Thank you for trying Sticky AMP!!

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেই আগস্টেই লেখা কবিতা

>
মীর গুল খান নাসির
বেলুচিস্তানের প্রথম সারির কবি মীর গুল খান নাসির (১৯১৪—১৯৮৩)। ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিজ জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার থাকায় পাকিস্তানি শাসকদের নির্যাতনের শিকার হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডের সময় মীর গুল খান ছিলেন কারাগারে বন্দী। বঙ্গবন্ধু হত্যার ১৪ দিন পর ১৯৭৫ সালের ২৯ আগস্ট কারাগারে বসেই তিনি এই কবিতা লেখেন।


মীর গুল খান নাসির
ভোর কোথায়?
চিৎকার, ক্রন্দন আর শশব্যস্ত আহ্বানের মধ্যে
উল্লাস করছে অন্ধ জনতা।

ওরা বলে, ‘এখন ভোর’, কিন্তু জীবনপানে তাকিয়ে
আমি দেখি রাত্রি, ঘোর অমানিশা।
বিদ্যুৎ চমকানো আর বজ্রপাতে মনে হয় দূরে বৃষ্টি হচ্ছে,
কিন্তু বাতাসে বৃষ্টির নামগন্ধ নেই
রক্তের ধারা বইছে প্রবল।
হে নির্বোধের দল, কোথায় উজ্জ্বল প্রভাত?
এখানে এখনো ক্রুদ্ধ রাত
এজিদরূপী সাম্রাজ্যবাদীরা এখনো চূর্ণ করছে
সাহসী দেশপ্রেমিকের হাড়,
জনবহুল, চিত্রময় বাংলাদেশে আবারও রক্তের ঝড়।
সাম্রাজ্যবাদের দালালেরা আবারও জ্বালিয়ে দিচ্ছে গ্রাম-নগর,
মহান দেশপ্রেমিক মুজিব নিজ রক্তের সাগরে শায়িত
সাম্রাজ্যবাদের অভিশপ্ত সেবাদাসেরা তাঁকে
রক্তের জামা পরিয়ে দিয়েছে এবং বিদ্ধ করেছে বুলেটে
এজিদের বিরুদ্ধে হোসেনের কাহিনির পুনরাবৃত্তি।
হে সাহসী কমরেডগণ, এজিদ থেকে সতর্ক হও,
তোমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হও, পরাস্ত হবে তারা
তাদের মুখ তাদেরই কিন্তু জবান সাম্রাজ্যবাদীদের।
সেবাদাসেরা ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের পকেট স্ফীতকায়
এবং সাহসী দেশপ্রেমিকদের খতম করে দিতে
সাম্রাজ্যবাদীদের কাছ থেকে জোগান আসতেই থাকবে
তারা পাঠাবে ভাড়াটে লোক ও অস্ত্র
এই কাপুরুষদের কোনো দয়া-মায়া নেই,
এদের কারণেই বিশ্বে এখন ঘোর অন্ধকার।
মুক্তির শিখা কোথাও জ্বলে উঠলে এরা তা নিভিয়ে দেয় দ্রুত
বঙ্গবন্ধু মুজিব সপরিবারে নিহত ওদের হাতে
আবারও স্বাধীনতার পতাকা অর্ধনমিত।
সাম্রাজ্যবাদীরা আবারও ফিরে গেছে তাদের সেই পুরোনো
চক্রান্তে, বিশ্বাসঘাতকতায়
আবারও দ্বন্দ্বের ফয়সালা হচ্ছে বন্দুকের নলে
আবারও সোনার জমিনে জ্বলছে আগুন
হে বন্ধুরা, এভাবেই সময়ের মুখোমুখি আমরা
আমার মাতৃভূমি বেলুচিস্তানও জ্বলছে এখন
ভয় পেয়ো না হে সাহসী যোদ্ধারা, থেমে যেয়ো না,
কণ্টকিত দুর্গম পথ এখনো অনেক বাকি।
মুজিবের রক্ত কখনোই বৃথা যাবে না,
দেশপ্রেমিকের জন্য এ এক অগ্নিপরীক্ষা।
বেশিক্ষণ নয়, কুয়াশা ও আঁধার সত্ত্বেও
এই ভয়াল রাত্রি দ্রুত কেটে যাবে
হৃদয় দিয়ে নাসির স্পষ্ট দেখতে পায়
বিজয়-পতাকা উড়ছে।

অনুবাদ: রিজওয়ান উল আলম