কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে শিশুরা মলদ্বারের বিভিন্ন রোগে ভুগে থাকে
কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে শিশুরা মলদ্বারের বিভিন্ন রোগে ভুগে থাকে

ভালো থাকুন

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শিশু যেসব রোগে ভুগতে পারে

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য একটি পরিচিত সমস্যা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস, মুঠোফোনসহ অন্যান্য ডিভাইসের প্রতি আসক্তির কারণে জীবনযাপন চলাচলহীন হয়ে পড়ে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এ কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে শিশুরা মলদ্বারের বিভিন্ন রোগে ভুগে থাকে। শিশুর মলদ্বারে বা পায়ুপথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

 

ফিসার

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পায়ুপথের সামনে বা পেছনে ফেটে ক্ষত তৈরি হলে তাকে ফিসার বলে। বাংলায় বলে ভগন্দর। এ সমস্যায় তীব্র বা মাঝারি ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয়। মলত্যাগের সময় সামান্য রক্ত যায়। পায়ুপথ সরু ও লালচে হয়ে আসে।

পাইলস

বড় শিশুদের যেমন বয়ঃসন্ধিকালে বেশি হতে পারে এ রোগ, যার ইংরেজি নাম হেমোরয়েড। বাংলায় অর্শ। পাইলস ক্রমান্বয়ে আকারে বৃদ্ধি পেয়ে নিচে নেমে আসে। পায়ুপথকে ঘড়ির সঙ্গে তুলনা করলে ৩টা, ৭টা ও ১১টার কাঁটার জায়গায় তিনটি রক্তের শিরা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে চাপ খেয়ে ফুলে ক্রমে নিচের দিকে নামতে থাকে। এর পাঁচটি পর্যায় আছে। পাইলস ব্যথাহীন হলেও প্রচুর রক্তপাত হতে পারে। শিশুদের এমন রোগ হয় না বললেই চলে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে শিশুরা মলদ্বারে বা পায়ুপথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

ফোড়া বা অ্যাবসেস

পায়ুপথের ভেতরে ও বাইরে ছোট-বড় নানা ধরনের ফোড়া হতে পারে। শিশুদের অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতার কারণে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া এর অন্যতম কারণ। অস্ত্রোপচার না করলে এ সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের পরে ফিস্টুলা হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।

ফিস্টুলা

ফিস্টুলা হলো একটি ঘা, যার একটি মুখ পায়ুপথের বাইরে, অপরটি ভেতরে থাকে। ফোড়ার জটিলতার কারণে এটি হয়।

 

প্রোলাপস

পায়ুপথ দিয়ে অনেক সময় বৃহদন্ত্রের কোনো অংশ আংশিক বা পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারে। একে প্রোলাপস বলে।

 

হেমাটোমা

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পায়ুপথের রক্তনালি ফেটে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। কখনো কখনো প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।

পলিপ

শিশুদের বারবার পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত যাওয়া এবং ওষুধেও নিরাময় না হওয়া এর লক্ষণ। এর চিকিৎসা অস্ত্রোপচার।

করণীয়

শিশুদের মলদ্বারে কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোনো চিকিৎসা নেবেন না, এতে জটিলতা আরও বাড়তে পারে।

মলদ্বারের সমস্যা এড়াতে শিশুকে ছোটবেলা থেকেই প্রচুর তাজা শাকসবজি, আঁশযুক্ত ফল খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। খেলাধুলা করতে হবে ও কায়িক শ্রম করতে হবে, সারা দিন বসে থাকা চলবে না। কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি হলে থাইরয়েড পরীক্ষা করা যেতে পারে।

  • ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শিশু সার্জারি বিশেষজ্ঞ কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল