অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনিই আপনার ভাগ্যনিয়ন্ত্রক। গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব জীবনে ভূমিকা রাখলেও আপনার সিদ্ধান্ত ও কর্মই চূড়ান্ত পরিণতি নির্ধারণ করে। সাহস, ধৈর্য ও সঠিক মানসিকতা আপনাকে যেকোনো পরিস্থিতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। প্রতি শনিবার ‘এ সপ্তাহের রাশিফল’ লিখছেন জ্যোতিষী চিন্ময় বড়ুয়া
এ সপ্তাহের রাশিফল (৬ ডিসেম্বর–১২ ডিসেম্বর ২০২৫)
সপ্তাহটি আপনার মনে প্রচণ্ড রকমের অস্থিরতা তৈরি করবে। চারপাশের পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলাতে থাকায় আপনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কিছু বলতে গেলেও পরক্ষণেই অনুভব করতে পারেন, আপনার মন্তব্য ঠিকভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে না। অন্যের মন্তব্য বা আচরণে সংবেদনশীলতা বাড়বে, ফলে ছোট কথাবার্তাও মানসিক অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
বাইরে যাতায়াত বা ছোট ভ্রমণের সুযোগ থাকলেও তাতে লাভের তুলনায় ক্লান্তি বেশি হবে। বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী বা সহকর্মীদের সঙ্গে কথোপকথনে ঠোকাঠুকি হওয়ার আশঙ্কা বেশি, এমনকি আপনি ব্যাখ্যা করলেও ভুল অর্থ ধরা পড়তে পারে।
কাজের ক্ষেত্রে নতুন কিছু পরিকল্পনা মাথায় এলেও বাস্তব পরিস্থিতি সব সময় সেটির সহায়ক হবে না। কখনো অনুমতি না পাওয়া, কখনো সময়ের অভাব, আবার কখনো মনের অস্থিরতা কাজ থামিয়ে দিতে পারে।
পরিবারে কোনো সদস্যের কথায় বিরক্ত লাগতে পারে, কিন্তু ধৈর্য বজায় রাখতে পারলে পরিস্থিতি আপনার অনুকূলে থাকবে। সপ্তাহের শেষে মানসিক স্বচ্ছতা বাড়বে এবং আপনি বুঝতে পারবেন, কোন কাজটিতে কোথায় ছাড় দেওয়া উচিত এবং কোথায় নিজের বক্তব্য শক্তভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
আপনার জন্য এই সপ্তাহটি অর্থনৈতিক ও মানসিক—উভয় দিক থেকেই পরীক্ষার মতো মনে হতে পারে। হঠাৎ বাড়তে পারে দৈনন্দিন জীবনে অর্থ ব্যয়। এমন কিছু খরচও সামনে আসবে, যার কথা ভাবেননি।
একই সঙ্গে পরিবারে কথাবার্তার পরিবেশ একটু টানটান থাকতে পারে। আপনার বলা সামান্য বাক্যও ভুলভাবে নেওয়া হতে পারে, বিশেষত ঘনিষ্ঠ কারও ক্ষেত্রে।
নিজের ভেতরে একটি ভেঙেচুরে যাওয়া অনুভূতি কাজ করতে পারে, যা সিদ্ধান্ত নিতে বাধা সৃষ্টি করবে। তবু কর্মক্ষেত্রে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে হতে পারে এবং মনোযোগ দিলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।
নিজের প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ এলেও দ্বিধার কারণে আপনি পিছিয়ে যেতে পারেন। সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে কিছু পুরোনো সমস্যা আবার সামনে এসে পড়বে, কিন্তু এবার আগের মতো ভেঙে না পড়ে আপনি স্থিরভাবে তা সামলাতে পারবেন।
