বিজ্ঞাপন বার্তা

সাহসেই জয়

সাহসেই জয়—উক্তিটি হালিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসানের জীবনের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। কেননা, হালিমা গ্রুপের অগ্রযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে সফল হয়েছেন। ব্যবসার শুরুর দিকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয় আবুল কালাম হাসানকে। বাংলাদেশের মোবাইল ফোন এক্সেসোরিজ টেকনোলোজি সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা ছিল না। অনেক লোকসান হচ্ছে জেনেও তিনি হাল না ছেড়ে তাঁর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা ও আত্মবিশ্বাসী। তাঁর এই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর দৃঢ়চেতা মনোভাব তাঁকে আজকের এই সাফল্যমণ্ডিত অবস্থানে পৌঁছাতে অনেকখানি ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকেই এটি অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল প্রতিষ্ঠানটির নাম নিয়ে সমালোচনা। হালিমা নামটি সেকেলে এবং অপ্রচলিত হওয়াতে এটিকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু এটি আবুল কালাম হাসানের মায়ের নাম, তাই তিনি এটিকে প্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান। তিনি প্রমাণ করেছেন, নামে নয়, কাজেই প্রতিষ্ঠানের পরিচয়। প্রতিষ্ঠান টিকে থাকে পণ্যের গুণগত মান এবং গ্রাহকসেবা দিয়ে। হালিমা টেলিকম দিয়ে যে প্রতিষ্ঠানের জন্ম, তা আজ ৯টি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রতিষ্ঠান হালিমা গ্রুপ।

আবুল কালাম হাসান অদক্ষ কর্মীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কর্মীতে পরিণত করেছেন। যে নারীরা একসময় শুধু গৃহিণী কিংবা গৃহপরিচারিকা অথবা নিম্নতম মজুরির শ্রমিক ছিলেন, তাঁরা আজ হালিমা ফ্যাক্টরিতে কাজ করার মাধ্যমে দক্ষ কর্মীতে পরিণত হয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাই বন্দর, উপযুক্ত জনবল এবং যোগাযোগব্যবস্থার সুবিধার কথা বিবেচনা করে তাঁদের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামকেন্দ্রিক গড়ে তুলতে চান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হালিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান তাঁর নিজ জেলাকেই পরিচিত করার লক্ষ্যে ঢাকা–চট্টগ্রামের পরিবর্তে কুমিল্লাতেই সব ধরনের শিল্পকারখানা গড়ে তুলেন।

হালিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান

মাত্র চারজন অদক্ষ কর্মী নিয়ে যে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা, তা আজ ৯০০ দক্ষ কর্মীর একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। হালিমা টেলিকম থেকে শুরু করে একে একে প্রতিষ্ঠা করা হয় হালিমা ট্রেডার্স, হালিমা ইলেকট্রনিকস, হালিমা ওয়ার্ল্ড, নিউক্লীয়ি গ্লোবাল, এইচটিই, টিপ, হালিমা মোবাইল এবং নতুন সংযোজন হালিমা হোম অ্যাপ্লায়েন্স। ৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করা আবুল কালাম হাসান নিয়মিত কর পরিশোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১৩-১৪ অর্থবছরে কুমিল্লা জেলার সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন। এই কোম্পানিগুলো এটাই প্রমাণ করে যে সাহস, আত্মবিশ্বাস আর স্বপ্নপূরণের সদিচ্ছা থাকলে যেকোনো বাধাই অতিক্রম করা সম্ভব। হালিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আজ একজন সফল তরুণ উদ্যোক্তা।

