
আইরিশ লেখক জেমস জয়েস সম্ভবত একই সঙ্গে গত শতকের সবচেয়ে নন্দিত ও নিন্দিত লেখকদের একজন। মৃত্যুর সময়ও শেষ কথা হিসেবে যিনি বড় আক্ষেপ নিয়ে বলেছিলেন, ‘কেউই কি বুঝল না?’ আসলেই কি জেমস জয়েসকে জীবদ্দশায় কেউই বুঝতে পারেনি?
প্রশ্নটির উত্তরে তাকাতে হবে ইতিহাসের দিকে। ছোটবেলা থেকেই জেমস জয়েস ছিলেন অসামান্য প্রতিভার অধিকারী। মাত্র ৯ বছর বয়সে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কবিতা। ১৭টি ভাষায় কথা বলতে পারতেন তিনি। তারপরও জয়েসের ‘কেউই কি বুঝল না’ ধরনের প্রশ্নযুক্ত আক্ষেপের কারণ কী?
জয়েসের লেখা কালজয়ী উপন্যাস ইউলিসিস ও ফিনেগান্স ওয়েক বহু পাঠককে যেমন দিয়েছে দুর্গম অন্ধকার পথ পেরিয়ে রহস্য উন্মোচনের আনন্দ, তেমনি তাঁকে আক্রান্ত করেছে দুর্বোধ্যতার অপবাদে। ১৯২২ সালে প্রকাশের পরপর ইউলিসিস উপন্যাস সম্পর্কে অনেকের অভিব্যক্তি ছিল, এটি দুর্বোধ্য। বিশেষত জয়েসের সমকালীন খুব কম লেখকই উপন্যাসটিকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছিলেন। জয়েসের লেখা তাঁর সমসাময়িক লেখক ভার্জিনিয়া উলফ একদমই পছন্দ করতেন না। আবার বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি লেখক এইচ জি ওয়েলস জয়েসের ফিনেগান্স ওয়েক-এর ব্যাপারে বলেছিলেন, ‘কে এই জয়েস, যে মনে করে, আমার জীবনের যে অল্প কয়েক হাজার ঘণ্টা বাকি রয়েছে, তা আমি অপচয় করব তাঁর লেখার অর্থহীন খামখেয়ালি ও চাকচিক্যের অর্থোদ্ধারে সময় নষ্ট করে?’
জেমস জয়েস আজীবন যে দুর্বোধ্যতার দায় বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছেন, তা হয়তো মৃত্যুর আগেও তাঁকে ছাড়েনি। তাই মারা যাওয়ার আগে তাঁর শেষ কথা ছিল, ‘কেউই কি বুঝল না?’
সূত্র: মেন্টালফ্লস ডটকম
গ্রন্থনা: মাহীন হক