
ব্রহ্ম বায়ুর উদ্দেশে একটি তৃণ রেখে বললেন, একে গ্রহণ করো।
যথা, বায়ুর সাধ্য কী একে উড়িয়ে নেয়, এ যে যক্ষ! সংসারে,
কবি, এইরূপ একটি তৃণ। সে শুধু জনে জনে শুধায়, ওহে, দেখো,
বীণাবাদক ক্রমে কী রকম বীণা হয়ে উঠছে। আর গোলাপ,
হেলে পড়ছে নগ্নতার দিকে। বাক্যই তার মৈত্রেয়ী ও চক্ষু।
শব্দের আত্মাকে উপাসনা করে এক ফোঁটা অমৃত যদি মেলে!
তাকে হতে হয় দ্বিতীয় সেই পাখি, যে প্রথম পাখির
ফল খাওয়া দেখছে। তার সর্বাঙ্গে অন্ধ রাজার ভঙ্গি।
কখনো তোমার মধ্যে জেগে ওঠে আয়না, ধূলিঝড়, মৃত্যু, ময়ূর
কখনো তোমার মধ্যে নিভে যায় শব্দ, রংধনু, অশ্বিনীতারা...
এখন পৃথিবীকে দেখো ডানা মুড়ে বসে থাকা বৃদ্ধ ইগলের চোখে
এখন স্বপ্নেও তুমি বিশাল থাপ্পড় খাও ভূতের
এখন একমাত্র সঙ্গী ঘুমপ্রিয় এক খরগোশ, যার ভবিতব্য ধূসর।
স্বপ্নের চারণভূমিজুড়ে সেই খরগোশের মেকআপ রুম
ফুটে ওঠে ধীরে ধীরে—
এই সৃষ্ট জগৎ থেকে সৃষ্টির অতীত অধ্যায়ে কীভাবে যাবে
সময়হীন গুহা থেকে কে বেরিয়ে আসে ঝলসানো ছুরি হাতে
ভাবো তার কথা আর বিষাদ গ্রহণ করো নক্ষত্রের
তারপর ক্লক-টাওয়ারের নিচে তার জন্য
অপেক্ষা করে করে ঘুমিয়ে পড়ো।
বর্ম পরে আমি আর কিরো প্রবেশ করলাম শিশমহলে,
আমাদের আগে যারা এসেছে এখানে, তারাও প্রত্যেকে কিরো;
বস্তুত জীর্ণ হয়ে আসা একটা পুঁথির দিকে
ঝুঁকে আছি সবাই, এর পাতায় পাতায় রতিদানবের মুখ
আর সেই জটিল অভিব্যক্তিময় মুখ ঘিরে অক্ষরের অভিশাপ উড়ছে।
একজন কিরো অন্য এক কিরোর মুখোমুখি হলে অতীন্দ্রিয় দুঃখের
সূচনা হয়, শোনা যায় তারা প্রত্যেকে যুদ্ধের সন্তান, তারা হয়তো
রিক্ত অরণ্যের পটভূমিজুড়ে ইষ্টিকুটুম পাখি।