হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন মানেই প্রাণের অস্তিত্ব। মিনিটে ৬০-১০০ বার স্পন্দিত হয় হৃৎপিণ্ড। এমনিতে হৃৎপিণ্ডের ধুকপুক আওয়াজ হয়তো আমরা সেভাবে টের পাই না। হৃৎস্পন্দন জোরালোভাবে অনুভব করা স্বাভাবিকও নয়। এ বিষয়ে কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, জেনে নিন।
অধিকাংশ সময়ই আলাদাভাবে এই স্পন্দন আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে না। তবে কখনো কখনো আপনি এই স্পন্দন অনুভব করতে পারেন। কখনো মনে হতে পারে হৃৎপিণ্ড খুব দ্রুত চলছে, কখনো মনে হতে পারে হৃৎপিণ্ডের গতি ধীর হয়ে এল। কেউ কেউ আবার বুঝতে পারেন, হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিক ছন্দে চলছে না; বরং ছন্দটা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।
ভয়, দুশ্চিন্তা, উত্তেজনা বা মানসিক চাপের মুহূর্তে আপনার মনে হতে পারে—হৃৎপিণ্ডটা বুঝি দ্রুত দৌড়াচ্ছে। চা, কফি, চকলেট, তামাক গ্রহণ করলেও এ রকম মনে হতে পারে। কিছু ওষুধের প্রভাবেও এমনটা হয়। জ্বর হলে বা ব্যায়াম করার পর বাড়ে হৃৎপিণ্ডের গতি।
হরমোনের তারতম্য হলেও হৃৎপিণ্ডের গতি হেরফের হয়। তবে হৃৎপিণ্ডের নিজস্ব কিছু সমস্যায় এই গতি বা ছন্দ এলোমেলো হয়ে পড়তে পারে।
কালেভদ্রে হৃৎপিণ্ডের গতি বা ছন্দের তারতম্য হলে তা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। তবে যদি প্রায়ই এমন হয় কিংবা দিনে দিনে সমস্যা বাড়তে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিংবা যদি গতি বা ছন্দের তারতম্যের সঙ্গে আরও কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
এমন কিছু উপসর্গ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক—
হঠাৎ জ্ঞান হারানো বা চোখে অন্ধকার দেখা।
অতিরিক্ত মাথা ঘোরা।
বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি।
শ্বাসকষ্ট।
যদি নির্দিষ্ট কোনো রোগের কারণে সমস্যাটি হয়ে থাকে আর আপনি চিকিৎসা না করান, তাহলে রোগটি জটিল হয়ে পড়তে পারে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে।
হৃৎপিণ্ডের নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার কারণে একসময় হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। এমনকি মারাত্মক পরিস্থিতিতে হৃৎপিণ্ড হঠাৎ থেমে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। এ ঘটনাকে বলা হয় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট।
হৃৎপিণ্ডের এক বিশেষ ধরনের সমস্যার নাম অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন। এ সমস্যা থাকলেও একজন ব্যক্তি হৃৎপিণ্ডের গতি বা ছন্দের তারতম্য অনুভব করতে পারেন। কারও যদি এ সমস্যা থেকে থাকে এবং তিনি এর চিকিৎসা না নেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে স্ট্রোকের ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়।
সূত্র: ওয়েবএমডি