চলছে গ্রীষ্মকাল। এ সময় এমনিতেই বাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ। তাই সুস্থভাবে রোজা রাখতে হলে বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের কোনো ভুলে, বিশেষ করে খাওয়ার কোনো ভুলের কারণে যেন ডায়রিয়া না হয়। ডায়রিয়া প্রতিরোধে কী করবেন? ডায়রিয়া হলেই-বা কী করবেন? এ নিয়েই জিরোক্যাল নিবেদিত প্রথম আলো অনলাইনের আয়োজন ‘সুস্থ থাকুন রমজানেও’ অনুষ্ঠানে আলোচনা করেছেন এভারকেয়ার হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী।

রোজায় ডায়রিয়া হলে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে। বিশেষ করে ডায়রিয়া চলাকালে শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়াম কমে বা বেড়ে গিয়ে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এই সময় সাধারণত তরল ও লিকুইড খাবার খেতে হবে। সহজেই হজম হয়, এমন খাবার খাওয়া উচিত। জাউভাত, কাঁচকলা, নরম মাছ, মুরগির মাংস, আলুর তরকারিসহ কম তেল ও কম মসলায় রান্না করা খাবার ডায়রিয়ার পথ্য হিসেবে ভালো কাজ করে। ডায়রিয়া চলাকালে দুর্বল হওয়া যাবে না। তাই প্রোটিনের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশ, মাছ বা মুরগির স্যুপ এবং মাছের তরকারির ঝোলও প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শরীরের ফ্লুইডের চাহিদা পূরণ করে।
ইফতারে একবারে অনেক খাবেন না
রোজায় ডায়রিয়া যাতে না হয়, সে জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ইফতারের সময় একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়া উচিত নয়। মনে রাখবেন, খাবার ভালোভাবে ঢেকে না রাখলে বা সঠিকভাবে হজম না হলেও ডায়রিয়া হতে পারে। সুতরাং পরিমিত খাবার গ্রহণ আপনাকে সুস্থ রাখবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
তরলজাতীয় খাবার বাইরে থেকে কিনে খাবেন না
কোনো প্রকার তরলজাতীয় খাবার বাইরে থেকে কিনে খাবেন না। পানিবাহিত জীবাণু ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ। তাই এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে শুধু বাজারের কেনা শরবত বা জুসই নয়, সস, কেচাপ, চাটনি ইত্যাদি খেলেও ডায়রিয়া হতে পারে। বাজার থেকে কেনা খাবারে যদি মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকে বা খাবারে মাছি বসে, সেই খাবারগুলোও কিন্তু ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। তাই রোজায় চেষ্টা করবেন বাইরের কেনা খাবারগুলো এড়িয়ে যেতে।
বিশুদ্ধ পানির বিকল্প নেই
ডায়রিয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পানিশূন্যতা। ডি-হাইড্রেশন হলেই অনেক ধরনের জটিলতা হতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় তরলজাতীয় খাবার বা পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। বিশুদ্ধ পানি পান এ সময় খুব জরুরি। ফুটিয়ে পানি খাওয়াই ভালো। তা ছাড়া ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত অবশ্যই চিনিছাড়া ফল বা ফলের জুস খাবেন। তরলজাতীয় খাবার, যেমন তরল সাগুদানা, চিড়া ভিজিয়ে নরম করে খেলে বা জাউভাত খেলে ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার করা সম্ভব। ডায়রিয়া শুধু প্রতিকার নয়, প্রতিরোধেও আমাদের সচেতন হতে হবে। অবশ্যই চেষ্টা করবেন একই তেলে বারবার ভাজা খাবার না খেতে।
এসব বিষয় মেনে চলতে পারলে এই গরমেও রোজা রাখতে পারবেন সুস্থভাবে।