ব্ল্যাক ফ্রাইডে কী, দিনটি কেন এত জনপ্রিয়

নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে পশ্চিমা দেশে শুরু হয় শীতের আমেজ। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয় এক অদ্ভুত উত্তেজনা; নির্দিষ্ট করে বললে কেনাকাটার মহোৎসব। হাড়কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় মানুষের লম্বা সারি দেখা যায়। উদ্দেশ্য একটাই, পছন্দের জিনিসটা বগলদাবা করতে হবে। কারণ, সেদিন সবকিছুর দাম থাকে অবিশ্বাস্য রকমের কম। এই দৃশ্য এখন আর শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বিশ্বের বড় অংশের পরিচিত চিত্র। আর এই দিনের নাম ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ এদিনের অপেক্ষায় থাকে। এ বছর ব্ল্যাক ফ্রাইডে ছিল ২৮ নভেম্বর। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, ব্ল্যাক ফ্রাইডে কী? দিনটি কেন এত জনপ্রিয়? এর সঙ্গে কি জড়িয়ে আছে ইতিহাসের কোনো কালো অধ্যায়?

ব্ল্যাক ফ্রাইডে কী

সহজ কথায়, ব্ল্যাক ফ্রাইডে হলো যুক্তরাষ্ট্রের থ্যাঙ্কসগিভিং ডের ঠিক পরের শুক্রবার
ব্ল্যাক ফ্রাইডে কী, দিনটি কেন এত জনপ্রিয়

সহজ কথায়, ব্ল্যাক ফ্রাইডে হলো যুক্তরাষ্ট্রের থ্যাঙ্কসগিভিং ডের ঠিক পরের শুক্রবার। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার থ্যাঙ্কসগিভিং ডে পালিত হয়। এর পরের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার থেকেই অলিখিতভাবে শুরু হয় বড়দিনের কেনাকাটা।

প্রতিবছর তারিখটি বদলে গেলেও সাধারণত ২৩ থেকে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে পড়ে দিনটি। যেমন চলতি বছর ব্ল্যাক ফ্রাইডে ছিল ২৮ নভেম্বর। তবে এখনো রয়ে গেছে এর আবেশ। চলছে পুরোদমে কেনাকাটা।

১৯৫২ সাল থেকেই দিনটিকে ক্রিসমাস শপিং সিজন বা বড়দিনের কেনাকাটার মৌসুমের শুরু হিসেবে ধরা হয়। ব্যবসায়ীরা এদিন বিশাল সব ছাড় দেন। প্রথমে এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপার থাকলেও এখন ইউরোপ, এশিয়া, এমনকি আমাদের বাংলাদেশেও এর হাওয়া এসে লেগেছে।

কেন দিনটির নাম ব্ল্যাক ফ্রাইডে

ব্ল্যাক ফ্রাইডে নামটা শুনলেই মনে হয় কোনো শোকের দিন বা ভয়াবহ দুর্ঘটনার স্মৃতি। আদতে ইতিহাসের পাতায় এই নামের জন্ম হয়েছিল নেতিবাচক অর্থেই। ইন্টারনেটে অনেক ভুল তথ্য বা মিথ ঘুরে বেড়ায়। চলুন, আগে সেসব ঝেড়ে ফেলি, তারপর সত্যটা জানি।

অনেকে বলেন, অতীতে এই দিনে দাস কেনাবেচা হতো বলে এর নাম ব্ল্যাক ফ্রাইডে। তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুল এবং এর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই।

ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে সবকিছুর দাম থাকে অবিশ্বাস্য রকমের কম

আবার কেউ বলেন, ১৮৬৯ সালের শেয়ারবাজার ধসের কারণে এই নাম এসেছে। হ্যাঁ, ১৮৬৯ সালে স্বর্ণের বাজার ধসে পড়ার দিনটিকে ব্ল্যাক ফ্রাইডে বলা হয়েছিল, কিন্তু আজকের কেনাকাটার ব্ল্যাক ফ্রাইডের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

তাহলে আসল ইতিহাস কী? আধুনিক ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ শব্দটির জন্ম ১৯৫০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরে। তখন থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের পরের শনিবার ফিলাডেলফিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ‘আর্মি বনাম নেভি’ ফুটবল খেলা হতো। এই খেলা দেখার জন্য এবং বড়দিনের কেনাকাটার জন্য শুক্রবার থেকেই শহরের রাস্তায় নামত মানুষের ঢল।

