টাইফয়েড টিকা নিচ্ছে এক শিশু। গৌরীপুর, দাউদকান্দি, কুমিল্লা, ২৩ অক্টোবর
টাইফয়েড টিকা নিচ্ছে এক শিশু। গৌরীপুর, দাউদকান্দি, কুমিল্লা, ২৩ অক্টোবর

শিশুদের টাইফয়েড টিকার স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কি? 

সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া শিশুদের শরীরে প্রবেশ করে টাইফয়েড নামের তীব্র জ্বর সৃষ্টি করে।

দেশে প্রথমবারের মতো শিশুদের বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে টাইফয়েডের টিকা। এর আগে পাকিস্তান ও নেপালে শিশুদের এই টিকা দেওয়া হয়। নেপালে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে ২০ হাজার শিশুর মধ্যে একটি গবেষণা চালায় বিশ্বখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ

২০২১ সালে প্রকাশিত এই গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, টিকাটি প্রথম বছরে ৮১ শতাংশ এবং দ্বিতীয় বছরে ৭৯ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ‘টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন’ (টিসিভি) নামের এই টিকা ৯ মাস বয়সী শিশু থেকে শুরু করে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত সবার জন্য নিরাপদ। টিকা দেওয়ার পর সামান্য জ্বর বা ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা ছাড়া বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা যায়নি।

গবেষণায় দেখা গেছে, টাইফয়েড টিকা (টিসিভি) বাংলাদেশের শিশুদের জন্য ৮৫ শতাংশের বেশি সুরক্ষা দিতে পারে।

টাইফয়েড যা সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া শিশুদের শরীরে প্রবেশ করে এবং সংক্রমণের মাধ্যমে টাইফয়েড নামের তীব্র জ্বর সৃষ্টি করে। এটি সালমোনেলা প্যারাটাইফির কারণেও হতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

টাইফয়েডের সংক্রমণ শরীরের রক্ত সংবহন তন্ত্র এবং ভেতরের অঙ্গগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে; যা ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক বা অন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা যায়, তাহলে টাইফয়েড জটিলতা তৈরি করতে পারে। এতে মৃত্যুঝুঁকিও আছে।

টাইফয়েড জ্বর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একটি বিরাট জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বন্যার সময় এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। প্রচণ্ড পেটব্যথা, তীব্র জ্বর যেখানে তাপমাত্রা ১০৩-১০৪ ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে, মাথাব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য, চামড়ায় লালচে দানা দেখা দেওয়া, দুর্বলতা, প্রচণ্ড কাশি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো শুরু টাইফয়েডের টিকা মাসব্যাপী চলেছে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। দেশে টাইফয়েডের টিকার এটাই প্রথম ক্যাম্পেইন।

ডা. আয়শা আক্তার, উপপরিচালক, ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল, শ্যামলী, ঢাকা