অভিমত

ছুটি হোক আনন্দের, শিশুরা থাকুক নিরাপদে

সামনে ঈদের ছুটি। ঈদের ছুটি কাটাতে পরিবারের সঙ্গে অনেক শিশু গ্রামে বা মফস্‌সলের কোনো শহরে যাবে। ঈদের ছুটিতে শিশুদের নিরাপদে থাকা নিয়ে লিখেছেন গওহার নঈম ওয়ারা

উৎসব ঘিরে বড় ছুটি এলেই মানুষ চেষ্টা করে সবাই মিলে সেটা উদ্‌যাপনের। নগরজীবনের ব্যস্ততা কাটিয়ে একটু আনন্দ-অবসরের সুযোগ খুঁজতে অনেকেই মা-বাবার কাছে ফিরে যান গ্রামে বা মফস্‌সলের কোনো শহরে বা গঞ্জে। বাড়িতে পৌঁছানোর পর পরিবারের বড় সদস্যদের তুলনায় শিশুরা দাদা-নানা ও খালা-ফুফুদের সঙ্গে অনেক বেশি আনন্দে মেতে ওঠে। মেতে ওঠে সমবয়সী বা কাছাকাছি বয়সের চাচাতো-মামাতো-ফুফাতো-খালাতো ভাইবোনদের সঙ্গে। পাড়ার ছেলেমেয়েরাও সঙ্গী হয়ে ওঠে। দল বেঁধে ঘোরাফেরা, গোসল করা, মাছ ধরা, সাঁতার শেখা-কাটা, গাছে চড়া, মোটরসাইকেল চালানো—সবই চলে আনন্দের উপাচার হিসেবে।

গত বছর ঈদের ছুটিতে সূচনা আর মৌ একই বয়সী দুই খালাতো বোন গাজীপুর থেকে তাদের নানাবাড়ি শরীয়তপুর গিয়েছিল। সেখানে ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল দুপুরে নানাবাড়ির পাশে কীর্তিনাশা নদীতে বান্ধবীদের সঙ্গে গোসল করতে নামে সূচনা ও মৌ। ওই সময় নদীর স্রোতে পানিতে তলিয়ে যায় সূচনা, মৌ ও মেঘা আক্তার (১৬) নামের আরও এক কিশোরী। এ সময় নদীর তীরে থাকা এক ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মেঘা আক্তারকে উদ্ধার করে। তবে সূচনা ও মৌকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

প্রায় একইভাবে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ঈদের ছুটিতে নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়ে ঘেরের পানিতে গোসলে নেমে ডুবে যায় ১২ বছরে মোনালিসা। সে এসেছিল গোপালগঞ্জ থেকে। মোনালিসা তার মামাতো ভাইবোনের সঙ্গে ঘেরে গোসল করতে গিয়েছিল। মামাতো ভাইবোনেরা চিৎকার করলে স্থানীয় ব্যক্তিরা ছুটে এলেও মোনালিসাকে বাঁচানো যায়নি।

গত ঈদের ছুটিতে (২০২৩), অর্থাৎ ঈদের আগে ও পরে (১৯-২৭ এপ্রিল) প্রায় ৪৪টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এর মধ্যে ৯টি ঘটনায় একই সঙ্গে দুই ও তিনটি শিশু মারা যায়। হয়তো একজনকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য শিশুরাও পানিতে ডুবে যায়। গত ঈদুল আজহার ছুটিতে (২৫ জুন থেকে ৫ জুলাই) ৭৯ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। (সূত্র: দুর্যোগ ফোরাম ও বিভিন্ন পত্রপত্রিকা থেকে সংগৃহীত)

পানিতে ডুবে মৃত্যুর কারণ

এখন পর্যন্ত পানিতে ডোবা শিশুদের নিয়ে যে ছিটেফোঁটা গবেষণা হয়েছে, তাতে কতগুলো বিষয় পরিষ্কার: সারা বছর যত শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, তার কমপক্ষে প্রায় ৩৫ শতাংশ মারা যায় বিভিন্ন লম্বা ছুটির সময়—পালা, পার্বণ, উৎসব, আনন্দের দিনে। এ ছুটি রাষ্ট্রীয় হতে পারে বা একান্ত পারিবারিক ছুটিও হতে পারে।

দেশ-গ্রামের বিস্তৃত পরিসরে আরও অনেক সমবয়সী ভাইবোন, চেনাজানাদের নিয়ে বেড়াতে আসা শহরবন্দী শিশুটির চেখে দেখার পরিসর বেড়ে যায়। সে উচ্ছল হয়ে ওঠে। নতুন জিনিস দেখার, নতুন কিছু করার আগ্রহে ছুটে যায় নদী, পুকুর, ডোবা, জলাশয়ের কাছে। তাদের মধ্যে সাঁতার জানা দু-একজন হয়তো বীরত্ব দেখাতে ঝাঁপ দেয় পানিতে।

শহরের শিশুটি বা বেড়াতে আসা ক্ষণিকের শাসনমুক্ত শিশুটিও ভাবে, ও পারলে আমিও পারি। ঝাঁপ দেয় সাঁতার না-জানা শিশুটিও। তাকে খাবি খেতে দেখে কেউ ভাবে অভিনয়, আবার কেউ ভাবে টেনে তুলি। সাঁতার জানা আর ডুবন্ত মানুষকে টেনে তোলা এক নয়। একসঙ্গে দুই ভাইবোন বা একাধিক জ্ঞাতি ভাইবোন ডুবে যাওয়ার মর্মান্তিক খবর এভাবেই তৈরি হয়।