প্রচণ্ড যানজট, মানুষের ভিড়, চোর ও পকেটমারদের দৌরাত্ম্য সামলাতে ফিলাডেলফিয়ার পুলিশদের ঘাম ছুটে যেত। তারা এই দিন কোনো ছুটি পেত না, উল্টো ডাবল শিফটে কাজ করতে হতো। বিরক্ত হয়ে পুলিশরা এই বিশৃঙ্খল দিনের নাম দিয়েছিলেন ব্ল্যাক ফ্রাইডে। তাদের কাছে দিনটি ছিল এক বিভীষিকা।

শহরের ব্যবসায়ীরা দেখলেন, ব্ল্যাক বা কালো শব্দটি নেতিবাচক শোনায়। মানুষ ভাববে দিনটি অশুভ। তাই ১৯৬০-এর দশকে তাঁরা নাম পাল্টে ‘বিগ ফ্রাইডে’ করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু লাভ হলো না। মানুষের মুখে মুখে পুলিশের দেওয়া সেই ব্ল্যাক ফ্রাইডে নামটাই টিকে গেল।

১৯৫২ সাল থেকেই ব্ল্যাক ফ্রাইডেকে ক্রিসমাস শপিং সিজন বা বড়দিনের কেনাকাটার মৌসুমের শুরু হিসেবে ধরা হয়

১৯৮০-এর দশকে ব্যবসায়ীরা বুদ্ধি করে এই নেতিবাচক নামটির একটি ইতিবাচক ব্যাখ্যা দাঁড় করালেন। হিসাববিজ্ঞানের খাতায় যখন কোনো ব্যবসায় লোকসান হয়, তখন তা লাল কালিতে লেখা হয়। আর যখন লাভ হয়, তখন তা লেখা হয় কালো কালিতে; মানে সাধারণ কালিতে।

ব্যবসায়ীরা প্রচার করলেন, সারা বছর খুচরা বিক্রেতারা লোকসানে থাকেন। কিন্তু থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের পরের এই শুক্রবার এত বেশি বিক্রি হয় যে তাদের খাতা লস থেকে লাভে ফিরে আসে। ব্যস! এভাবেই ব্ল্যাক ফ্রাইডে হয়ে গেল মুনাফা আর উৎসবের প্রতীক।

ডোরবাস্টার ডিল এবং মানুষের পাগলামি

২০০০ সালের পর থেকে ব্ল্যাক ফ্রাইডে এক নতুন রূপ নিল। খুচরা পণ্য বিক্রেতারা শুরু করলেন ‘ডোরবাস্টার ডিল’। মানে দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে খুব অল্প সময়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে অবিশ্বাস্য ছাড় দেওয়া হয়। ধরুন, ১ হাজার ডলারের টিভি মাত্র ২০০ ডলারে! কিন্তু শর্ত হলো, এই টিভি দোকানে আছে মাত্র ৫টি।

এই পাঁচটি টিভির জন্য দোকানের বাইরে হাজার মানুষ সারি বেঁধে মুখিয়ে থাকে। দোকান খুললেই শুরু হয় হুড়াহুড়ি। যুক্তরাষ্ট্রে ব্ল্যাক ফ্রাইডের ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। একে বলা হয় ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে ম্যাডনেস’। মানুষ ভুলে যায় যে তারা মানুষ; একটা সস্তা টিভির জন্য তারা রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করে দেয়।

‘ডোরবাস্টার ডিল’ মানে দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে খুব অল্প সময়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে অবিশ্বাস্য ছাড় দেওয়া হয়

ব্ল্যাক ফ্রাইডে থেকে সাইবার মানডে

ইন্টারনেট আসার পর ব্ল্যাক ফ্রাইডের রূপ বদলে গেছে। এখন আর মানুষকে হাড়কাঁপানো শীতে সারি বেঁধে দাঁড়াতে হয় না। তবে অনেকে অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় এখনো দাঁড়ান। তবে এখন বেশির ভাগ মানুষই অনলাইনে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন।

ফলে জন্ম হয়েছে ‘সাইবার মানডে’। ব্ল্যাক ফ্রাইডের ঠিক পরের সোমবার অনলাইনে প্রযুক্তিপণ্য বা গ্যাজেটের ওপর বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালেই সাইবার মানডের বিক্রি ব্ল্যাক ফ্রাইডের মোট বিক্রিকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

