
এ সময়ে এয়ার ফ্রায়ার কোনো বিলাসী পণ্য নয়; বরং আধুনিক জীবনের জন্য জরুরি। সঠিক ব্যবহারে এয়ার ফ্রায়ারে সাধারণ খাবারও মুচমুচে ও বাদামি হতে পারে। ভাজাভুজি–জাতীয় খাবার তৈরি ছাড়া এয়ার ফ্রায়ারে আরও নানা কাজ আছে। খুব কম সময়েই খাবার তৈরি করা যায় বলে দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে যন্ত্রটির। এটি সময় বাঁচায়, ক্যালরি কমায়; সেই সঙ্গে সাধারণ খাবারের স্বাদও বাড়াতে পারে। এয়ার ফ্রায়ারের কিছু কৌশল জানা থাকলে রান্নাঘরে আপনার কাজ আরও সহজ হয়ে পড়বে। এখানে রইল তেমন পাঁচটি পরামর্শ—
অনেক সময়ই দেখা যায়, সকালে বানানো রুটি বা নান রাতে খেতে গেলে শক্ত ও শুকনা হয়ে যায়। সকালে বেঁচে যাওয়া রুটি রাতে তাওয়া বা মাইক্রোওয়েভে গরম করলে, সেটা অনেক সময় রাবারের মতো হয়ে যায়। অথচ রুটিগুলো ফয়েল পেপারে মুড়ে বা অল্প একটু পানি ছিটিয়ে এয়ার ফ্রায়ারে গরম করলেই সেটা প্রথমবারের মতো নরম ও সতেজ হয়ে যায়। রুটি খেতে বসলে বুঝতেই পারবেন না এটা আগে বানানো। যন্ত্রটি ঝটপট নাশতা বানাতে অথবা মাঝরাতের হঠাৎ খিদে মেটাতে কার্যকর।
একবার খাওয়ার পর বেঁচে যাওয়া খাবারগুলো দিয়ে আবার কিছু বানাতে এয়ার ফ্রায়ার ব্যবহার করা ভালো। আগের দিন বা আগের বেলার কোনো সবজি থেকে গেলে, সেই তরকারির সঙ্গে একটু বেসন, আটা আর কিছুটা মসলা মাখিয়ে ছোট ছোট টিক্কার আকারে গড়ে এয়ার ফ্রায়ারে দিলে সহজেই নাশতা তৈরি করে ফেলা যায়। এয়ার ফ্রায়ারে এসব নাশতা মুচমুচে বাদামি করে ভেজে ফেলা যায়। যেসব শিশু সবজি খেতে চায় না, এভাবে নাশতা তৈরি করে দিলে তারাও পছন্দ করবে। এয়ার ফ্রায়ারে সহজেই বেঁচে যাওয়া খাবার দিয়ে অন্য একটি নাশতা বা জলখাবার বানিয়ে দেওয়া যায়।
বাড়িতে গ্যাস নেই? কোনো সমস্যা নেই। চুলার তাপ ছাড়াই পাঁপড়–জাতীয় খাবার দুই মিনিটে ভেজে নিতে পারবেন এয়ার ফ্রায়ারে। আবার এতে কোনো তেলেরও দরকার হয় না। চুলা, কড়াই, তেল—এসবের ঝামেলা এড়িয়ে ঝটপট খাবার তৈরি করে দেবে এয়ার ফ্রায়ার। বাসায় শেষ মুহূর্তে আসা অতিথি আপ্যায়নে দারুণ উপকারী এয়ার ফ্রায়ার। পাঁপড় বা চিপস–জাতীয় খাবার এখানে ভেজে নেওয়া যাবে।
আজকাল সবাই রান্নায় তেল ব্যবহারের ব্যাপারে বেশ সচেতন। সাধারণ রান্নায় কম তেল ব্যবহার করলেও ডাল বা সবজির ফোড়ন দেওয়ার সময় কিন্তু তেলটা বেশি পড়ে যায়। তবে এয়ার ফ্রায়ারে এসবের সমাধান আছে। ফোড়ন দেওয়ার সব মসলা রেডি করে ফ্রায়ারের চেম্বারে আধা টেবিল চামচ তেল ব্রাশ করে সেগুলো ঢেলে ৩০ সেকেন্ড ফ্রাই করলেই ফোড়ন তৈরি হয়ে যাবে। এতে যেমন ফোড়নের সুঘ্রাণ বজায় থাকে, তেমনি মচমচে হয়। তা ছাড়া এয়ার ফ্রায়ারে কিন্তু মসলা ছিটে আসারও ভয় নেই। আবার ফোড়নের স্বাদটাও অটুট থাকে।
হাতে কম সময় নিয়ে কিন্তু বাদাম বা মসলা ভাজার কাজটা চুলায় করা যায় না। আবার তাড়াহুড়া করতে গেলেও পুরোপুরি মচমচে ভাজা হবে না, উল্টো সেটা পুড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। এয়ার ফ্রায়ার খুবই কম সময়ে বাদাম ভাজা বা মসলা টালার কাজটা করতে পারে।
এতে কিন্তু অল্প আঁচে বারবার নেড়ে দেওয়ারও দরকার হয় না। আবার স্যুপ বা সালাদ–জাতীয় খাবারে সিজনিংয়ের দরকার হলে এয়ার ফ্রায়ারে খুব কম সময়েই গোলমরিচ, হার্বস, লবণ ও সস সিজনিং করা যায়। কম সময়ে, কম ঝামেলায়, মজাদার ও স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরিতে রাঁধুনিদের জন্য স্মার্ট সমাধান এয়ার ফ্রায়ার।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া