ক্যাফেইনবিহীন গোলাপ চা থেকেই আপনি সতেজতার অনুভূতি পাবেন
ক্যাফেইনবিহীন গোলাপ চা থেকেই আপনি সতেজতার অনুভূতি পাবেন

গোলাপের চা কি সত্যিই স্বাস্থ্যকর

জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গোলাপের চা। বলা হচ্ছে, হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষায় বেশ কার্যকর এই পানীয়। আদতে এই পানীয় কতটা স্বাস্থ্যকর, সে বিষয়ে রাফিয়া আলমকে জানালেন টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান

গোলাপ ফুল অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর। তাই এর পাপড়ি বা কলির নির্যাস গ্রহণ করলে বেশ কিছু উপকার মিলবে। তবে গোলাপের চায়ের থেকেও এসব উপকার বেশি পাবেন এই নির্যাস দিয়ে তৈরি করা অন্যান্য পানীয়ে। কারণ, চা তৈরির প্রক্রিয়ায় কিছু পুষ্টি উপাদান হারিয়ে যেতে পারে।

ক্যাফেইনের হিসাব-নিকাশ

  • কোনো কোনো পানীয়ে থাকা অতিরিক্ত ক্যাফেইন আমাদের দেহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গোলাপ চায়ে সাধারণত কোনো ক্যাফেইন থাকে না। তাই ক্যাফেইনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ও নেই।

  • রাতে ভালো ঘুম হওয়ার জন্য সাধারণত বিকেলের পর চা-কফি খেতে নিষেধ করা হয়। ক্যাফেইন না থাকায় গোলাপ চায়ের ক্ষেত্রে অনিদ্রার ভয় নেই। চাইলে সন্ধ্যায়ও গোলাপ চা খেতে পারেন।

  • ক্যাফেইনবিহীন গোলাপ চা থেকেই আপনি সতেজতার অনুভূতি পাবেন। মিটবে আপনার দেহের পানির চাহিদাও। তবে কোনো কোনো গোলাপ চা এমনভাবে তৈরি করা হতে পারে, যাতে ক্যাফেইন যোগ করা হয় আলাদাভাবে। গোলাপ চা কেনার সময় বিষয়টি খেয়াল রাখুন।

দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমাতে

গোলাপ চা খেলে ত্বক হয় সতেজ
  • নানা ধরনের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকায় গোলাপ চা স্বাস্থ্যকর। দেহকে ভেতর ও বাইরে থেকে তরুণ রাখে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের মতো উপাদান। হৃদ্‌রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এসব উপাদান।

  • গোলাপ চা খেলে ত্বক হয় সতেজ। এ ছাড়া গোলাপ চা আমাদের বিপাকের হারও বাড়ায়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে এই পানীয়।

  • তবে মনে রাখতে হবে, কয়েক কাপ চায়ে যতটা গোলাপের নির্যাস থাকে, কেবল সেটুকুর কারণেই আপনার ওজন কমবে না। কমবে না দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি। সুস্থ থাকতে আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চা করতে হবে।

  • খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। এমনকি ত্বকের সজীবতার জন্যও খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ। বুঝতেই পারছেন, একটি পানীয় আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কেবল সহায়কই হতে পারে। কখনোই তা সুস্থতার মূল চাবিকাঠি নয়।

ব্যথা ও প্রদাহের জন্য

ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে গোলাপ চা কাজে আসে। নারীদের মাসিক ও তার আগের সময়কার অস্বস্তি কমাতে গোলাপ চা বেশ ভালো। এ সময় এক কাপ গোলাপ চা অবসন্নতা কাটাতে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়া খানিকটা জীবাণুরোধী ভূমিকাও রাখতে পারে গোলাপ চা।

খেয়াল রাখুন

যেকোনো গোলাপ দিয়েই গোলাপ চা তৈরি করা যায়। তবে কিছু গোলাপ তিতকুটে স্বাদ। স্বাদের জন্য এমন গোলাপ বেছে নেওয়া ভালো, যা প্রাকৃতিকভাবেই কিছুটা মিষ্টি।
গোলাপ চায়ে চিনি যোগ করলে তা আর খুব একটা স্বাস্থ্যকর পানীয় থাকবে না।

সুস্থ থাকতে চিনিবিহীন পানীয় খাওয়ার অভ্যাস করুন। কৃত্রিম চিনিও এড়িয়ে চলুন।
চা তৈরির জন্য কাপে বা মগে গরম পানি নিয়ে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে দু-তিন মিনিট ঢেকে রাখুন। তাহলে বাষ্পের সঙ্গে পুষ্টি উপাদান উড়ে যাবে না।

এমন বাগানের গোলাপ বেছে নেওয়া ভালো, যেখানে রাসায়নিক স্প্রে ব্যবহার করা হয় না। চাইলে নিজের গাছের গোলাপের ভালো পাপড়ি শুকিয়ে সংরক্ষণ করে তা দিয়ে চা বানাতে পারেন।