
পেটব্যথা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তবে পেটের ওপরের অংশের ব্যথা, যেখানে অনেক সময় হজমের সমস্যা বোঝায়, সেখানে তলপেটের ব্যথা প্রায়ই ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গের সমস্যার ইঙ্গিত। যেমন এটি হতে পারে সাধারণ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু করে ফেটে যাওয়া অ্যাপেন্ডিসাইটিসের মতো মারাত্মক জরুরি অবস্থা, বিশেষ করে নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে এর কারণ ভিন্ন হতে পারে। তলপেটের ব্যথার মূল কারণগুলো জেনে রাখা তাই অত্যন্ত জরুরি।
তলপেটে ব্যথার প্রধান কারণ—
কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস: এটি তলপেটে ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ। মল দীর্ঘ সময় অন্ত্রে জমে থাকলে বা অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হলে এই ব্যথা হয়।
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস): হজমের এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় তলপেটে ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়।
অ্যাপেন্ডিসাইটিস: তলপেটের ডান দিকে হঠাৎ তীব্র ব্যথা শুরু হলে তা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ হতে পারে। এই অবস্থায় পেট শক্ত হয়ে যাওয়া, বমিভাব ও জ্বরও থাকতে পারে। এটি একটি জরুরি অবস্থা।
মূত্রনালির সংক্রমণ (ইউটিআই): তলপেটে চাপ, ঘন ঘন প্রস্রাব এবং প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়ার সঙ্গে ব্যথা হলে তা ইউটিআই হতে পারে।
কিডনিতে পাথর: ছোট পাথর যখন মূত্রনালি দিয়ে নামে, তখন কোমরের নিচ থেকে তলপেট পর্যন্ত তীব্র ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
নারীদের তলপেটে ব্যথার জন্য কিছু নির্দিষ্ট কারণ থাকে, যা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
মাসিকের ব্যথা (মেনস্ট্রুয়াল ক্র্যাম্প): মাসিকের সময় জরায়ুর সংকোচনের কারণে এ ধরনের ব্যথা হতে পারে।
ডিম্বাশয়ের সিস্ট (ওভারিয়ান সিস্ট): ডিম্বাশয়ে সিস্ট হলে তলপেটে ব্যথা হতে পারে, বিশেষত সিস্ট ফেটে গেলে বা পেঁচিয়ে গেলে তীব্র ব্যথা হয়।
এন্ডোমেট্রিওসিস: জরায়ুর ভেতরের টিস্যু জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পেলে মাসিকের সময় প্রচণ্ড ব্যথা হয়।
এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি: জরায়ুর বাইরে ভ্রূণ স্থাপিত হলে তলপেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে। এই জটিল পরিস্থিতি জীবনহানিকর হতে পারে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষে আঘাত, স্পার্মাটিক কর্ড পেঁচিয়ে যাওয়া কিংবা সংক্রমণ থেকেও ব্যথা তলপেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তলপেটে ব্যথা যদি তীব্র হয়।
যদি ব্যথা হঠাৎ শুরু হয়।
যদি এর সঙ্গে জ্বর, বমি, রক্তাক্ত মল বা প্রস্রাব, অথবা জ্ঞান হারানোর মতো লক্ষণ দেখা যায়।
এসব লক্ষণ থাকলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।