তরকারিতে আলুর বদলে কাঁঠালের বীজ দিলে যে উপকার পাবেন

তরকারিতে কাঁঠালের বীজ আলুর দারুণ এক বিকল্পও হয়ে উঠতে পারে
ছবি: প্রথম আলো

কাঁঠালের বীজ নানাভাবেই খাওয়া যায়। ভেজে কিংবা ভর্তা করে কাঁঠালের বীজ খেতে পারেন, তরকারি হিসেবেও খেতে পারেন।

ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন, ‘কাঁঠালের বীজে আছে আমিষ, ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন আর ফসফরাস। আরও আছে দেহের জন্য খুব প্রয়োজনীয় উপাদান আঁশ। কিছুটা শর্করাও রয়েছে। কাঁঠালের বীজের পুষ্টি উপাদানগুলো যাতে সঠিকভাবে দেহের কাজে লাগে, তা নিশ্চিত করতে হলে কাঁঠালের বীজ সংরক্ষণের প্রথম ধাপ থেকেই যত্নশীল হতে হবে।’

কাঁঠালের বীজের পুষ্টি উপাদানগুলো পেতে বীজ সংরক্ষণের প্রথম ধাপ থেকেই যত্নশীল হতে হবে

সংরক্ষণের সঠিক নিয়ম

কাঁঠাল খাওয়ার পর পরিষ্কার পাত্রে বীজটি রাখুন। অনেকেই যেখানে-সেখানে কাঁঠালের বীজ ফেলে রাখেন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। রান্নার সময় বীজের খোসা ফেলে দিতে হবে। কোনো কারণে কাঁঠাল পচে গেলেও ভেতরে থাকা বীজ সাধারণত পচে না। তারপরও যেকোনো কাঁঠালের বীজ সংরক্ষণের সময় ভালো করে দেখে নিন।

কোনো বীজে পচন থাকলে কিংবা আকৃতিতে কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে সেটি ফেলে দিন। সংরক্ষণ করতে চাইলে রোদে শুকিয়ে নেওয়ার পর খোসা ফেলে পানিতে হালকা সেদ্ধ করে তুলে রাখুন। এর পরপরই বরফশীতল পানিতে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে প্যাকেট বা বক্সে করে ডিপ ফ্রিজে উঠিয়ে রাখুন। একটি প্যাকেটে ততটাই বীজ রাখুন, যা বের করার পর একবারেই ব্যবহার করা হয়ে যাবে।

পুষ্টিতে, রসনায়

কাঁঠালের বীজ উদ্ভিজ্জ উপাদান। তাই এটি থেকে পাওয়া আমিষ হলো দ্বিতীয় শ্রেণির আমিষ। অর্থাৎ দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের সব কটি এতে পাবেন না। আমিষের মান বাড়াতে তাই অন্যান্য প্রাণিজ আমিষের সঙ্গে এই বীজ রান্না করে খেতে পারেন। যেমন মাছ বা মুরগির মাংসের তরকারিতে অনায়াসেই আপনি কাঁঠালের বীজ কেটে দিতে পারেন।

অনেকেই মাংসে বা মাছে আলু দেন। কাঁঠালের বীজ আলুর দারুণ এক বিকল্পও হয়ে উঠতে পারে। কাঁঠালের বীজের চেয়ে আলুতে শর্করার পরিমাণ বেশি, অর্থাৎ আলু থেকে আসে বাড়তি ক্যালরি। অথচ কাঁঠালের বীজ এভাবে খাওয়া হলে আলুর চেয়ে অনেক বেশি ধরনের পুষ্টি উপাদান পেয়ে যাবেন, ক্যালরি পাবেন তুলনামূলক কম। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে। আর খাবারের স্বাদেও আসবে বৈচিত্র্য।

কম খরচে আমিষের ভালো একটি উৎস কাঁঠালের বীজ

আরও যে পুষ্টি মিলবে

  • দ্বিতীয় শ্রেণির আমিষ হলেও কম খরচে আমিষের ভালো একটি উৎস কাঁঠালের বীজ। কেবল কাঁঠালের বীজ কুচি করে রান্না কিংবা ভর্তা করা হলেও দেহের আমিষের চাহিদার বেশ খানিকটাই মেটানো সম্ভব।

  • সবজির সঙ্গে কাঁঠালের বীজ যোগ করলে এর আমিষ, আয়রনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যুক্ত হয়ে পদটি হয়ে উঠবে আরও পুষ্টিকর।

  • কাঁঠালের বীজ ভেজে স্ন্যাকস হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে। পাঁচ-সাতটি বীজ এভাবে খেলে পুষ্টি আর শক্তি দুটিই পাবেন।