সে বছর সাইবার মানডেতে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে বিক্রিবাট্টা ছিল ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এখন তো আর এক দিনের উৎসব নেই, পুরো সপ্তাহজুড়ে চলে ‘ব্ল্যাক উইক’। অনেক জায়গায় নভেম্বর মাসজুড়েই চলে ‘ব্ল্যাক নভেম্বর’।

ব্ল্যাক ফ্রাইডের ঠিক পরের সোমবার অনলাইনে প্রযুক্তিপণ্য বা গ্যাজেটের ওপর বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়, একে বেল সাইবার মানডে

বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফ্রাইডে

আমাদের দেশে থ্যাঙ্কসগিভিং নেই, কিন্তু ডিসকাউন্টের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে ষোলো আনা। বাংলাদেশে যেহেতু শুক্রবার ছুটির দিন এবং মুসলিমপ্রধান দেশ, তাই অনেক ব্র্যান্ড সরাসরি ‘ব্ল্যাক’ শব্দটি ব্যবহার করতে চায় না। তারা এর নাম দিয়েছে ফাটাফাটি ফ্রাইডে, হ্যাপি ফ্রাইডে বা বিগ ফ্রাইডে। নাম যা-ই হোক, উদ্দেশ্য একটাই—ছাড় দিয়ে ক্রেতা আকর্ষণ।

কেনাকাটার কৌশল এবং ফাঁদ

ব্ল্যাক ফ্রাইডে মানেই যে সব সময় লাভ, তা কিন্তু নয়

ব্ল্যাক ফ্রাইডে মানেই যে সব সময় লাভ, তা কিন্তু নয়। এর পেছনে রয়েছে চতুর বিপণন কৌশল। সমালোচকেরা বলেন, এটি মূলত মানুষকে আবেগপ্রবণ করে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটায় বাধ্য করার একটি ফাঁদ। অনেক সময় বিক্রেতারা ছাড়ের আগে পণ্যের দাম বাড়িয়ে রাখেন, যাতে পরে ডিসকাউন্ট দিলে মনে হয় অনেক সস্তায় কেনা যাচ্ছে। একে বলা হয় ‘মার্কেটিং ম্যানিপুলেশন’।

কখনো ভেবেছেন, যে জিনিসটা আপনার আসলে দরকার নেই, সেটাই কেন ডিসকাউন্টে দেখলে কিনতে ইচ্ছে করে? এর পেছনে কাজ করে ‘ফোমো’ বা ফিয়ার অব মিসিং আউট। সহজ ভাষায়, কিছু মিস করার ভয়।

ব্যবসায়ীরা এমনভাবে অফার দেন, যেন মনে হয় এখন না কিনলে জীবনে আর কখনো এই সুযোগ পাবেন না। আবার যখন দেখেন, একটি পণ্য মাত্র ২ পিস বাকি এবং ৫০ শতাংশ ছাড়ে পাওয়া যাচ্ছে, তখন আপনার মস্তিষ্কে ডোপামিন হরমোন বেড়ে যায়।

যুক্তি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করে আবেগ। আপনি ভাবেন, আপনি জিতে গেছেন। আদতে কিন্তু জিতেছেন ওই বিক্রেতা বা ব্যবসায়ীরাই। তাই অভিজ্ঞরা পরামর্শ দেন, হুজুগে না মেতে বুঝেশুনে কেনাকাটা করতে।

ব্ল্যাক ফ্রাইডে অফার লুফে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার রিচফিল্ড শহরে ‘বেস্ট বাই’ দোকানের সামনে তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটাচ্ছেন ক্রেতারা

বুদ্ধিমান ক্রেতা হবেন যেভাবে

ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে কেনাকাটা করা খারাপ কিছু নয়। তবে আপনাকে জানতে হবে, কীভাবে কেনাকাটা করতে হয়। ফাঁদে না পড়ে সত্যিকারের লাভবান হতে চাইলে নিচের কৌশলগুলো আপনার জন্য।

১. আবেগে নয়, প্রয়োজনে কিনুন
ডিসকাউন্ট দেখেই ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। নিজেকে প্রশ্ন করুন, ‘এই জিনিসটা কি আমার আগামী ছয় মাসের মধ্যে দরকার হবে?’ যদি উত্তর ‘না’ হয়, তবে ৯০ শতাংশ ছাড়ে দিলেও সেটা কিনবেন না। মনে রাখবেন, ১০০ টাকার অপ্রয়োজনীয় জিনিস ১০ টাকায় কেনা মানে ৯০ টাকা সাশ্রয় নয়, বরং ১০ টাকা অপচয়।