কোনো পুরোনো পরিচিত ব্যক্তি বা বন্ধুর কাছ থেকে কার্যকর উপকার পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সপ্তাহের শেষভাগে আর্থিক দিকের মতোই মানসিক দিকেও স্থিতি কিছুটা ফিরে আসবে।
সপ্তাহটি যেন মানসিক রোলার কোস্টারের মতো চলবে। একদিকে অনেক চিন্তা, পরিকল্পনা, নতুন ভাবনার স্রোত; অন্যদিকে সেই শক্তিকে ধরে রাখতে না পারার হতাশা। নিজের কথায় আপনি নিজেই বারবার সংশোধন করবেন; ফলে কেউ কেউ ভাববে, আপনি নিজের সিদ্ধান্তে দৃঢ় নন।
আচমকা আবেগপ্রবণতা বাড়বে এবং কখনো অকারণে উত্তেজিত লাগতে পারে। ব্যক্তিগত সম্পর্কে একদিকে গভীর সংযোগের ইচ্ছা থাকবে, আবার কিছুক্ষণ পরই দূরত্ব তৈরি করতে মন চাইবে।
কাজের ক্ষেত্রে কোনো নতুন দিক থেকে শুরু করতে চাইবেন, কিন্তু বাহ্যিক পরিস্থিতি বা নিজের অস্থিরতা আপনাকে ততটা এগোতে দেবে না। পড়াশোনা, লেখালেখি বা সৃজনশীল কাজে মন লাগলেও মনোযোগ বেশিক্ষণ স্থির থাকবে না।
ভ্রমণের সুযোগ এলে খানিকটা সতেজতা পাবেন, তবে সে ভ্রমণ খুব আরামদায়ক না–ও হতে পারে। সপ্তাহের শেষে মানসিক জট খুলতে শুরু করবে এবং নিজের অনুভূতি নতুনভাবে বুঝতে পারবেন।
এই সপ্তাহে আপনার আবেগ খুব শক্তভাবে সক্রিয় থাকবে। কোনো কাজ করতে গিয়ে বারবার অতীতের কোনো স্মৃতি মনে পড়বে, আর তাতেই মন ভারী হবে। নিজের চারপাশের মানুষদের থেকেও যেন আপনি কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছেন; যদিও বাস্তবে তাঁরা আপনাকে সাহায্য করতেই চাইছেন।
ঘরের পরিবেশ আপনার দিকে থাকলেও আপনি প্রত্যাশা করবেন আরও বেশি শান্তি, আরও বেশি নিশ্চিন্ত মন। কাজের দায়িত্ব বাড়বে, ফলে শরীরেও ক্লান্তি আসতে পারে। দৈনন্দিন রুটিনে বিশৃঙ্খলা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে। ঘুমের জন্য সময় বের করা কঠিন হবে।
কোনো গোপন বা অব্যক্ত দুশ্চিন্তা বারবার মাথাচাড়া দিতে পারে, যা আপনাকে নিজের প্রতি সন্দিহান করে তুলবে। তবে ভালো দিক হলো আপনি যেই আধ্যাত্মিক বা মানসিক শক্তির ওপর নির্ভর করেন, তা এই সপ্তাহে আপনাকে বিশেষভাবে সাহায্য করবে।
গান, পড়াশোনা, ধ্যান বা নিঃশব্দে বসে থাকাও আপনার মনকে শান্তির দিকে নিয়ে যাবে। সপ্তাহ শেষে ধীরে ধীরে ভার কমবে।
এই সপ্তাহে আপনার সামাজিক দুনিয়া ও প্রত্যাশাগুলো বেশ দোলাচলে থাকবে। যাঁদের থেকে আপনি সমর্থন বা সহানুভূতির আশা করেন, তাঁরা অদ্ভুতভাবে ব্যস্ত বা উদাসীন হয়ে পড়তে পারে। ফলে আপনার মধ্যে সামান্য ক্ষোভ জন্ম নিতে পারে।
নতুন কিছু পরিকল্পনা বা স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা আসতে পারে। তাতে আপনার কাজ পুরোপুরি থেমে যাবে না, বিলম্বিত হতে পারে। আপনার আশপাশের মানুষের আচরণ কখনো আপনাকে উৎসাহ দেবে, আবার হঠাৎ এমনভাবে কথা বলবে যে মনে হবে তাঁরা আপনাকে বুঝতে পারছেন না।
আর্থিক বিষয়ে বাড়তি কিছু লাভের সুযোগ মিললেও একই সময়ে কিছু বাড়তি ব্যয় এসে পড়বে। নিজের ক্ষমতা ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করতে গেলে কেউ হয়তো তা ভুলভাবে নেবে, ফলে নিজেকে একটু ধরে রাখা ভালো। সপ্তাহের শেষ দিকে কোনো নতুন পরিচয় বা সুযোগ থেকে আপনি আরও আত্মবিশ্বাস পাবেন এবং ভরসা ফিরে আসবে।
