২৪ ঘণ্টার সঙ্গী মুঠোফোনটিকে নিজের পছন্দমতো অনুষঙ্গে সাজিয়ে ফ্যাশনের একটা অংশই করে তুলছে জেন–জি। ‘ফোন চার্ম’ তাদের কাছে এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাগ বা পকেটের ভেতরে রাখার বদলে এখন ফোন ঝোলে হাতে কিংবা কবজিতে।
এতে যুক্ত থাকছে বিভিন্ন ধরনের রঙিন পুঁতির চেইন, পুতুল, ছোট্ট টেডি বিয়ার কিংবা হার্ট আকৃতির অবয়ব। কোরীয় ও জাপানিদের কাছে ফোন চার্ম বেশ আগে থেকেই জনপ্রিয়।
অনেকে নিজের পছন্দের কে-পপ আইডলের নাম, ছবি বা বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করছেন ফোন চার্মে। আবার জাপানি অ্যানিমেশন–ভক্তরা ফোন চার্মে ব্যবহার করেন তাঁদের পছন্দের অ্যানিমে চরিত্র।
তবে ফোন চার্মগুলো এখন শুধু কিশোরী বা তরুণীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, দেখা যাচ্ছে তারকাদের হাতেও। মডেল জিজি হাদিদ থেকে শুরু করে অভিনেত্রী অনন্যা পান্ডে—সবাই এখন ফোনে লাগাচ্ছেন নানা স্টাইলের ফোন চার্ম।
জেন–জির এই নতুন ফ্যাশন অনুষঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করছে ব্যক্তিত্ব এবং আগ্রহ, পাশাপাশি নিত্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিপণ্যটাও হয়ে উঠছে অন্য রকম সুন্দর।
আজকাল প্রায় সব মুঠোফোন দেখতে একই রকম লাগে। বেশির ভাগই কালো, ধূসর বা সাদামাটা রঙের। ফোন চার্ম জেন-জিদের ফোনগুলোকে নিজের মতো করে সাজিয়ে তুলছে। এখানেই ফুটে উঠছে ব্যক্তির নিজস্বতা। নিজের প্রিয় রং, প্যাটার্ন বা চরিত্র বেছে নিয়ে জেন–জি ফোনকে সাজাচ্ছে পছন্দমতো।
জেন-জিদের ভাষায় ২০০০ সালের শুরুর দিকের ফ্যাশনকে বলা হয় ‘ওয়াইটুকে স্টাইল’। সে সময় পুঁতির তৈরি ব্রেসলেট ও চেইন বেশ জনপ্রিয় ছিল। কেউ কেউ সেসব ঝুলিয়ে রাখতেন মুঠোফোনেও। ২০০০ সালের সেই ফ্যাশনই এখন জেন-জিদের কাছে ফিরছে নতুন রূপে।
মুঠোফোন সব সময় হাতে রাখতেই পছন্দ করে তরুণ প্রজন্মের সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রস রিভার থেরাপির গবেষণামতে, মানুষ এখন দিনে প্রায় প্রতি ১২ মিনিট পরপর ফোন দেখে। অনেকে তো মুঠোফোনটা ব্যাগে বা পকেটেও রাখতে চায় না। মুঠোফোন হাতে ধরে রাখার ঝামেলা কমিয়েছে এই ফোন চার্ম।
আজকাল দেশে মুঠোফোন চুরি হচ্ছে অহরহ। পথে চলাফেরার সময় হঠাৎ করেই ব্যাগ থেকে হয়ে যায় গায়েব। তাই নিরাপত্তার জন্যও অনেকে ফোন চার্ম বেছে নিচ্ছেন। কারণ, ফোন চার্ম থাকলে ছিনতাইকারী খুব সহজে ফোন টান দিতে পারে না। এতে কিছুটা হলেও ফোনটা নিরাপদে থাকে।
টিকটক, ইনস্টাগ্রাম বা ইউটিউবের রিলসে এখন হরহামেশা দেখা যাচ্ছে ফোন চার্ম বানানোর ভিডিও। খুব সহজেই তৈরি করা যায় বলে এসব ভিডিও দেখে অনেকেই নিজে নিজেই বানাচ্ছেন ফোন চার্ম, কেউবা তা বানিয়ে উপহার দিচ্ছেন বন্ধুদের।
সূত্র: গার্ডিয়ান ও ফিন্যান্সিয়াল টাইমস