ভালোবাসায় কমবেশি দুঃখ-যাতনা তো সইতেই হয়। নেদারল্যান্ডসের নাগরিক আলেক্সান্ডার পিটার কার্কের ক্ষেত্রেও সে রকমই ঘটেছে। তিনি এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
২৬ বছর বয়সী ঝ্যাং নামের এক তরুণীর সঙ্গে অনলাইনে পরিচয় হয় কার্কের। অদেখা সেই বান্ধবীর মুখোমুখি হতে চীনের হুনান প্রদেশে ছুটে যান ৪১ বছর বয়সী কার্ক। চাংশা বিমানবন্দরে টানা ১০ দিন অপেক্ষা করতে করতে তাঁর শরীর ভেঙে পড়ে ক্লান্তিতে। তবু দেখা করতে যাননি ঝ্যাং। এ ঘটনায় কার্কের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন চীনের অনেকে।
চীনা সংবাদমাধ্যমকে কার্ক বলেন, ২৬ বছর বয়সী ঝ্যাংয়ের সঙ্গে মাস দুয়েক আগে একটি মুঠোফোন অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয় হয় তাঁর। একপর্যায়ে তিনি মেয়েটির প্রেমে পড়ে যান। আর তাঁকে দেখতে হুনান সফরের সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে পৌঁছানোর পরও দেখা পাননি ঝ্যাংয়ের। তবু কার্ক সিদ্ধান্ত নেন ১০ দিন বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করবেন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।
ঘটনাটির খবর প্রচার হওয়ার পর ঝ্যাং একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, তিনি ব্যাপারটাকে পুরোপুরিই কৌতুক বলে ধরে নিয়েছিলেন। আর কার্ক যখন চাংশা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন, ঝ্যাং তখন প্লাস্টিক সার্জারি করাতে আরেক প্রদেশে গিয়েছিলেন। সংগত কারণেই তাঁর মুঠোফোন তখন বন্ধ ছিল।
ঝ্যাং আরও বলেন, ‘রোমান্টিক সম্পর্কের ব্যাপারে আমরা এগিয়েছিলাম। কিন্তু একপর্যায়ে লোকটাকে আমার প্রতি অনুভূতিহীন মনে হলো। একদিন সে আমাকে আচমকা একটা বিমান টিকিটের ছবি পাঠাল। আমি ভাবলাম, নিশ্চয়ই কৌতুক করছে। এরপর সে আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’
চীনের সামাজিক যোগাযোগের অনলাইন মাধ্যম ওয়েইবোতে ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কার্ক অযৌক্তিক কাজ করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘লোকটা বেকুব নাকি?’। §আরেকজনের মন্তব্য, ‘চীনে সবকিছুই ভুয়া’।
আরেক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘ঝ্যাংয়ের উচিত ছিল বিমানবন্দরে যাওয়া। লোকটাকে দেখে অপছন্দ হলে সে ফিরে যেতে পারত।’
অনেকে আবার সহানুভূতি দেখিয়েছেন কার্কের প্রতি। সে রকম একজন লিখেছেন, ‘লোকটা ওই সম্পর্ককে সত্যি বলে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু তাকে অনুভব করার মতো মানুষের অভাব রয়েছে। কাউকে অপছন্দ হলে সরাসরি না করে দেওয়া উচিত।’
ঝ্যাং অবশ্য একেবারে অনুভূতিশূন্য নন। তিনি বলেছেন, লোকটা আগে সেরে উঠুক। তারপর নিশ্চয়ই দেখা করতে যাবেন।