Thank you for trying Sticky AMP!!

শীতে চুলের যত্নে

আসছে শীত। শীতের সঙ্গে চুল আর ত্বকের একধরনের শত্রুতা আছে বলেই মনে হয়। শীত মৌসুমে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়, বেড়ে যায় ধুলাবালুর প্রকোপ। সে কারণে চুল রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। ঠিকমতো যত্ন নিলে এই শীতেও চুল থাকবে ঝরঝরে, সুন্দর আর সতেজ। তার আগে জেনে নিতে হবে এ সময় চুলে কী কী সমস্যা হতে পারে। এ সময় চুলের সাধারণ সমস্যা এবং তার প্রতিকারের উপায় দিলেন শাহিনা আফরিন।

মাথার ত্বকের ধরন বুঝে যত্ন নিতে হয়, তেমনি চুলেরও ধরন বুঝে যত্ন নিতে হবে

শাহিনা আফরিন জানিয়েছেন, স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বক হয় দুই রকমের—শুষ্ক ও তৈলাক্ত। শুষ্ক ত্বকে খুশকির সমস্যা বেশি দেখা দেয় আর মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলেও চুল শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের ধরন বুঝে যত্ন নিতে হয়, তেমনি চুলেরও ধরন বুঝে যত্ন নিতে হবে।

মাথার তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে

মাথার তৈলাক্ত ত্বকে লুকিয়ে থাকা খুশকির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। অর্থাৎ খুশকি ত্বকের সঙ্গে লেগে থাকে। এ সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে মৌরি এবং সমপরিমাণ পানি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভালোমতো বেটে মাথার ত্বকে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেললে খুশকি দূর হবে।

শীতকালে মাথার শুষ্ক ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে যায়

মাথার শুষ্ক ত্বকের যত্নে

শীতকালে মাথার শুষ্ক ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। খুশকি বেড়ে যায়, বাড়ে বিড়ম্বনাও। এ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে দেড় টেবিল চামচ মেথি ও দেড় টেবিল চামচ শুকনা আমলকী এক কাপ পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রাখার পর বেটে ফেলুন। এরপর এর সঙ্গে মেশান দুই-তিন চা-চামচ মধু। এই মিশ্রণ চুলের গোড়ায় লাগালে খুশকি যেমন দূর হবে তেমনি চুলে পুষ্টি জোগাতেও সাহায্য করবে। শাহিনা আফরিন বলেন, এ ক্ষেত্রে উপাদানগুলো সঠিক পরিমাণে নেওয়া খুব জরুরি।

চুল ধুতে হবে নিয়মিত

ঠান্ডার দিনে গোসল করার একধরনের ভীতি দেখা যায় অনেকের মধ্যে। গোসলের জন্য শরীরে গরম পানি ব্যবহার করা হলেও মাথায় গরম পানি ব্যবহার করা যায় না। এ জন্য অনেকে গোসলের সময় চুল ভেজান না। ফলে শ্যাম্পুও করা হয় না নিয়মিত। শাহিনা আফরিনের মতে, এটি একেবারেই করা উচিত নয়। বরং এ সময় বাইরে অনেক বেশি ধুলাবালু উড়ে বলে রোজ চুল পরিষ্কার করা উচিত। ঠান্ডা পানি দিয়েই চুল ধোয়ার কাজ সেরে ফেলতে হবে।

রুক্ষ আবহাওয়ায় মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো

চুলের যত্নে কী করবেন?

রুক্ষ আবহাওয়ায় মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। এক কাপ গরম পানিতে পাঁচ থেকে ছয়টা রিঠা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন। এটি শ্যাম্পুর কাজ করে থাকে। চুল রং করা থাকলে এই মিশ্রণের ব্যবহারে অনেক সময় চুল রুক্ষ বোধ হতে পারে, এমন হলে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এ ছাড়া যেহেতু রোজ শ্যাম্পু করা হবে, তাই শ্যাম্পুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এরপর চুল ধুয়ে নিবিড় কন্ডিশনিং করুন।

চুলের রুক্ষতা রোধে যা করবেন

চুলের রুক্ষ ভাব দূর করতে নিয়মিত তেল মাখতে হবে। তবে চুলে তেল দিয়ে বাইরে বের হওয়া ঠিক হবে না, এতে আরও বেশি ময়লা জমবে চুলে। বাইরে বের হলে চুল ভালোমতো বেঁধে, ঢেকে রাখতে হবে।

খুশকির সমস্যা বেশি বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত

চুল ঝলমলে ও কোমল করতে যা করবেন

একটি আস্ত পাকা কলা, ছোট আকারের তিনটি দেশি পেঁয়াজ ও এক টেবিল চামচ মধু বেটে একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর চুলের গোড়া এবং সম্পূর্ণ চুলে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। কিছুদিন ব্যবহারে চুল যেমন মোলায়েম হবে তেমনি গোড়াও হবে মজবুত।

খুশকির সমস্যা বেশি বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে জানান চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রাশেদ মোহাম্মদ খান। তিনি জানান, খুশকি একধরনের একজিমা। এর সংক্রমণে মাথার চামড়া উঠে যেতে পারে, অনেক সময় লালচে গুড়ি গুড়ি গোটা দেখা দেয়। চুলকালে এটি থেকে ঘা হয়ে যেতে পারে। এমন হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ অথবা মলম ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া অল্প খুশকি দেখা দিলেই ভালো মানের খুশকিনাশক শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।