আতশবাজি ছাড়া জমকালো উৎসবের কথা চিন্তা করা যায়! আর এই আতশবাজির প্রচলন অনেক পুরোনো। গবেষকেরা তথ্য হাজির করেছেন, খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ২০০ বছর আগে চীনের মানুষ বাঁশ দিয়ে একধরনের আতশবাজি তৈরি করত। সে আতশবাজি ফোটানো হতো সব অপশক্তিকে লোকালয় থেকে দূরে পাঠাতে।
তবে একটা গবেষণায় জানা যায়, ষষ্ঠ থেকে নবম শতাব্দীর মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে চীনা রসায়নবিদেরা অমরত্বের ওষুধ আবিষ্কার করতে গিয়ে আবিষ্কার করে ফেলেন পটাশিয়াম নাইট্রেট, কাঠকয়লা আর সালফারের সহযোগে তৈরি ইতিহাসের প্রথম বারুদ। আর এই বারুদ বাঁশের মাধ্যমে আগুনে ছুড়ে দিয়ে আতশবাজির মতো ব্যবহার করা হতো। এরপর বাঁশের পরিবর্তে জায়গা করে নেয় কাগজের তৈরি টিউব। প্রায় ২০০ বছর পর চীনারা আকাশে আতশবাজি ছোড়ার পদ্ধতি আয়ত্তে আনে।
ত্রয়োদশ শতাব্দী নাগাদ পর্যটক ও কূটনীতিকদের হাত ধরে ইউরোপ ও আরব ভূখণ্ডে আতশবাজির প্রচলন ঘটে। প্রায় কাছাকাছি সময়ে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধজয় কিংবা ধর্মীয় উৎসব পালনে আতশবাজি করা হতো। মধ্যযুগে যুক্তরাজ্যে আতশবাজি জনপ্রিয় ছিল বলে জানা যায়। ১৪৮৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজা সপ্তম হেনরির বিয়ের অনুষ্ঠানে আতশবাজি পোড়ানো হয়েছিল। ১৬৮৫ সালে রাজা দ্বিতীয় জেমসের অভিষেক দিনের আতশবাজির উৎসব এতটাই সুন্দর ছিল যে রাজা খুশি হয়ে দলনেতাকে নাইটহুড খেতাব দিয়েছিলেন।
রেনেসাঁ-পরবর্তী যুগে ইউরোপে, বিশেষভাবে ইতালিতে কিছু কিছু স্কুলে আতশবাজি পোড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। ১৮৩০ সালের দিকে ইতালীয়রা প্রথমবারের মতো রঙিন আতশবাজির প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
হিস্ট্রি ডটকম অবলম্বনে