হালিমা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হালিমা টেলিকম মোবাইল এক্সেসরিজ জগতে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে নতুন নতুন পণ্যের ধারাবাহিকতায় শীর্ষ থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সেবা দিয়ে আসছে। মোবাইল এক্সেসরিজ জগতে প্রতিযোগী কোম্পানির তুলনায় হালিমা টেলিকম সব সময় ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নিত্যনতুন পণ্য বাজারজাত করে থাকে। বর্তমানে হালিমা টেলিকমে বারফোন চার্জার ৩টি, অ্যান্ড্রয়েড চার্জার ১৫টি, কুইক চার্জার ২টি, অটো চার্জার ১টি, ডিসি চার্জার ১টিসহ মোট ২২ মডেলের চার্জার, ২৮৫ মডেলের ব্যাটারি, ২ মডেলের পাওয়ার ব্যাংক, ৭ মডেলের হেডফোন, ৭ মডেলের স্পিকার ও ৯ মডেলের ডেটা কেব্‌ল বাজারজাত করেছে।

এ ছাড়া হালিমা টেলিকম উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে অটো আইডি চার্জার বাজারে নিয়ে এসেছে। বাজারে বিদ্যমান ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল সেটের কনফিগারেশন বিবেচনায় একমাত্র হালিমা টেলিকম অটো আইডির চার্জার প্রস্তুত করছে, যা হ্যান্ডসেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে। এ ছাড়া যেসব হ্যান্ডসেটের মধ্যে ফাস্ট চার্জ অপশন থাকে, ওই সব হ্যান্ডসেটের জন্য হালিমা টেলিকম এক বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিউসি ওয়ান মডেলের চার্জার বাজারজাত করে, যা দিয়ে চার্জ দিলে ফাস্ট চার্জিং হ্যান্ডসেটগুলো ৩০–৩৫ মিনিটের মধ্যেই ৮০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ নিতে সক্ষম হয়, যা ব্যাটারি কিংবা হ্যান্ডসেটের কোনো প্রকার ক্ষতি করে না।

হালিমা গ্রুপ হালিমা ইলেকট্রনিকস নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুপি ইউনিয়নের পিড়াতলি এলাকায় ৯৫ হাজার বর্গফুটের জায়গা নিয়ে নিজস্ব কারখানার কার্যক্রম চালু করেন। কারখানায় অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি এনে বাংলাদেশে প্রথম এলইডি মোশন সেন্সর লাইট উৎপাদন করেন। এ ছাড়া এলইডি ও এনার্জি লাইট, আইপিএস বাল্ব, কালার এলইডি বাল্ব ও টিউব, বাহারি ডিজাইনের এলইডি ড্রিম লাইট, শেড বাল্ব, মাল্টি সকেট, পিয়ানো সুইচ, ক্লিয়ার বাল্ব, ডিসি টিউব/ বাল্ব, টিউব শেড, ব্যাকলাইট, সার্কিট ব্রেকার, হোল্ডার, মাল্টি প্লাগ, থ্রি–কালারের গ্যাং সুইচ, ব্ল্যাক মিরর গ্যাং এবং ডায়মন্ড গ্যাং সুইচ উৎপাদন করা হয়।

হালিমা গ্রুপের একের পর এক সংযোজনের মধ্যে মোবাইল এক্সেসরিজ জগতে তরুণ প্রজন্মের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এইচটিই নামে ২০১৮ সালে আরেকটি কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেন। নিত্যনতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্তমানে এইচটিইতে বারফোন চার্জার ৩টি, অ্যান্ড্রয়েড চার্জার ৭টি, কুইক চার্জার ১টি, ১টি করে অটো, ডিসি চার্জারসহ মোট ১৩ মডেলের চার্জার, ২১১ মডেলের ব্যাটারি, ২ মডেলের পাওয়ার ব্যাংক, ৫ মডেলের হেডফোন, ৪ মডেলের স্পিকার ও ৯ মডেলের ডেটা কেব্‌ল বাজারজাত করেছে।

