চেহারায় নতুনত্ব আনতে চশমা বেশ শক্তিশালী অনুষঙ্গ। শান্ত, নাটকীয়, জমকালো—সব ধরনের লুকই আনা যায় চশমার মাধ্যমে। আদর্শ চশমা বেছে নেওয়ার পেছনে বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তাও আছে। যদিও শেষ পর্যন্ত এটি ব্যক্তিগত পছন্দে গিয়েই দাঁড়ায়। যাঁরা সব সময় চশমা পরেন, তাঁদের চশমার আকৃতি সঠিকভাবে বেছে নেওয়া প্রয়োজনীয়তার পর্যায়েই পড়ে, বিলাসিতা নয়। ফ্রেম বেছে নেওয়ার সময় নিজের অনুভূতিকেও গুরুত্ব দিন; কারণ, চশমা যেমন ফ্যাশনের অংশ, তেমনি আপনার ব্যক্তিত্বেরও প্রকাশ।
মুখের আকৃতির সঙ্গে মানানসই ফ্রেম বেছে নিলে চেহারার বৈশিষ্ট্যগুলো ফুটে ওঠে ভালোভাবে। কম পাওয়ারের চশমার ক্ষেত্রে প্রায় যেকোনো আকার বা স্টাইলের ফ্রেম ব্যবহার করা যায়। বেশি পাওয়ারের চশমা হলে সাধারণত ছোট ফ্রেম বা মোটা প্রান্তের ফ্রেম বেশি মানায়। চশমা যেন ভ্রুকে ঢেকে না ফেলে, খেয়াল রাখুন সে বিষয়ের দিকেও। রঙের ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম হলো বৈপরীত্য তৈরি করা। চশমা কেনার সময় খুব বেশি ফ্রেম দেখতে যাবেন না। ১০-১২টি বিকল্প দেখেই বেছে নিন। চশমা কেনার সময় আগে নিজে পরে দেখুন। এরপর সেলফি তুলুন। এরপরও যদি দ্বিধায় ভোগেন, তাহলে কাছের বন্ধু বা পরিবারের কারও মতামত নিয়ে নিন।
চশমা পোশাকের মতোই আপনার রুচি আর স্টাইলের অংশ। ভালো চশমা মানে এমন চশমা, যা আপনাকে পরার পরে আত্মবিশ্বাস আর আরামদায়ক অনুভূতি দেবে। আমাদের চেহারা সাধারণত পাঁচ ধরনের আকারের হয়—ডিম্ব, চৌকো, গোল, হৃদয় আর হীরকাকৃতি। আপনার মুখের আকৃতি কেমন, তা আপনি নিশ্চয়ই জানেন। এরপরই নিচের লেখা থেকে ঠিক করে নিন আপনার সঙ্গে কোন ধরনের চশমা মানাবে।
ডিম্বাকৃতি মুখের মানুষদের গালের হাড় তুলনামূলকভাবে উঁচু ও চওড়া হয় আর কপাল হয় সরু। এ ধরনের লম্বাটে ও মোলায়েম মুখের আকারে প্রায় সব ধরনের চশমাই ভালো মানিয়ে যায়। তবে তাঁদের জন্য সবচেয়ে মানানসই হয় ওভারসাইজড ও চওড়া ফ্রেম। চাইলে নির্দ্বিধায় বেছে নিতে পারেন ফাঙ্কি রং আর টেক্সচার। চারকোনা, টর্টয়েজ, আয়তাকার কিংবা ট্রাপিজ (ত্রিভুজাকৃতি চতুর্ভুজ) আকারের ফ্রেমের মতো ভিন্ন আকারও অনায়াসে মানিয়ে যায়। তবে সরু ফ্রেম বা অতিরিক্ত ভারী ডিজাইনের চশমা এড়িয়ে চলাই ভালো; কারণ, এ ধরনের ফ্রেমের চশমা পরলে মুখ অপ্রয়োজনীয়ভাবে আরও লম্বাটে দেখায়।
চৌকো চেহারায় স্টাইল করা যায় ভালো। যাঁদের মুখ চৌকো আকৃতির, তাঁদের জন্য সবচেয়ে মানানসই ছিমছাম কোনার ফ্রেম। কারণ, সাধারণত চৌকো মুখে চোয়াল ও কপাল—দুটোই চওড়া হয়। তাই এ ধরনের ফ্রেম নাকের ওপর একটু উঁচুতে বসে, মুখে বাড়তি দৈর্ঘ্য যোগ করে এবং পুরো চেহারায় আনে ধারালো ভাব। তবে চাইলে গোল বা ডিম্বাকৃতি ফ্রেমও বেছে নিতে পারেন, যা চৌকো চেহারায় কোমল ভাব নিয়ে আসে এবং চেহারাকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে।
গোল মুখের বৈশিষ্ট্য হলো নরম বাঁক ও মসৃণ রেখা, যেখানে চোয়াল থেকে ভ্রু পর্যন্ত প্রায় একই প্রস্থের থাকে। অন্য মুখের আকারের তুলনায় গোল মুখে কোনা বা ধারালো অংশ থাকে না। তাই চারকোনা বা আয়তাকার ফ্রেম বেছে নিলে মুখে একধরনের নাটকীয়তা ও স্টাইল যোগ হবে। গোল মুখের জন্য ক্যাট আই ফ্রেমও বেশ মানানসই। কারণ, এতে মানুষের দৃষ্টি সরাসরি মুখের গোলাকার প্রান্তের বদলে চোখের দিকে টেনে নেয়।
হৃদয়াকৃতি মুখে কপাল সবচেয়ে চওড়া হয়, চিবুক থাকে সরু আর গালের হাড় হয় উঁচু। মুখের সব আকৃতির মধ্যে এটিকেই সবচেয়ে বহুমুখী ধরা হয়। এ ধরনের মুখে মানায় উইংড-আউট ফ্রেম বা আয়তাকার ফ্রেম, যেসবের নিচের অংশ হয় ভারী আর চশমার ডাঁটি থাকে নিচে বসানো। এতে দৃষ্টি নেমে যায় নিচের দিকে, ফলে মুখের নিচের অংশ বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। হালকা রঙের বা রিমলেস ফ্রেমও এই চেহারায় বেশ ভালো মানায়; মুখে প্রায় অদৃশ্য সুন্দর লুক তৈরি করে।
ডায়মন্ড আকৃতির চেহারার জন্য চশমা বেছে নেওয়ার সময় সামঞ্জস্য বজায় রাখা জরুরি। স্টাইলিশ লুকের জন্য ক্যাট আই বা হর্ন রিম ফ্রেমও ব্যবহার করা যায়, তবে খুব ভারী বা অতিরিক্ত দৃষ্টি আকর্ষণ করবে, এমন স্টাইল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
সূত্র: ভোগ