নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম ও চাপমুক্ত জীবনযাপন হৃদযন্ত্রের সুস্থতার চাবিকাঠি
নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম ও চাপমুক্ত জীবনযাপন হৃদযন্ত্রের সুস্থতার চাবিকাঠি

লাল মাংস বা চর্বিজাতীয় খাবার না খেলেও যে পাঁচ অভ্যাসে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি

ঘি, মাখন, চর্বি বা লাল মাংস যদি আপনি না-ও খান, তবু পড়তে পারেন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে। সুস্থ থাকতে চাইলে রোজকার খাদ্যতালিকায় কী রাখছেন, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় এমন পাঁচ অভ্যাসের কথা জেনে নেওয়া যাক।

মিষ্টি খাবার ও মিষ্টি পানীয় খাওয়া

নানা ধরনের মিষ্টি খাবার ও মিষ্টি পানীয় হরহামেশাই খাই আমরা। কেক, পেস্ট্রি, বিস্কুট, কুকি, আইসক্রিম, ডোনাট, সোডা বা কোমল পানীয়, জুস, শরবত—এমন বহু খাবার বা পানীয়ের মাধ্যমে আপনি প্রায়ই বাড়তি চিনি গ্রহণ করতে পারেন। এসব খাবার খেলে হুট করে বাড়ে রক্তের শর্করা।

রক্তের এই শর্করা চর্বি হিসেবে আবার দ্রুত জমা হয় দেহে। তাতেই বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি। তাই এড়িয়ে চলুন এসব খাবার ও পানীয়। মনে রাখবেন, গুড়, মধু, কৃত্রিম চিনি কোনোটিকেই কিন্তু চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প ভেবে নেওয়া যাবে না।

পরিশোধিত খাবার খাওয়া

সাদা চাল, ময়দা, সাদা আটা ইত্যাদি হলো রিফাইনড বা পরিশোধিত খাবার। সাদা পাউরুটি, নুডলস, পাস্তা, পিৎজা, ডো সবই তৈরি হয় পরিশোধিত শস্যদানা থেকে।

পরিশোধিত খাবার খেলে হুট করে বাড়ে রক্তের শর্করা, বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি। সুস্থ থাকতে হোল গ্রেইন অর্থাৎ গোটা শস্যদানা, যেমন লাল চাল, লাল আটা, ওটস, কিনোয়া, বার্লি প্রভৃতি দিয়ে তৈরি খাবার বেছে নিতে পারেন।

খাবারে লুকিয়ে থাকা লবণ খেয়াল না করা

সুস্থ থাকতে পাতে বাড়তি লবণ নেওয়ার অভ্যাস বাদ দেওয়া জরুরি। একইভাবে খাবারে লুকিয়ে থাকা লবণের দিকেও খেয়াল রাখা আবশ্যক। চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পনির, চানাচুর, নোনতা বিস্কুট, শর্ষে, কাসুন্দি, মেয়োনেজ, সস, কেচাপ ও সয়া সসের মতো খাবারে থাকে বাড়তি লবণ।

এ ছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন সসেজ, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, টিনজাত খাবার বা শুঁটকিতেও থাকে লুকানো লবণ। এই বাড়তি লবণের কারণে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়, বাড়ে হৃদরোগের আশঙ্কা।

সুস্থ থাকতে এ ধরনের খাবার বা খাদ্য উপকরণ এড়িয়ে চলুন। ধরুন, আপনি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক হিসেবে পেয়ারা খাচ্ছেন, তবে তা মাখাচ্ছেন লবণ কিংবা কাসুন্দি দিয়ে।

লবণ বা কাসুন্দির কারণে আপনার স্ন্যাকটা কিন্তু আর স্বাস্থ্যকর থাকবে না। বাদাম বেছে নিলেও খেয়াল রাখবেন, তা যেন সল্টেড না হয়।

দেহ ও মনের যত্ন না নেওয়া

সুস্থ অবস্থায় দেহ ও মনের প্রতি আমরা অনেকেই উদাসীন থাকি। কিন্তু নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম ও চাপমুক্ত জীবনযাপন হৃদযন্ত্রের সুস্থতার চাবিকাঠি। একটানা লম্বা সময় বসে কাজ করেন, এমন ব্যক্তির হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি।

ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোও মনের যত্নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। জীবনসঙ্গী, সন্তান, মা-বাবা, বন্ধুদের সময় দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমন অনেকেই আছেন, যিনি জীবনে সব পেয়েছেন, কিন্তু কাছের মানুষদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় একাকিত্বে ভোগেন।

মানসিক চাপ বাড়ায় বলে একাকিত্ব হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ায়। কাছের মানুষ তো বটেই, পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময়যাপনও একাকিত্ব থেকে মুক্তি দিতে পারে।

ধূমপান ও মদ্যপান

ধূমপানের কারণে রক্তনালির স্বাভাবিক নমনীয়তা নষ্ট হয়। ফলে বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি। ই-সিগারেট বা ভেপে অভ্যস্ত হলেও আপনি পড়বেন হৃদরোগের ঝুঁকিতে। সুস্থ থাকতে তাই ধূমপানের অভ্যাস পরিত্যাগের বিকল্প নেই। মদ্যপানেও বাড়ে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি, ফলে বেড়ে যায় হৃদরোগের আশঙ্কা।

সূত্র: ওয়েবএমডি