২. দামের ইতিহাস যাচাই করুন
অনেক অসাধু ব্যবসায়ী ব্ল্যাক ফ্রাইডের এক সপ্তাহ আগে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। তারপর ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে সেই বর্ধিত দামের ওপর ডিসকাউন্ট দিয়ে আগের দামে বিক্রি করেন। অনলাইনে কেনাকাটা করলে ‘প্রাইস হিস্ট্রি’ চেক করার টুলস ব্যবহার করুন। দেখুন, আসলেই দাম কমেছে কি না।

ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে কেনাকাটা করা খারাপ কিছু নয়; তবে আপনাকে জানতে হবে, কীভাবে কেনাকাটা করতে হয়

৩. তালিকা তৈরি করুন
দোকানে বা ওয়েবসাইটে ঢোকার আগেই ঠিক করে নিন, কী কী কিনবেন। সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করুন, এই তালিকার বাইরে এক টাকার জিনিসও কিনবেন না। তালিকা ছাড়া শপিংয়ে যাওয়া আর মানচিত্র বা কম্পাস ছাড়া সমুদ্রে নামা একই কথা; হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি।

৪. বাজেট ঠিক করুন
ক্রেডিট কার্ড ঘষে কেনাকাটা করা খুব সহজ, কিন্তু মাস শেষে বিল দেওয়া কষ্টের। আগেই ঠিক করুন, সর্বোচ্চ কত টাকা খরচ করবেন। সেই টাকার বেশি এক পয়সাও নয়।

৫. রিটার্ন পলিসি দেখে নিন
হুজুগে কিনে ফেলার পর যদি দেখেন, জিনিসটা ভালো লাগছে না বা কাজ করছে না, তখন কী করবেন? তাই কেনার আগেই দেখে নিন, সেটা ফেরত দেওয়ার বা বদলানোর সুযোগ আছে কি না।

মুদ্রার উল্টো পিঠ

চাকচিক্যময় এই উৎসবের একটি অন্ধকার দিকও আছে। অতিরিক্ত ভোগবাদিতা বা ওভারকনজাম্পশন পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রচুর কার্বন নিঃসরণ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে এ সময়ে বর্জ্যের পরিমাণ প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। অনেকেই কেবল অল্প টাকায় পণ্য পাওয়ার লোভে এমন জিনিস কেনেন, যা তাঁদের আসলে দরকারই নেই।
শ্রমিকদের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

দোকানের কর্মীদের দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে হয়, অনেক সময় বিশ্রামের সুযোগও পাওয়া যায় না। যাঁরা গুদামে কাজ করেন, তাঁদের ওপরও এ সময়ে অমানবিক কাজের চাপ থাকে।

ব্ল্যাক ফ্রাইডে আধুনিক অর্থনীতির এক বিশাল চাকা, এটি একই সঙ্গে উৎসব ও বোকামির এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ

এই নেতিবাচক প্রভাবের কথা চিন্তা করে কিছু ব্র্যান্ড এখন সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছে। যেমন কিছু স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড ব্ল্যাক ফ্রাইডের দিন তাদের ওয়েবসাইট ও দোকান বন্ধ রাখে। আবার পাতাগনিয়ার মতো ব্র্যান্ড মানুষকে নতুন জিনিস না কিনে পুরোনো জিনিস মেরামত করতে উৎসাহিত করে।

তবে হ্যাঁ, ব্ল্যাক ফ্রাইডে আধুনিক অর্থনীতির এক বিশাল চাকা। এটি একই সঙ্গে উৎসব ও বোকামির এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ। এই দিনে কেউ বুদ্ধি করে সারা বছরের প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিকস বা শীতের পোশাক কিনে অনেক টাকা বাঁচান, আবার কেউ অপ্রয়োজনীয় জিনিসের স্তূপ জমিয়ে ঘরের জায়গা নষ্ট করেন।

দিন শেষে সিদ্ধান্ত আপনার। আপনি কি বিজ্ঞাপনের রঙে বিভ্রান্ত হয়ে ভোগান্তির শিকার হবেন, নাকি ঠান্ডা মাথায় নিজের কষ্টার্জিত অর্থের সঠিক ব্যবহার করবেন?

ফিলাডেলফিয়ার পুলিশদের কাছে যা ছিল মাথাব্যথা, আজ তা উৎসব। এই উৎসবের রং যেন আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের লাল বাতি জ্বালিয়ে না দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন!

সূত্র: হিস্ট্রি ডটকম, হোস্টিংগার ডটকম, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা ও এআইএন ডটইউএ