প্রায় পাঁচ বছর আগে নিশ্চিহ্ন এক ভাইরাসকে ফিরিয়ে আনলেন বিজ্ঞানীরা। কানাডার আলবার্টা ল্যাবে এক বিজ্ঞানী দল নিশ্চিহ্ন হর্স ভাইরাসের ফিরে আসা নিশ্চিত করলেন।
হর্স পক্স বা এইচপি হলো অর্থো পক্স হর্স ভাইরাস। বিংশ শতকের আগে ছিল এর বসতি। বর্তমানে এটি প্রায় নিশ্চিহ্ন।
নামেই এর পরিচয়। হর্স পক্স হলো ঘোড়ার রোগ। মানুষকে সংক্রমিত করবে এমন জানা নাই। অবশ্য এটি গুটি বসন্তের স্বজাতি।
মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর রোগ হিসেবে পরিচিত এই বসন্ত বা পক্স। এতে সংক্রমিত মানুষের ৩০ শতাংশের হয়েছিল মৃত্যু। ১৯৮০ সালে বসন্ত হয়েছিল নির্মূল। এ জন্য টিকা ধন্যবাদ পেতেই পারে। তবু হর্স পক্সের পুনরুজ্জীবন নিয়ে গবেষণা অনেক জৈবনিরাপত্তা (বায়োসিকিউরিটি) বিশেষজ্ঞদের দুর্ভাবনায় ফেলেছে।
কিন্ত কথা হলো হর্স পক্স ভাইরাস কী করে পুনর্জীবিত হলো ল্যাবে। গবেষণায় ব্যবহৃত হলো হর্স পক্স ভাইরাসের ডিএনএর অংশবিশেষ। হাজার হাজার জিন ভগ্নাংশ গ্রন্থিত করা হলো। রচিত হলো পূর্ণ হর্স পক্স জেনোম।
এর পর এই হর্স পক্স জেনোম ঢোকানো হয় ইতিমধ্যে সংক্রমিত কোষে ভিন্ন রকমের অর্থো পক্স ভাইরাস ভ্যাকসিনিয়ার সাহায্যে। এভাবে এইচপিএক্স জিনের সংশ্লেষ হলো ভেকসিনিয়া ভাইরাসে যাতে সৃষ্টি হতে পারে হর্স পক্স ভাইরাস।
বিজ্ঞানীরা দেখালেন, পুনর্জীবিত ভাইরাস কোষ সংক্রমিত আর পুনর্জনন করতে পারে। অবশ্য এই গবেষণা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিল আর এর নৈতিকতা নিয়ে কথা উঠল। এর পরিণতি নিয়েও প্রশ্ন উঠল।
বিজ্ঞানীরা বর্তমান প্রযুক্তির অপব্যবহার করলেন? বায়ো সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা এমন গবেষণার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। এমন বিতর্কিত সমীক্ষাকে বলে ‘ডুয়াল ইউজ রিসার্চ।’ বিজ্ঞানের ভান্ডারে যোগ করে নতুন জ্ঞান। তবে এর অপব্যবহার আনতে পারে বৈশ্বিক ক্ষতিকর পরিণতি। জনস্বাস্থ্য আর নিরাপত্তার হুমকি।
বসন্তের জিনের ২০ শতাংশের বেশি রাখার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সব নিয়ম মানলেও হর্স পক্স পুনর্নির্মাণ করতে সক্ষম। এই বিতর্কিত সমীক্ষা প্রকাশে কোনো জার্নাল বা গবেষণা সাময়িকী রাজি হয় নাই। বলেছে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’।
আলবার্টা ল্যাব এ ব্যাপারে দক্ষ কিন্তু অন্য ল্যঅবে এমন স্টাডি করা বিপজ্জনক। বসন্তের মতো ভাইরাস পুনর্জীবিত করা বিশ্বের জন্য হুমকি। বিজ্ঞানের সব প্রযুক্তি প্রয়োগের আগে বিশ্বের মানুষের জীবনের কথা ভাবতে হবে অনেক সময় তা আশীর্বাদ না হয়ে হতে পারে অভিশাপ।