বছর তিনেক আগে ‘মুসকুরাও’ (হাসো) নামে একটি কবিতা ভাইরাল হয় অনলাইন দুনিয়ায়। সেই সঙ্গে ভাইরাল হন নায়াব মিধা। কবিতাটি লেখার পাশাপাশি আবৃত্তিও করেছিলেন এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর।ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ‘মুসকুরাও’ কবিতাটি শোনা হয়েছে কয়েক কোটি বার। এই কবিতাকে বলা হয়েছে ২০২২ সালে ভারতের মানসিক স্বাস্থ্য খাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার।‘শায়ের’ হিসেবে নামডাক আছে নায়াব মিধার। শায়ের অর্থ মুখে মুখে যিনি কবিতা রচনা করেন। উর্দু শায়েরি নিয়ে বেশ কিছু শো করেছেন নায়াব। অনেকে মন ভালো রাখতে, জীবনের ভিন্ন এক দর্শনের খোঁজে নায়াব মিধার লাইভ শোয়ে যান।ইনস্টাগ্রামে নায়াবের অনুসারী ছাড়িয়ে গেছে ২৫ লাখ। সম্প্রতি তাঁর হাতে উঠেছে ‘স্টোরিটেলিং স্টার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার।১-৩ নভেম্বর ধুমধাম করে ভারতের রাজস্থানের উদয়পুরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারলেন নায়াব।পাত্র দীর্ঘদিনের প্রেমিক, সফটওয়্যার প্রকৌশলী আয়ুশ চাধক।২০১৪ সালে আয়ুশ ও নায়াব কলেজে ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস ফ্রেশার’ হয়েছিলেন। ১১ বছর পর দুজন হলেন সত্যিকারের ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস’।কলেজে চেনাজানা থাকলেও এই জুটির প্রেম হয় ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ায় একটি ‘স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম’-এ গিয়ে। সেখানে তিন মাস তাঁরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের দেখভাল করতেন। শিশুদের সঙ্গে খেলতেন, প্রতিদিন রান্না করে খাওয়াতেন। ‘ভোগ ইন্ডিয়া’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নায়াব বলেন, ‘এই টমেটো কাটা আর চাওমিন রাঁধার একফাঁকে নিজেদের অজান্তে আমাদের প্রেমটা হয়ে গেল।’প্রায় ৯ বছর প্রেমের পর বিয়ে করলেন এই জুটি।প্রথা ভেঙে দুই পরিবারের সামনে হাঁটু গেড়ে নায়াবই আয়ুশকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।নারীবাদী হিসেবে নামডাক আছে নায়াবের। এই শায়ের বলেন, ‘আমি খুবই উত্তেজিত একটা মানুষ। দুমদাম করে পৃথিবী বদলে দিতে চাই। আর আয়ুশ এমন এক ছেলে, যে প্রচণ্ড ঝড়েও মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে পারে।’রাজস্থানি নায়াব ও পাঞ্জাবি আয়ুশ পরিবেশ ও প্রাণীদের নিয়ে কাজ করছেন।বিয়েতে কোনো ধরনের প্লাস্টিক বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর—এমন কিছু রাখেননি। সত্যিকারের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে আসর। পুনরায় ব্যবহারযোগ্য গ্লাস আর পানির স্টেশন ছিল বিয়ের আয়োজনে।বিয়েতে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে রাজস্থানি নারীদের হাতে বানানো একটি লেহেঙ্গা পরেন নায়াব। বিয়ের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই তিনি স্থানীয় নারীদের হাতে তৈরি রাজস্থানি ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেছেন।
বিজ্ঞাপন
বিয়ের সব আয়োজনেই রাজস্থানি নারীদের হাতে বানানো পোশাক পরেন নায়াব।বিয়ের আগেই বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন এই জুটি।সম্প্রতি দিল্লিতে নায়াব ও আয়ুশ মিলে বাড়িও কিনেছেন। বিয়ের পর সেই বাড়িতেই নতুন জীবন শুরু করবেন।ঐতিহ্য মেনে নায়াব বিয়েতে পরেছেন লালরঙা লেহেঙ্গা। আলাদা ওড়না দিয়ে ঘোমটা টেনেছেন।বর-কনের বন্ধুবান্ধব, যাঁরা দীর্ঘকাল এই জুটির প্রেমের সাক্ষী, তাঁরা উপস্থিত ছিলেন বিয়েতে।কনে বেশে নায়াব।