Thank you for trying Sticky AMP!!

পলিথিন পুড়িয়ে শিল্পকর্ম

এমিলিয়া রায়। ছবি: সংগৃহীত

ফেলনা পলিথিন পুড়িয়ে শিল্পকর্ম, পেইন্টিং ও ভাস্কর্য তৈরি করেন এমিলিয়া রায় (৬৬)। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি এসব তৈরি করেই চলছেন। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের রাহুতপাড়া গ্রামে এমিলিয়ার বাড়ি। তিনি আলফ্রেড রায়ের স্ত্রী।

ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকা, গান-কবিতা লেখা, ভাস্কর্য তৈরি করতে পছন্দ করতেন এমিলিয়া। এসএসসি পরীক্ষার পর বিয়ে। লেখাপড়া আর করা হয়নি। তবে বন্ধ হয়নি শিল্পচর্চা। 

সম্প্রতি এমিলিয়ার গ্রামের ডুপ্লেক্স বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ভবনের সামনের বারান্দায় পরিবেশদূষণকারী পলিথিন পুড়িয়ে তৈরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য। আরেক পাশে মাদার তেরেসার ভাস্কর্য। ঘরের সামনেই রাখা এমিলিয়ার তৈরি দুটি সিংহের ভাস্কর্য। ঘরের ভেতরে রাখা আছে বিখ্যাত মানুষদের ভাস্কর্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছোট শেখ রাসেলও আছে। পলিথিন পোড়া মণ্ড ও বিভিন্ন রং ব্যবহার করে তৈরি করা পেইন্টিংগুলো ভিন্ন মাত্রা তৈরি করেছে। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্যাতনের প্রতিচ্ছবির ঐতিহাসিক ভাস্কর্য, মানুষের মাথার চুল সংগ্রহ করে তা দিয়ে নির্মাণ করা বঙ্গবন্ধুর মুখমণ্ডল–সংবলিত অপরূপ বাংলাদেশের মানচিত্র।

এমিলিয়া রায় বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন। টেলিফোনে এমিলিয়া বললেন, ভাস্কর্য বা বিভিন্ন শিল্পকর্ম তৈরিতে তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ নেই। নিজের মনের কল্পনা থেকেই তা তৈরি করেন। 

 ১৯৯০ সালের ঘটনা। একদিন গরম কড়াই পাশের পলিথিন ব্যাগের ওপর রাখলে পলিথিন ব্যাগ গলতে শুরু করে। এটা দেখেই মাথায় চিন্তাটা আসে। ফেলে দেওয়া পলিথিন জমানো শুরু করেন। 

এমিলিয়া তাঁর শিল্পকর্ম বা প্রতিভার প্রচার চাননি কখনো। একটি একাডেমি প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা আছে তাঁর। একাডেমিতে তাঁর শিল্পকর্ম সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুনদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শিল্পী তৈরি করতে চান তিনি। এতে বেকারত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি দেশের পরিবেশদূষণকারী পলিথিনের বিরূপ প্রভাব থেকেও কিছুটা মুক্ত হওয়া সম্ভব হবে। 

এমিলিয়া রায়ের মেয়ে আইরিন রায় শুধু ঢাকায় থাকেন। অন্য ছেলে মেয়েরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় থাকেন। 

 রাহুতপাড়া গ্রামের জামান মুন্সি, শামীমুল হক, সুশীল রায়সহ একাধিক ব্যক্তি বললেন, কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়া এত সুন্দর শিল্পকর্ম তৈরি বিরল ঘটনা। এই শিল্পী তাঁর এই প্রতিভার কথা কখনো প্রচার করেননি বা এটাকে বাণিজ্যিক কোনো কাজে লাগানোর কথাও চিন্তা করেননি। 

আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রইচ সেরনিয়াবাত বললেন, সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাঁর এই সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে
রাখা সম্ভব।