Thank you for trying Sticky AMP!!

মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেবেন যে ৭ উপায়ে

শখের কাজগুলোর চর্চা করলে মস্তিষ্ক যথেষ্ট বিশ্রাম পায়

বিশ্রাম নেওয়ার কথা শুনলে আপনার মাথায় সবার আগে কী আসে? রাতে ভালো করে ঘুম, সোফায় হেলান দিয়ে টিভি দেখা আর না হয় দিনে একটু-আধটু ঘুম। দৈনন্দিন জীবনে এসব কাজের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে সঠিক বিশ্রাম মানে শুধু ঘুমানো বা টিভি দেখা নয়, আমাদের মস্তিষ্ককে পর্যাপ্ত বিরতি দিয়ে এর কর্মক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে দেওয়া৷ তাই সব সময় ঘুমিয়ে নয়, কিছু না কিছু করেও মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়া যায়। গবেষকেরা মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ নিরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেছেন, সক্রিয় থাকা অবস্থাতেই সবচেয়ে ভালোভাবে বিশ্রাম নিতে পারে মস্তিষ্ক। যখন আমরা কোনো কাজ থেকে আমাদের মনোযোগ অন্য কোনো কাজে সরিয়ে নিই, তখন মস্তিষ্কের ‘ডিফল্ট মোড নেটওয়ার্ক’ আরও সক্রিয় হয়।

মস্তিষ্ককে খুব ভালো করে বিশ্রাম দিতে চাইলে যে সাত উপায় অবলম্বন করবেন...

সক্রিয় বিশ্রামে মনোনিবেশ করুন

খুব মনোযোগ দিয়ে কোনো কাজ করার সময় তা থেকে খানিক্ষণের জন্য মনোযোগ সরিয়ে অন্য কোনো কাজ করাকে বলে সক্রিয় বিশ্রাম। মনোযোগ সরানোর জন্য জিমে গিয়ে ব্যায়াম করা বা কোথাও গিয়ে একটু হেঁটে আসা খুব ভালো উপায় হতে পারে। জিমে গিয়ে ব্যায়াম করার সময় আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন। ক্লান্ত হলেও এটি মস্তিষ্কের জন্যে ‘বিশ্রাম’। মনোবিজ্ঞানবিষয়ক একাধিক বইয়ের লেখক অ্যালেক্স সুজং-কিম পং বলেন, ‘ঘরের কোণে সোফায় বসে টিভি দেখার চেয়ে পডকাস্ট শুনতে শুনতে হেঁটে এলে আমাদের মস্তিষ্ক অনেক বেশি বিশ্রাম পায় এবং কর্মক্ষম হয়।’

Also Read: জেনে নিন দেশের জনপ্রিয় ১০ ক্যাম্পিং সাইটের খোঁজ

সারা দিনে কী কী করবেন, তার একটা ছোট তালিকা আগেই করে রাখুন

শখের কাজগুলোর চর্চা করুন

গান শেখা, ছবি আঁকা, ছবি তোলা, বাগান করার মতো শখের কাজগুলোর চর্চা করলে মস্তিষ্ক যথেষ্ট বিশ্রাম পায়। হাতের কাছে ক্যামেরা থাকলে তা নিয়ে কোনো এক বিকেলে বেরিয়ে পড়তে পারেন। ছবি তোলার জন্য এখন আর দামি ক্যামেরার দরকার পড়ে না। যেকোনো ভালো স্মার্টফোনেই এখন দারুণ ছবি তোলা যায়। কিংবা গিটারের তারে টুংটাং সুর তোলার চেষ্টা করেও দেখতে পারেন। এসব শৌখিন কাজের চর্চা আপনার মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিয়ে কর্মোদ্যমী করে তুলবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন

যেকোনো কাজ একটানা না করে মাঝে অল্প বিরতি নিলে মনটা চাঙা হয়, মাথায় নতুন নতুন আইডিয়া আসে এবং অনেক বেশি সৃজনশীল হওয়া যায়। ২০০৯ সালে প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির চার গবেষকের করা এক গবেষণাপত্র বলছে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে অল্প করে বিরতি নিয়ে কাজ করলে কাজে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়, কাজটি সম্পন্ন করার নতুন নতুন আইডিয়াও মাথায় আসে।

তালিকা ধরে কাজ করুন

সারা দিনে কী কী করবেন, তার একটা ছোট তালিকা আগেই করে রাখুন। এই তালিকায় খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোই রাখবেন। ছোট ছোট কাজ বা যেগুলো না করলেও চলে, সেগুলো তালিকায় রেখে অযথা তালিকাটি দীর্ঘ করবেন না। দিনের মধ্যে কাজগুলো করে শেষ করার পর দেখবেন আপনার হাতে যথেষ্ট সময় আছে।

হাতে থাকা এই সময় শখের কাজগুলো করতে পারেন। এমন কিছুই করবেন যেন মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়।

পারলে ছুটিতে নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যান

‘টেকব্রেক’ নিন

ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন থেকে বিরতি নিন। এসব প্রযুক্তিগত জিনিসপাতি থেকে দূরে থাকাই ‘টেকব্রেক’ (Tech-brake)। যথাসময়ে টেকব্রেক নিতে পারলে আপনার মস্তিষ্কের ওপর থেকে চাপ কমে যাবে অনেকটাই। যেমন ধরুন, আমরা অনেকেই কম্পিউটারে কাজ করার সময় ব্রাউজারে ই–মেইলের ইনবক্স চালু করে রাখি। নতুন ই–মেইল এল কি না, কখন আসবে, এসব চিন্তা আমাদের মস্তিষ্ককে অনেক বেশি ক্লান্ত করে। তাই মস্তিষ্ককে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে সময়ে সময়ে টেকব্রেক নিন।

সময় কিসে নষ্ট হয়, খুঁজে বের করুন

বেশির ভাগ মানুষই জানেন না, কিসে তাঁদের সময় ব্যয় হয় বেশি। অনেক সময় দেখা যায়, কম গুরুত্বপূর্ণ কাজে বেশি সময় ব্যয় হয়। ফলে দিনের সব কাজ গুছিয়ে নিজের জন্য হাতে আর সময় পাওয়া যায় না। অথচ একটু বাড়তি সময় পেলে মস্তিষ্ককে বিরাম দেওয়া যেত। তাই আপনার সময় কিসে ব্যয় হয় বেশি আর কিসে হয় না, জেনে নিন ভালো করে। কোন কাজগুলোকে আপনার বেশি প্রাধান্য দেওয়া উচিত, আপনাকেই সেটা বুঝে নিতে হবে। এভাবে গুছিয়ে নিলে দিন শেষে মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় আপনার হাতে থাকবে।

নিয়মিত ও ভালো করে ছুটি কাটান

বেশি বেশি কোনো কিছুই ভালো নয়। একইভাবে দীর্ঘ ছুটিও ভালো নয়। নিজেকে ‘রিস্টার্ট’ করার জন্য আট দিনের নিরবচ্ছিন্ন ছুটিই যথেষ্ট। কিম পং পরামর্শ দেন, ‘সুযোগ পেলে প্রতি ৩ মাস পরপর অন্তত এক সপ্তাহ ছুটি নিন।’ পারলে ছুটিতে নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যান। কোনোভাবেই ছুটির সময়টি নষ্ট করবেন না। ১২ হাজারের বেশি মধ্যবয়সী ব্যক্তির ওপর করা এক গবেষণা বলছে, যারা নিয়মিত ছুটি কাটাতে যায়, তাদের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে অনেক কম।