বাংলাদেশের স্বল্প আয়ের মানুষের কথা বিবেচনা করে হালিমা গ্রুপ ২০১৯ সালে মোবাইল এক্সেসরিজ জগতে টিআইপি নামে আরেকটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিত্যনতুন পণ্যের সমাহার করে বর্তমানে টিআইপি–এ বারফোন চার্জার ৩টি, অ্যান্ড্রয়েড চার্জার ৫টি, ১টি করে কুইক, অটো ও ডিসি চার্জারসহ মোট ১১ মডেলের চার্জার, ১৯২ মডেলের ব্যাটারি, ২ মডেলের পাওয়ার ব্যাংক, ২ মডেলের হেডফোন ও ৯ মডেলের ডেটা কেব্‌ল বাজারজাত করেছে।
বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হাতে মোবাইল সেট তুলে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে হালিমা গ্রুপ বাংলাদেশে তৈরি করছে হালিমা মোবাইল। ২০২১–এর শুরুতেই এইচ ওয়ান ও টি–ওয়ান দুটি মডেলের মোবাইল ফোন দিয়ে যাত্রা শুরু করে।

এইচ ওয়ান ও টি–ওয়ান এই দুই মডেলের মোবাইর ফোনে রয়েছে শক্তিশালী ব্যাটারি, মাল্টিমিডিয়া সাপোর্টিংসহ আকর্ষণীয় ডিজাইন। এ ছাড়া রয়েছে ফেসবুক ব্রাউজার, ৩২ জিবি ফোন মেমোরি, ডিজিটাল ক্যামেরা, ইউএসবি ম্যাস স্টোরেজ, ওয়্যারলেস এফএম/ এমপি- ৩/ এমপি ৪, কোয়ার্ড টর্চ এবং মাল্টি ল্যাঙ্গুয়েজ ডুয়েল সিমসহ ২.৪" ডিসপ্লে। বর্তমানে হালিমা মোবাইলে এইচ–টু, এইচ–থ্রি ও টি–টু নামে আরও তিনটি মডেলের মোবাইল সংযুক্ত হচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে এইচ–টু, এইচ–থ্রি ও টি–টু মডেলে উপরোক্ত সুবিধাসহ লম্বা সময় ব্যবহারের জন্য বিগ ব্যাটারি, অডিও–ভিডিও, ডিজিটাল ক্যামেরা, গেম এবং ৩২ জিবি পর্যন্ত ডুয়েল স্ট্যান্ড বাই মেমোরি।
হালিমা গ্রুপের সর্বশেষ সংযোজন হালিমা হোম অ্যাপ্লায়েন্স। কাস্টমারের চাহিদা এবং বর্তমান যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হালিমা হোম অ্যাপ্লায়েন্স নিয়ে এসেছে বিভিন্ন মডেল ও সাইজের এলইডি, অ্যান্ড্রয়েড ও স্মার্ট টেলিভিশন। হালিমা হোম অ্যাপ্লায়েন্স দেশেই তৈরি করছে ৪৩", ৪০" ও ৩২"–এর এলইডি, স্মার্ট ও অ্যান্ড্রয়েড টিভি, যার প্রতিটিই হচ্ছে ফুল এইচডি, এইচডিএমআই, ইউএসবি, ওয়াই–ফাই এবং এভি সুবিধাসম্পন্ন। ওয়াই-ফাই সংযোগের মাধ্যমে ডিশলাইন ছাড়াই দেশ–বিদেশের অনেকগুলো চ্যানেল ফ্রিতে দেখা যাবে। এ ছাড়া প্রতিটি টিভিতে রয়েছে নেটফ্লিক্স, মাল্টিমিডিয়াসহ সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন সাইট ব্যবহার করার মতো অত্যাধুনিক সব সুবিধা।

নিম্নবিত্ত পরিবারের কথা বিবেচনা করে হালিমা হোম অ্যাপ্লায়েন্স নিয়ে এসেছে এইচডিএমআই, ইউএসবি, অডিও ভিডিও এবং এভি সুবিধাসম্পন্ন ২৪" এলইডি টিভি।

ছবি: হালিমা গ্রুপ