
রোশমা এবং বিটি দম্পতির দিনগুলো সুখেই কাটছিল। সমুদ্র উপকূলবর্তী একটি ক্ষুদ্র ভূখণ্ডে তাদের বসবাস। ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভ্রান্ত হিসেবে তাদের পরিবারের সুনাম ও সম্মান রয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রদর্শিত নাটক ইচ্ছামৃত্যুর কাহিনি আবর্তিত হয়েছে এই দুজনকে ঘিরে।
নাটকে দেখা যায় স্ত্রী বিটি একসময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তার সেবাযত্নের দায়িত্ব নেয় রেবেকা নামে মানবতাবাদে উদ্বুদ্ধ এক মহিলা। রোশমার স্ত্রী বিটির সেবা করতে এসে রেবেকা ধীরে ধীরে তাদের পরিবারে অপরিহার্য হয়ে ওঠে, এমনকি গৃহকত্রী৴র পদও লাভ করে। রেবেকার প্রাধান্য দিন দিন বাড়তে থাকে পরিবারে এবং সে রোশমার ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। এসব দেখে বিটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। উভয়ের সম্পর্ক নিয়ে একসময় বিটির মনে সন্দেহের জন্ম হয়। রোশমা আর বিটির দাম্পত্য জীবনে রেবেকার আগমনে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, তার ভেতর দিয়ে কাহিনি এগোতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আত্মহননই হয় বিটির জীবনের পরিণতি। আর রেবেকা নিজেকে খুনি ও অপরাধী ভাবতে থাকে।
সাউথ এশিয়ান ইবসেন সেন্টার প্রযোজিত নাট্যকার হেনরিক ইবসেনের রোজমারশোল্ম অবলম্বনে এই নাটকটির সম্পাদনা, নির্মাণ ভাবনা ও মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন ড. কুন্তল বড়ুয়া। ১৮৮৬ সালে লেখা এই নাটকটি এখনো প্রাসঙ্গিক এবং সমকালীন বলে জানালেন কুন্তল বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ধর্মের নামে যে অমানবিক কাণ্ড চলছে, মানবিকতার নামে বিবেকবর্জিত যে মিথ্যার বেসাতি চলছে, আবার মুক্ত-স্বাধীন চিন্তা, মানবধর্ম, সততা ও স্বচ্ছ বিবেকের বিপরীতে প্রতিনিয়ত যারা আত্মিÄক মৃত্যুর পথ রচনা করে চলেছে, এই নাটক তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল ভাঙার সংগ্রাম ও সাহসী ইশতেহার।’
এ নাটকের প্রযোজনা উপদেষ্টা ড. সৌরেন বিশ্বাস। আলোক পরিকল্পনা নাসিরুল-উল হক খোকন, আবহ সংগীত মঈন উদ্দীন কোয়েল, শব্দ প্রক্ষেপণ মাহমুদুল হক জিহাদ, সহকারী পরিচালক সুবীর মহাজন। অভিনয় করেছেন, শুভ্রা বিশ্বাস, সাহিদ উদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান, শাহিনুর সরওয়ার, শহিদুল ইসলাম অলি ও মুসলীমা খাতুন।