এই সপ্তাহে কাজ, দায়িত্ব ও ব্যক্তিগত শৃঙ্খলার ওপর চাপ অনেক বাড়বে। আপনি চেষ্টা করলেও কাজের ফল যেন আপনার মতো করে প্রকাশ পাবে না। এতে হতাশা তৈরি হতে পারে।
কর্মক্ষেত্রে যাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয়, তাঁদের মধ্যেই কেউ আপনার কথা ভুল বুঝে বিরূপ আচরণ করতে পারে। বারবার মনে হবে, আপনিই সব সামলাচ্ছেন, কিন্তু তা কেউ ঠিকমতো বুঝছে না।
বাড়িতেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পাওয়া কঠিন হয়ে উঠবে। ফলে আপনার মন ছুটে বেড়াবে কিন্তু শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়বে। কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে এ সময় সতর্ক থাকা জরুরি; কারণ, তাড়াহুড়া করলে ভুল হতে পারে। সপ্তাহের মাঝামাঝি আপনার ভেতরের দৃঢ়তা বাড়বে এবং মন স্থির হতে শুরু করবে। সপ্তাহের শেষে মোটের ওপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করবে।
এই সপ্তাহে আপনার ভাবনা, বিশ্বাস, উচ্চাকাঙ্ক্ষা—সবই একসঙ্গে দোলাচলে পড়বে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে গিয়ে বারবার সন্দেহ তৈরি হবে—এটা ঠিক পথে এগোচ্ছে তো?
দীর্ঘ ভ্রমণ বা নতুন কিছু শেখার ইচ্ছে থাকলেও তা বারবার পিছিয়ে যেতে পারে। কথোপকথনে আপনি সুকৌশলে কিছু বলতে গেলেও অন্যরা আপনার কথার ভিন্ন অর্থ করতে পারে। নিজের মতামত শক্তভাবে ধরে রাখতে গেলেও মনে হতে পারে, আপনি কাউকে কষ্ট দিচ্ছেন। এই দোলাচলের মধ্যেও কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ, শিক্ষকতুল্য বা অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ বিশেষভাবে কাজে লাগবে।
সপ্তাহের শেষ ভাগে কোনো পুরোনো পরিকল্পনা বা অসমাপ্ত উদ্যোগ আবার নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পেতে পারে, যা ভবিষ্যতে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
এই সপ্তাহে আপনার ভেতরে গভীর আবেগ ও অচেনা অস্থিরতা একসঙ্গে কাজ করবে। কখনো মনে হবে, সব ঠিকঠাক এগোচ্ছে; আবার আচমকা কোনো চিন্তা বা ঘটনা আপনাকে চমকে দেবে।
অর্থনৈতিক দিকেও হঠাৎ ওঠানামা হতে পারে। জায়গামতো লাভও হবে, আবার কোথাও অপ্রত্যাশিত চাপও তৈরি হতে পারে।
ঘনিষ্ঠ সম্পর্কগুলোয় বেশ সংবেদনশীলতা দেখা দেবে; ছোট কথাই বড় আকার ধারণ করতে পারে। অতীতের কোনো স্মৃতি বা ঘটনা আবার সামনে এসে আপনাকে মানসিকভাবে অস্থির করে তুলতে পারে।
কাজের ক্ষেত্রে ধৈর্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এ সময় তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। সপ্তাহের মাঝামাঝি আপনি নিজের ভেতরের দৃঢ়তা ফিরে পেতে শুরু করবেন এবং আবেগ ধীরে ধীরে থিতিয়ে আসবে।
