ভ্রমণ

আকাশছোঁয়া সাজেক ভ্যালি

সাজেক ভ্যালিতে কর্টেজ
সাজেক ভ্যালিতে কর্টেজ

দেশের মধ্যে অপরূপ একটি জায়গা। দেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন সাজেক। যেতে হয় খাগড়াছড়ি শহর হয়ে। ভৌগোলিক অবস্থান রাঙামাটিতে হলেও যাতায়াতের সহজ পথ খাগড়াছড়ি শহর হয়ে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেক ভ্যালির দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার। সাজেক থেকে ভারতের অঙ্গরাজ্য মিজোরাম প্রদেশের দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। দেখা যায় লুসাই পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য।
অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়। বাঘাইঘাট জোনে নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর অ্যান্ট্রি করে যাত্রা শুরু করেছিলাম সাজেক ভ্যালির দিকে।
শোঁ শোঁ বাতাসে চোখ খোলা দায়। আঁকাবাঁকা পথে রোলার কোস্টারের মতো চলল আমাদের গাড়ি। চান্দের গাড়ি। একেকটা বাঁক পেরোয় আর গলা ফাটিয়ে চিত্কার করি সবাই। এই পথ চলাতেই আনন্দ। দুই পাশে উঁচু-নিচু পাহাড়। উড়ো বাজার, গংগা বাজার ও ন্বরাম এমন সব নামের পাহাড়ি গাড়া পেরিয়ে আমরা চলে গেলাম মাচালং বাজার। এই বাজার সাজেক ইউনিয়নের প্রধান কেন্দ্রস্থল। মাচালং বাজার থেকে সাজেকের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। দূরের পাহাড়ে মেঘের গড়াগড়ি আর দুই পাশে আকাশচুম্বী পাহাড় দেখতে দেখতে একসময় উঁচু পথের সমাপ্তি হয়, চলে গেলাম রুইলুইপাড়ায়।
মনে হয়েছিল বিদেশি কোনো উপত্যকায় পাহাড়ের বুকে সাজানো-গোছানো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত ছোট কোনো শহরে গিয়ে উপস্থিত হলাম। সাজেক স্পটে প্রবেশ করতেই রূপময় নামে একটি কটেজ চোেখ পড়ল, যা খুবই মনোমুগ্ধকর। কটেজের বাঁ পাশেই হরিজন গার্ডেন নামে একটি স্পট, তার পাশেই পাহাড়ের ওপর হেলিপ্যাড। সাজেক ভ্যালির মূল পিকনিক স্পট ঝড় ভোজ। মূলত এখানে এসেই সবাই সৌন্দর্য উপভোগ করে। কারণ, ছোট ছোট অনেক বসার আর ফটোশ্যুটের ঘর রয়েছে।
সাজেক ভ্যালির মজা ফুরিয়ে চলে গেলাম দুই কিলোমিটার পাহাড়ি পথ বেয়ে কংলাকপাড়ায়। পাংখোয়াদের বসবাস সেখানে। সব মিলিয়ে ১৫টি পরিবারের বসবাস হবে। বিশাল পাহাড়ের পাদদেশেই কংলাকপাড়ার অবস্থান। কমরৈকপাড়ার স্থানটি পুরো সাজেক ভ্যালির মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। স্থানটি পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত। ফলে এই পাড়া থেকেই পাহাড়ের আসল মজা কী, তা উপভোগ করা যায়। কোথাও কোথাও তুলার মতো দলছুট মেঘের স্তূপ ভেসে বেড়ায় পাহাড়ের চূড়ায়।

যেভাবে যাবেন
প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি অথবা দীঘিনালা। ঢাকা থেকে সরাসরি ভালো মানের অনেক বাস যাতায়াত করে। ভাড়া ৫৮০-৬০০ টাকা। তা ছাড়া চট্টগ্রাম থেকে এক ঘণ্টা পর পর শান্তি পরিবহনের গাড়ি ছাড়ে, ভাড়া ১৯০ টাকা। চান্দের গাড়িতে (স্থানীয় ভাষায় পঙ্খিরাজ) যেতে খরচ পড়বে ৫ হাজার ৫০০ থেকে ৭ হাজার টাকা অথবা মোটরবাইক ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় রিজার্ভ করে ঘুরে আসতে পারেন।