অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান
অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

গুচ্ছকবিতা

তোমাকে ভুলে যেতে ইচ্ছে করছে না

ঝড়ের প্রারম্ভে

‘কথা না হলে ক্ষতি ছিল না’র অপর পিঠে থাকে শূন্যতা।

ধীরজ কচ্ছপগতি, পিঠে তার শতবর্ষী পুরুষের স্বাদ।

একটা কচ্ছপ কয়টা পৃথিবী দেখে?

যতগুলো পৃথিবীর ভার আমাদের চোখে-মুখে-ঠোঁটে?

যতগুলো পৃথিবী নিয়ে তুমি হাঁটতে থাকো মিছিলে?

মদের মতন তুমি

কণ্ঠ থেকে মদ তুলে নিয়ে গিলে খাচ্ছি রোজ।

তবু ভাসানো যাচ্ছে না তোমাকে।

তোমার অবয়ব মিছিলের মুখ।

এড়ানো যাচ্ছে না তোমাকে।

তুমি ঘোর কলিকাল, ভীষণ বিষাদ।

যেমন বুদবুদ তোলা ডুবন্ত মাছ,

তোমাকে ভুলে যেতে ইচ্ছে করছে না।

অথচ গড়েপিটে রাখা তীব্র ইমেজ

মন ও মগজ

তারকাঁটা হা–হুতাশ

বলছে কেবল—

অন্যথায় ঘোর বিপদ!

তবু—

শশী ডাক্তার, কুসুম, আনন্দ, হেরম্ব, কাদম্বরী

সব হামলে পড়ছে।

আর বলছে—

মুক্তোভরা ঝিনুক এমন হেলায়

হারাতে দিয়ো না কিছুতে।

গুহাচিত্রের মুখ

তোমার সাথে হাঁটতে না পারার বিষাদে

দেয়ালে আলো-আলো গুহাচিত্র আঁকে

ভোর ও সকাল।

এবড়োখেবড়ো দেয়াল জানালার ওপার

অন্য এক দালানের পেছন।

সম্মুখে যার মসৃণ সাদা

ঈদের নতুন আলো ও রং।

অথচ কী গভীর ও গোপন

গুহার মতন এই পেছন দেয়াল।

খড়খড়ে পলেস্তরা-খসা আদিম ও অটল।

যেমন সন্তর্পণে তুমি

পা ফেলো কদাচিৎ

আর খসে যায়

ঝড় ও জল।

বৃষ্টিদিন

জলে ভেজা হাত

কোমল করে ধরো।

যত নরম

পুরুষ হতে পারো।

পায়ে পরা মল

আলগা করে খুলো।

যেন দুধপুলি

নকশা-তোলা গাঢ়।

বৃষ্টিদিনে ন্যুড কালারের শার্ট

জানি তুমিও উবে যাবে

যেমন উবে গেছে জল

চা হওয়ার আগে।

তবু ফুরানোর কালে

যতটা জমা রাখা চলে।

ন্যুড কালারের শার্টে

ভেজা চুল ঠেকালে

যেমন গুহাচিত্র

আঁকা থাকে বুকে।