এই সপ্তাহে সম্পর্ক, আলোচনার কাজ এবং মানসিক সমঝোতার ওপর বিশেষ পরীক্ষা চলবে। ঘনিষ্ঠ বা ব্যবসায়িক কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভুল–বোঝাবুঝি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কেউ আপনার কথায় আহত হতে পারে অথবা আপনি কারও কথায় অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিরক্তি বোধ করতে পারেন।
কাজের কোনো আলোচনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি ধীর হবে। তবে সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে আপনি অনুভব করবেন, পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক, আপনি ধীরে ধীরে তা সামলাতে পারছেন।
ধৈর্য ও নম্রতা বজায় রাখলে সম্পর্কগুলো আগের তুলনায় দৃঢ় হবে। নতুন কোনো চুক্তি বা কথাবার্তা থাকলে তাতে কিছুটা সময় দিন, তাড়াহুড়া ভালো নয়।
এই সপ্তাহে আপনার কাজের চাপ এমনভাবে বাড়বে, মনে হবে যেন সময়ই কমে গেছে। দৈনন্দিন দায়িত্ব পূরণ করতে গিয়ে আপনি হয়তো নিজের জন্য কোনো সময়ই খুঁজে পাবেন না। শরীর ও মনের মধ্যে ক্লান্তি জমতে পারে, বিশেষত ঘুম ঠিকমতো না হলে।
সহকর্মীর সঙ্গে ছোটখাটো উত্তেজনা তৈরি হতে পারে, তবে আপনি নিজের সংযম বজায় রাখতে পারলে তা এড়ানো সম্ভব। আর্থিক দিক স্থিতিশীল থাকবে, কিন্তু ছোট কিছু ব্যয় বারবার মাথা তুলবে।
কর্মস্থলে পরিশ্রমের ফল তৎক্ষণাৎ না মিললেও সপ্তাহের শেষে তা একটা আকার নিতে শুরু করবে এবং আপনি বুঝতে পারবেন, পরিশ্রম বৃথা যায়নি। বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, না হলে অযথা রাগ বা ক্লান্তি জমতে পারে।
এই সপ্তাহে আপনার আবেগ, সৃজনশীলতা এবং সম্পর্ক সবই একসঙ্গে ওঠানামা করবে। আপনি নতুন কিছু তৈরি করতে চাইবেন, কিন্তু শক্তি দ্রুত ফুরিয়ে যাবে। মনে হতে পারে, কেউ আপনাকে বুঝছে না, বিশেষত প্রিয় মানুষটি।
সন্তানসংক্রান্ত দিকেও দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে, কিংবা তারা আপনার কথা শুনতে চাইবে না। পড়াশোনা বা মনোযোগের কোনো কাজে একাগ্রতা ধরে রাখা কঠিন হবে। কোনো ঝুঁকিপূর্ণ পরিকল্পনা বা বিনিয়োগে গেলে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি, তাই এখনই সে পথে না হাঁটাই ভালো।
সপ্তাহের শেষ দিকে আপনি ধীরে ধীরে নিজের মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবেন এবং কাজের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা দেবে।
এই সপ্তাহে ঘরোয়া বিষয়ে দায়িত্ব ও টানাপোড়েন বাড়তে পারে। পরিবারের কোনো সদস্যকে বাড়তি যত্ন ও নজর দিতে হতে পারে। নিজের মনেও একধরনের অস্থিরতা বা অজানা বিরক্তি দেখা দেবে, যা আপনাকে অশান্ত করে রাখবে।
কাজের ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করলে ভালো ফল আসবে, কিন্তু ঘরোয়া দায়িত্বের কারণে অনেক সময় লাগবে। নিজের আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে কেউ ভুল বুঝতে পারে।
জমিজমা কিংবা ঘরবাড়িসংক্রান্ত পরিকল্পনা থাকলে এই সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, মন স্থির থাকবে না।
সপ্তাহের শেষে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে।