Thank you for trying Sticky AMP!!

তারায় তারায় মিতালি

>

বন্ধুত্বের নানা রং। নানা রং আছে বলেই বন্ধুত্বের আবেগ-অনুভূতিতে আছে ভিন্নতা। রুপালি পর্দার তারকারাও তেমন। কর্মসূত্রে তারকাদের জীবনে নতুন বন্ধু আসে, আবার বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার খবরও শোনা যা। প্রতিযোগিতা, রেষারেষি আর তর্ক পেরিয়ে অনেক তারকাই ব্যক্তিজীবনে পরস্পরের সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন। আজ পড়ুন এমনই কয়েকজন তারকার কথা, যাঁরা পর্দায় পরস্পরের প্রতিযোগী কিন্তু ব্যক্তিজীবনে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। 

শাহরুখ ও জুহি


শাহরুখ ও জুহির ২০ বছরের বন্ধুত্ব
বলিউডের কিং খান শাহরুখ খান ও জুহি চাওলার মধ্যে বন্ধুত্বের বয়স ২০ বছর পেরিয়ে গেছে। আগে পেশাদার সম্পর্ক থাকলেও ১৯৯৭ সালে ডুপ্লিকেট সিনেমায় অভিনয়ের সময়ই দুজনের বন্ধুত্ব তৈরি হয়। জুহি জানান, ‘তখন আমার মা মারা যান। তখন শুটিং সেটে শাহরুখ আমাকে শক্ত থাকতে উজ্জীবিত করেছিল। আমার আগে শাহরুখ তার বাবা-মাকে হারায় বলে আমার কষ্ট সে বুঝতে পেরেছিল, তাই আমাকে অনেকবার হাসানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল।’ সেই নব্বই দশকে শাহরুখ-জুহির মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠলেও সিনেমা নিয়ে অনেক রেষারেষির খবর শোনা যায়।

 চলচ্চিত্র নিয়ে যতই রেষারেষি থাকুক না কেন ব্যক্তিগত জীবনে জুহি চাওলা শাহরুখ খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্ট, কলকাতা নাইট রাইডার্সের অংশীদারত্বসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবসায়িকভাবে সম্পৃক্ত। ২০১১ সালে জুহির ভাই ছিলেন রেড চিলিসের প্রধান নির্বাহী, যাঁর অসুস্থতার সময় শাহরুখ তাঁকে সরিয়ে অন্য একজনকে সিইও নিয়োগ দেন। জুহি সে ঘটনাতে বেশ মনঃক্ষুণ্ন হলেও বন্ধুত্বে চিড় ধরতে দেননি। 

মাইলি ও ডেমি লোভাটো


মাইলিকে নিয়ে ডেমির যত ভয়
হলিউড তারকা মাইলি ও ডেমি লোভাটোর মধ্যে খুনসুটির কথা তাঁদের ভক্তদের কাছে উপকথাই মনে হয়। ২০০৭ সালে দুজনের প্রথম পরিচয় হয় এক শুটিং সেটে, এরপর থেকে বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বে অনেকটা এই ঝড় এই বৃষ্টির মতো। দুজন একই বয়সের বলেই হয়তো সম্পর্কে মারামারি আর কাটাকুটি একটু বেশিই। ২০১৪ সালে দুজনের মধ্যে কথা বলা বন্ধ ছিল, কিন্তু ২০১৬ সালে আবার দুজনকে নিয়মিত কফি খেতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন নারী অধিকার আন্দোলনে দুজনকে পাশাপাশি দেখা যায়। ডেমির ভাষ্যে, মাইলি এখনো ছোট। কখন যে কী ভুল করে বসে, তা নিয়েই আমার যত ভয়। 

প্যারিস হিলটন ও লিন্ডসে লোহান

তবুও বন্ধু
লিন্ডসে লোহান তো এমনিতে মাদকাসক্তি আর মারামারির কারণে সংবাদের শিরোনাম হন। তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজন আরেক তারকা প্যারিস হিলটন। দুজনের বয়সের পার্থক্য পাঁচ হলেও ব্যক্তিজীবনে দারুণ বন্ধুত্ব দুজনের। দুজনের পর্দার রেষারেষি নিয়ে এক যুগ পর চলচ্চিত্রও হতে পারে বলে পাপারাজ্জিদের ধারণা। ২০০৬ সালে প্যারিস লিন্ডসকে নাবালক বলে গালি দিয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন। পরে লিন্ডসে সেই গালির প্রতিবাদে অনেক বড় এক ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। সেই বার্তাতেও ছিল একগাদা গালি যা প্যারিস পরে ফাঁস করে দেন। যতই দুজনকে পর্দায় কথা কাটাকাটি করতে দেখা যাক না কেন ব্যক্তিজীবনে দুজনই বেশ ঘনিষ্ঠ। ২০১৩ সালে লিন্ডসের কারণে প্যারিসের ভাই জেলেও গিয়েছিলেন। এরপরের মাসেই লিন্ডসেকে আবার দেখা যায় প্যারিসের জন্মদিনে। এটাই নাকি দুজনের স্বাভাবিক বন্ধুত্ব বলে দুজনে দাবি করেন। 

কেটি পেরি ও টেইলর সুইফট


তাঁরা বন্ধু
২০১৪ সালে প্রথম কেটি পেরি ও টেইলর সুইফটকে তর্কে জড়াতে দেখা যায়। সেবার নাকি সুইফট তাঁর এক গানের শুটিংয়ের জন্য পেরির গানের দল থেকে নৃত্যশিল্পীদের ভাগিয়ে এনেছিলেন। পেরির দল থেকে তিনজন নৃত্যশিল্পী চলে যান সুইফটের দলে। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি অনেক দিন চলছিল। পরে অবশ্য টেলিভিশন উপস্থাপক জেমস কর্ডন দুজনের বন্ধুত্বের কথা প্রথম প্রকাশ করেন। তিনি জানান, কেটি ও সুইফট ব্যক্তিজীবনে খুব ভালো বন্ধু। ব্যাড ব্লাড গানের শুটিংয়ের সময় নৃত্যশিল্পী চুরির ঘটনা পাপারাজ্জিদের কারণেই মনে হয়েছে দুজন দুজনের শত্রু, যা আসলে উল্টো। 

ব্রিটনি স্পিয়ার্স ও ক্রিস্টিনা অ্যাগুইলেরা


রেষারেষির বন্ধুত্ব
দুজনই পপতারকা। ব্রিটনি স্পিয়ার্স ও ক্রিস্টিনা অ্যাগুইলেরাকে ভক্তরা প্রতিযোগী ভাবতেই পছন্দ করেন। ২০০৪ সালে ক্রিস্টিনা তো ব্রিটনির খারাপ অভিনয়ের জন্য সমালোচনা করে ব্রিটনিভক্তদের চক্ষুশূল হয়েছিলেন। ক্রিস্টিনা এক ইন্টারভিউয়ে জানান, ‘ওর মতো খারাপ অভিনয়শিল্পী আর নেই। সত্যি অর্থে সে যেসব জায়গায় অভিনয় করে সেখানকার কাজ খারাপ হয় না, ব্রিটনিই খারাপ অভিনয় করে বলে কাজটা খারাপ হয়ে যায়।’ ব্রিটনিও কম যান না, তিনি জানান, ‘কোথাকার কোন ক্রিস্টিনা তাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করবেন আর তিনি প্রতিবাদ করবেন এমনটা হবে না।’ এরপর দুজনকে পরস্পরের গান নিয়েও অনেকবার কথা জড়াতে দেখা যায়। ক্রিস্টিনার তো গলাই নেই, ব্রিটনির ভাষ্য; আবার ক্রিস্টির ভাষ্য, ‘ব্রিটনি তো বাচ্চা ছেলেদের জন্য গান করেন।’ দুজনকে এমন তিক্ততায় জড়াতে দেখলেও পর্দার আড়ালে কিন্তু দুজনের খুব বন্ধুত্ব। এ বছরের মে মাসে দুজনকে এক গাড়িতে করে গান গাইতে দেখা যায় একটি ভিডিওচিত্রে। ভক্তদের নাড়িয়ে দিতে মাঝেমধ্যেই দুজন নাকি এমন পাগলামি করেন। 

ডোয়াইন জনসন ও ভিন ডিজেল


দিন শেষে বন্ধুত্বই তাঁদের সব
ইনস্টাগ্রামে দ্য রক খ্যাত ডোয়াইন জনসন ও ভিন ডিজেলের কথা যুক্ত ভক্তদের বেশ আনন্দ দেয়। একজন অপরজনকে রাগানোর জন্য নানান সময় নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নেন। ডোয়াইন জনসন ভিন ডিজেলকে চকলেটের মতো নরম বলে উত্ত্যক্ত করেন। সেখানে ভিন ডিজেল এসব সস্তা কৌতুকে গা লাগান না বলে মন্তব্য করেন। ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস সিনেমায় অভিনয়ের সময় ডোয়াইন জনসন সবাইকে ধন্যবাদ দিলেও ভিন ডিজেলের নাম কখনোই মুখে আনতেন না। দুজনের রেষারেষি কখন যে হাতাহাতির মধ্যে পৌঁছায় তা নিয়ে একসময় ভক্তরা বেশ দুশ্চিন্তায় থাকতে ২০১৭ সালে প্রথম দুজনের ব্যক্তিগত জীবনের ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে জানা যায়। যেকোনো খারাপ পরিস্থিতিতে ডিজেল অকপটে ডোয়াইনকে ফোন করেন। সিনেমায় অভিনয়ে যখন হতাশা জন্মে ডিজেলতে তখন বন্ধু ডোয়াইন জনসনই নাকি তাঁকে হতাশা কাটানোর পথ বাতলে দেন। দিন শেষে দুজন দুজনের বেশ ভরসার জায়গা।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস ও ম্যারি ক্ল্যায়ার অবলম্বনে।