বই রাখার ঘরটি যেন কোনোভাবেই স্যাঁতসেঁতে বা আর্দ্র না থাকে, তা নিশ্চিত করুন
বই রাখার ঘরটি যেন কোনোভাবেই স্যাঁতসেঁতে বা আর্দ্র না থাকে, তা নিশ্চিত করুন

বইয়ের যত্ন নেবেন যেভাবে

পরিষ্কার হাত দিয়ে বই স্পর্শ ধরুন

বইয়ে হাত দেওয়ার আগে দুই হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। হাতে লেগে থাকা তেল, ময়লা বইয়ের মলাট ও ভেতরের পৃষ্ঠার ক্ষতি করতে পারে। এ থেকে সৃষ্টি হয় দাগ, যা কখনোই দূর করা যায় না।

বই পড়ার সময় খানাপিনা করবেন না

যতই সাবধানী হোন না কেন, খানাপিনার সময় খাবারের অংশবিশেষ ছিটকে পড়তেই পারে। বইয়ে কোনোরকম দাগ পড়তে দিতে না চাইলে খাবার কিংবা পানীয় থেকে বই দূরে রাখুন। খাবারের অংশবিশেষ ছিটকে এসে পৃষ্ঠার এমন ক্ষতি করতে পারে, যাতে বই পড়ার অনুপযোগী হতে পারে।

তাক থেকে নামানোর সময় পুটের মাঝবরাবর ধরে টান দিন

শেলফের তাক থেকে বই বের করার সময় পুট বা শিরদাঁড়ার ওপরের অংশ ধরে টান দিলে পুট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পাশের দুটি বই হালকা চাপ দিয়ে সরিয়ে কাঙ্ক্ষিত বইটির পুটের মাঝ অংশ বরাবর ধরে টান দিন। দুটি বইয়ের মাঝখানে কাঙ্ক্ষিত বইটি যদি শক্তভাবে আটকে থাকে, তাহলে বইটির পেছন থেকে চাপ দিয়ে ছাড়িয়ে নিন।

পাতলা বুকমার্ক ব্যবহার করুন

বইয়ের কোন পৃষ্ঠা পড়ছেন, তার নিশানা রাখতে কখনোই পৃষ্ঠা ভাঁজ করে রাখবেন না। এটি বইয়ের স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। আবার বইয়ের মধ্যে কলম বা মোটা কোনো জিনিস রেখে দিলে, তা বইয়ের পৃষ্ঠা ও পুট—উভয়ের ক্ষতি করে। তাই কোন পৃষ্ঠা পড়ছেন, তার চিহ্ন রাখতে পাতলা বুকমার্ক ব্যবহার করুন।

বই সোজা করে দাঁড় করিয়ে রাখুন

পেপারব্যাক ও ছোট হার্ডব্যাক বই সোজা করে দাঁড় করিয়ে তাকে রাখুন। আকৃতি নষ্ট না করতে চাইলে বইটি একই আকারের কয়েকটি বইয়ের পাশে রাখুন। বই যেন কোনো দিকে হেলে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করুন। বইটি খুব বেশি বড় হওয়ার ফলে যদি তাকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে রাখতে না পারেন, তাহলে শুইয়ে রাখুন। তবে এ ক্ষেত্রে বইটির ওপর দুটির বেশি বই রাখবেন না।

সরাসরি রোদ থেকে বই দূরে রাখুন

সুর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি বইয়ের ওপর পড়লে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মলাটের রং ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে। এই ক্ষতি স্থায়ী হয় এবং এর ফলে দামি বা বিরল কোনো বইও মূল্যহীন হয়ে পড়ে। পারলে বইয়ের শেলফ ঘরের ছায়াময় কোনো স্থানে সরিয়ে নিন। আর যদি এমন হয় যে কোনোভাবেই সরাসরি রোদ থেকে দূরে রাখতে পারছেন না, তাহলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধী কভার কিনে নিন। অনলাইনে বিভিন্ন স্টোরে একটু খোঁজাখুঁজি করলেই তা পাওয়া যাবে।

যেভাবেই হোক বই শুষ্ক রাখুন

বই রাখার ঘরটি যেন কোনোভাবেই স্যাঁতসেঁতে বা আর্দ্র না থাকে, তা নিশ্চিত করুন। নইলে বইয়ে ছত্রাক জন্মাতে পারে। হিটার বা তাপদায়ক যন্ত্র থেকে বই বেশ দূরে রাখুন। অত্যধিক তাপে বই নষ্ট হয়ে যায় সহজেই।

নিয়মিত ময়লা ঝেড়ে পরিষ্কার করুন

বইয়ের তাকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধুলা–ময়লা জমতে শুরু করে। প্রতি দুই মাস অন্তর, পারলে প্রতি মাসে একবার বইয়ের ধুলা-ময়লা ঝেড়ে ফেলুন। পরিষ্কার কাপড়, পালকযুক্ত ডাস্টার অথবা নরম ব্রাশ দিয়ে বইয়ে জমে থাকা ধুলা-ময়লা ঝেড়ে পরিচ্ছন্ন রাখুন। বইয়ের পুটেও আলাদা করে ময়লা জমে থাকতে পারে। তাই পুট ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।

ছিঁড়ে যাওয়া পৃষ্ঠা মেরামতে টেপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন

দোকানে যেসব স্কচটেপ পাওয়া যায়, তা দিয়ে বইয়ের পৃষ্ঠা জোড়া লাগানো থেকে বিরত থাকুন। এ ধরনের টেপ বইয়ের আরও ক্ষতি করতে পারে। আঠালো নোট বা স্টিকারও বই থেকে দূরে রাখুন।

মলাটের ওপরে বুক জ্যাকেট পরিয়ে রাখুন

অনলাইন থেকে বুক জ্যাকেট কিনে বইয়ের মলাটে পরিয়ে দিতে পারেন। বুক জ্যাকেট সহজেই বইয়ের মলাটে বসে যেতে পারে। বই স্থানান্তরের সময় যেন দুমড়ে-মুচড়ে না যায়, সে জন্য বুক জ্যাকেট খুবই উপকারী।

পুরোনো ও মূল্যবান বই মেরামত জন্য সংরক্ষকের সাহায্য নিন

দুর্লভ ও মূল্যবান বই মেরামতের জন্য প্রয়োজন একজন দক্ষ সংরক্ষক। কিন্তু এ রকম সংরক্ষকের খোঁজ আপনি পাবেন কোথায়? দক্ষ কোনো সংরক্ষকের খোঁজ পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে হাতের কাছে যেকোনো একটি পাঠাগারে। পাঠাগারের গ্রন্থাগারিকই আপনাকে দক্ষ সংরক্ষকের খোঁজ পাইয়ে দিতে পারেন।

সূত্র: উইকিহাউ