল। সেখানকার নানান জায়গায় শুটিং শেষে গতকাল ঢাকায় ফিরেছেন। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন ডজনখানেকের বেশি স্থিরচিত্র। জানালেন, কেন বরিশাল তাঁর এতটা প্রিয়—
সুব্রত কুমার সঞ্জীবের পরিচালনায় নতুন একটি নাটকের শুটিং শেষে গতকাল ঢাকায় ফিরলেন সাফা কবির। এই নাটকে তাঁর সহশিল্পী মুশফিক আর ফারহান। জানালেন, বরিশালের বিভিন্ন স্থানে এই নাটকের শুটিং হয়েছে। টানা এক সপ্তাহ নাটকের শুটিং করেছেন তাঁরা।
সাফা কবির নিজে বরিশালের মেয়ে। তাঁর দাদাবাড়ি বরিশালের গৌরনদী এলাকায় এবং মায়ের বাড়ি বরিশাল সদরে। তবে সাফার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। অন্যদিকে সাফার সহশিল্পী মুশফিক আর ফারহানও বরিশালেন সন্তান। নাম চূড়ান্ত না হওয়া এই নাটকের পরিচালক সুব্রত কুমার সঞ্জীবও বরিশালের। তিনি সেখানেই থেকে নাটক নির্মাণের সঙ্গে জড়িত আছেন। সাফা জানালেন, এই নাটকের সবাই বরিশালের। শিল্পী–পরিচালক–ক্যামেরাম্যান থেকে শুরু করে ইউনিটের কেউ না কেউ এই অঞ্চলের। এটা অন্য রকম একটা ভালো লাগার বিষয়।
অভিনয়শিল্পী সাফা কবির জানালেন, দুই বছর আগে নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর বরিশাল যাওয়া হয়েছিল। দাদা–দাদি ও নানা–নানির বংশের কেউ এখন আর বরিশালে থাকেন না। তাই এবার বরিশাল গিয়ে অনেক কিছু মিস করেছেন। সাফা বললেন, ‘আত্মীয়দের কেউ থাকলে অন্তত শুটিংয়ের ফাঁকে তাঁদের বাড়িতে বেড়াতে যেতে পারতাম, এই আফসোসটা ছিল অনেক বেশি।’
সাফা বললেন, ‘ছোটবেলায় প্রায় প্রতি ঈদে বরিশাল যাওয়া হতো। এর বাইরে বিয়ে কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে আব্বু–আম্মুর সঙ্গে যেতাম। তখন দাদা–দাদি, নানা–নানি ও আত্মীয়স্বজনে ভরপুর থাকত। ঢাকা থেকে বেড়াতে গেলে যে কয়টা দিন থাকতাম, কীভাবে যে পার হয়ে যেত, টেরই পেতাম না।’
এখন অভিনয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাফা কবির। শুটিংয়ে দেশ ও দেশের বাইরে বেশ কয়েকবার যাওয়া হয়েছে। বছর পাঁচেক আগে একবার বরিশালেও শুটিং করেন। তবে সেবার টিমের সবাই বরিশালের ছিল না। এবারই প্রথম টিমের সবাই বরিশালের, এ নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিত ছিলেন বলে জানালেন সাফা।
বরিশালে শুটিং শেষে ফিরে নিজের অনুভূতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন সাফা কবির। তিনি লিখেছেন, ‘আমার হৃদয়ের একটা অংশ বরিশালে পড়ে থাকে।’
সাফা লিখেছেন, ‘প্রতিবার বরিশালে গেলেই একটা গভীর, অজানা টান অনুভব করি—মনে হয়, আত্মার একটা অংশ এই জায়গার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। বরিশালে যে শান্তি আমি পাই, তা আর কোথাও পাই না। আবার নতুন করে প্রেমে পড়ে যাই, বরিশালের কাদামাখা রাস্তা, আঁকাবাঁকা নদী, বৃষ্টির পর মাটির গন্ধ, আর অবশ্যই, মুখরোচক খাবার।’
বরিশালের মানুষজনের আন্তরিক আতিথিয়েতা প্রসঙ্গে সাফা কবির লিখেছেন, ‘বরিশালের মানুষই অভিজ্ঞতাকে আরও বিশেষ করে তোলে—এত বিনয়ী, এত সহৃদয় আর ভালোবাসায় ভরা।’
সাফা কবির তাঁর পোস্টে বরিশালের খাবার নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘খাবারের কথা আর কী বলব! প্রতিটা পদ ছিল মুখরোচক—স্থানীয় মজাদার খাবার, প্রতিদিনের তাজা ডাব আর নারকেল, এক দিনও মিস করিনি! আর সেই মিষ্টি, ঘন গুড়—একেবারে অসাধারণ।’
শুটিংয়ে গিয়ে অন্য রকম একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছেন সাফা কবির। তিনি সেই অনুভূতির বর্ণনা দিয়ে লিখেছেন, ‘এইবার গিয়েছিলাম শুটিংয়ের কাজে, কিন্তু সেটা যেন রূপ নিল এক পূর্ণ, মনভরানো সফরে—লঞ্চে পা রাখার মুহূর্ত থেকে শুরু করে বিদায় নেওয়া পর্যন্ত। বরিশাল, তুমি আমার হৃদয় জয় করেছ।’