
নখের সৌন্দর্য আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আর তাই আমরা নেইল পলিশ ও নেইল আর্ট দিয়ে নখ সাজাই। কিন্তু জানেন কি, এই নখ শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি আপনার স্বাস্থ্যেরও একটি প্রতিফলন? নখের আকৃতি বা রঙের পরিবর্তন প্রায়ই শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
নখের রং পরিবর্তনের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। এটি নখের নিজস্ব সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন নখে আঘাত লাগা, ত্বকের কোনো অসুখ বা শরীরের অন্য কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণও হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর নখ দেখতে কেমন
আমাদের নখ কেরাটিন নামের একধরনের প্রোটিন দিয়ে গঠিত। একটি সুস্থ নখ সাধারণত মসৃণ, হালকা গোলাপি রঙের হয় আর সামনের অংশটা হয় সাদা। যদি নখের স্বাভাবিক রঙে কোনো পরিবর্তন আসে, তাহলে তা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
হলুদ নখ
১. ইয়েলো নেইল সিনড্রোম নামের একটি বিরল রোগে নখ হলুদ হয়ে যেতে পারে।
২. প্লুরাল ইফিউশন (ফুসফুসে পানি জমা) বা ব্রঙ্কাইটিসের মতো ফুসফুস রোগে নখ হলুদ হয়ে যায়।
নীল নখ
১. শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে (সায়ানোসিস) গেলে নখ নীল হয়ে যায়।
২. শিশুদের হার্টে ছিদ্র থাকলে নখ নীল হতে পারে।
৩. কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের (যেমন মিনোসাইক্লিন, হাইড্রোক্সিইউরিয়া) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও নখ নীল হতে পারে।
৪. অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগলেও অস্থায়ীভাবে নখ নীল হতে পারে।
লাল নখ
১. কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ার কারণে নখ লাল হতে পারে।
২. পলিসাইথেমিয়া নামের একটি রোগে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে নখ লাল দেখায়।
অবশ্য কিছু মানুষের নখের রং স্বাভাবিকভাবেই একটু লালচে।
বাদামি নখ
দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের একটি লক্ষণ হিসেবে নখ বাদামি হতে পারে।
আংশিক গোলাপি ও বাদামি নখ
নখের গোড়ার দিকটা গোলাপি হলেও সামনের অংশ যদি বাদামি হয়, তাকে টেরিস নেইল বলা হয়। কিডনি রোগ, লিভার সিরোসিস, হার্ট ফেইলিওর এবং থাইরয়েডের সমস্যায় এটি দেখা যায়।
কালো নখ
১. আঘাত পেলে বা থেঁতলে গেলে নখ কালো হতে পারে।
২. এ ছাড়া মেলানোমা নামের একধরনের ত্বকের ক্যানসারের কারণেও নখ কালো হতে পারে।
সাদা নখ
ভিটামিন বা খনিজ উপাদানের (যেমন জিংক বা আয়রন) অভাব হলে নখ সাদা হতে পারে। এটি রক্তশূন্যতারও একটি লক্ষণ।
সবুজ নখ
নির্দিষ্ট কিছু ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণের কারণে নখ সবুজ হয়ে যেতে পারে।
যদি আপনার নখের রং হঠাৎ করে বা অপ্রত্যাশিতভাবে পরিবর্তিত হয়, তাহলে এটি কোনো গুরুতর রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। তাই এমন পরিবর্তন দেখলে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক কারণ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারবেন।