শীতে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলি পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে এসব সবজির সব রকম পদ সবার জন্য উপযোগী নয়। এ সম্পর্কে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন রাফিয়া আলম।
এখন বছরজুড়ে সংরক্ষিত শীতের সবজি পাওয়া গেলেও পুষ্টি উপাদানগুলো ঠিকঠাক পেতে শীত মৌসুমেই টাটকা সবজি খাওয়া উচিত। এসব সবজি অনেকভাবেই খাওয়া যায়। নির্দিষ্ট কোনো সবজি খাওয়ার কারণে আপনার সমস্যা হতে পারে কি না, সেটার জন্য সবজিটা আপনি কীভাবে খাচ্ছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ।
ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং ব্রকলিতে আঁশের পরিমাণ বেশি। এসব এমন ধরনের সবজি, যা হজম হতে একটু সময় লাগে। কারও কারও এসব সবজির মধ্যে কোনোটিতে অ্যাসিডিটি বা বুক জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
তবে কী পরিমাণে খাওয়া হচ্ছে সেটিও লক্ষ রাখতে হবে। কারণ, এ ধরনের সবজি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হলে যে কেউই হজমের সমস্যায় ভুগতে পারেন।
এ ধরনের সবজি বেশি পরিমাণ তেল দিয়ে ভাজি করে কিংবা ডুবোতেলে ভেজে পাকোড়া করে খাওয়া হলে পেটের এসব সমস্যার ঝুঁকি বাড়বে। কাঁচা সালাদ হিসেবে খেলেও এমন সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
পরোটার মতো তেলেভাজা খাবারের সঙ্গে এসব সবজি খাওয়া হলেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। আবার অনেক রকম সবজির সঙ্গে মিশিয়ে রান্না করলেও হজমের সমস্যা হতে পারে।
ভালোভাবে নিয়ম মেনে কোনো সবজি খাওয়ার পরও যদি পেটের সমস্যায় ভোগেন, সে ক্ষেত্রে সেটি এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অতিরিক্ত বেশি থাকলে, কিডনিতে পাথরজনিত সমস্যা হয়ে থাকলে, দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে কিছু ক্ষেত্রে ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং ব্রকলি খাওয়া উচিত নয়।
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে, আয়োডিনের ঘাটতি থাকলে ফুলকপি, বাঁধাকপি কিংবা ব্রকলি খাওয়া যাবে না এমনটা কিন্তু নয়। ভালোভাবে সেদ্ধ করে রান্না করা হলে এসব ক্ষেত্রেও তেমন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে এসব সবজি থাইরয়েডের রোগীদের সীমিত পরিমাণে খেতে হবে।
ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং ব্রকলি ছোট করে টুকরা করে রান্না করুন। এসব সবজি রান্নার সময় ভালোভাবে সেদ্ধ করতে হবে।
সবজি রান্নার সময় মসলার ব্যবহার রাখুন পরিমিত। ভাজি করতে চাইলে অল্প তেল ব্যবহার করুন।
খাওয়ার সময়ও হাত দিয়ে একটু চটকে নেওয়া ভালো। ভাত কিংবা রুটির সঙ্গে খেতে পারেন এসব সবজি।
পোলাও বা ফ্রায়েড রাইসের সঙ্গে খেতে চাইলে এসব পদেও তেলের পরিমাণ কম রাখুন। শীতের সময় এ ধরনের সবজি স্যুপ হিসেবে খাওয়াটা দারুণ স্বস্তিদায়ক।