গবেষকেরা তত্ত্ব-তালাশ করে আরও কিছু কৌতূহল-জাগানিয়া সত্যের সন্ধান পেয়েছেন। যেমন এসব শিশু মা বা তত্ত্বাবধায়কের ১০০ গজ দূরত্বের মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটছে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে, অর্থাৎ মায়েরা যখন ঘরকন্নার কাজে ব্যস্ত থাকছেন। বেশির ভাগেরই বয়স চার বছরের নিচে। তবে যেখানে একসঙ্গে দু-তিনজন বা তার বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে, সেখানে পাঁচের বেশি বয়সী শিশুরাও আছে এবং প্রায় সব ক্ষেত্রে একটু বড় শিশুরা উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেরাও মারা যাচ্ছে।

অভিভাবকদের গাফিলতি, শিশুর সাঁতার না-জানা, তাদের দস্যিপনা, অহেতুক কৌতূহল ইত্যাদিকে পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। গত ছয় বা সাত বছরে পানিতে ডোবার ঘটনাগুলো একটু খতিয়ে দেখলে অন্য একটা কারণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দুঃখজনকভাবে সেই কারণটি গবেষকদের নজর এড়িয়ে গেছে। হঠাৎ খিঁচুনি দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝোঁক আছে, এমন শিশুদের পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা একেবারেই কম নয়।

খিঁচুনির নানা ধরন থাকলেও আমাদের দেশে সাধারণভাবে এটা মৃগীরোগ নামে পরিচিত। সম্প্রতি নানা সংবাদমাধ্যম প্রকাশিত ২২ জনের মৃত্যুর খবর বিশ্লেষণ করে দুর্যোগ ফোরাম জানাচ্ছে, এর মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজনের খিঁচুনির ধাত বা মৃগীরোগের আলামত ছিল। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় যে ইমন হাওলাদার পানিতে পড়ে মারা যান, তিনি কথিত রোগে ভুগছিলেন। পানিতে ডুবে মৃত মেহেরপুর সদর উপজেলার খোকসা গ্রামের আজমল হোসেনও মৃগীরোগে আক্রান্ত ছিলেন।

গবেষকেরা বলছেন, মৃগীরোগে আক্রান্ত শিশুরা পানিতে পড়ে গেলে খিঁচুনিসহ দ্রুত জ্ঞান হারানোর আশঙ্কা বেশি থাকে। আর যাদের মৃগীরোগ নেই, তাদের ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম। যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত নিউরোলজিস্ট ড. লে সানডার এ বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত যে মৃগীরোগের উপসর্গ থাকলে শিশুদের পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। তিনি ও তাঁর দল ৮৮টি পানিতে ডোবার ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, পাঁচজন ছাড়া বাকি সবাই মৃগী বা মৃগীরোগ-সংক্রান্ত কোনো না কোনো জটিলতায় ভুগছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনলাইন পত্রিকা মেডপেজ টুডে লে সানডারের গবেষণার সূত্র ধরে জানিয়েছে, অন্যদের চেয়ে মৃগীরোগীদের পানিতে ডোবার আশঙ্কা ২০ গুণ বেশি। আবার বিশেষ ধরনের মৃগীরোগীর ক্ষেত্রে এটা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৭ গুণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আর্থিক সহায়তায় এক জরিপে (২০১৭) জানা গেছে, আমাদের দেশে প্রতি হাজারে কমপক্ষে ৯ জন মৃগীরোগী আছে। কিন্তু আমাদের অভিভাবকদের অনেকেরই মৃগীরোগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সাম্যক কোনো ধারণা নেই। আবার জানা থাকলেও সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে বিষয়টি অনেকে চেপে যায়।

খিঁচুনির ধাত আছে এমন শিশুদের যে তত্ত্বাবধান ছাড়া পানি, আগুন কাছে নেওয়া ঠিক নয়, এটা জানলেও আত্মীয়স্বজনের সামনে অভিভাবকেরা সেটা বলতে ইতস্তত করেন। ফলে শিশুটির ঝুঁকি বেড়ে যায়। জানাজানির ভয়ে ভীত মা-বাবারা শিশুর মৃগীরোগের উপসর্গ দেখা দিলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা না নিয়ে গোপনে ঝাড়ফুঁক, পানি পড়া, মাদুলি-তাবিজের ব্যবস্থা করেন।

একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানালেন, ‘অনেকে মনে করেন মৃগীরোগ একটা প্রাকৃতিক অভিশাপ। ভাবেন, এ রোগের কোনো সঠিক চিকিৎসা নেই। এই রোগীর লেখাপড়া, বিয়েশাদি, সংসার—কিছুই হবে না। ফলে রোগটি গোপন করে রাখেন। ফলে চিকিৎসা না করিয়ে আরও ক্ষতি করা হচ্ছে।’

এবার ঈদে গরম একটা বড় চ্যালেঞ্জ, সেই সঙ্গে আছে ক্রমবর্ধমান মশার উপদ্রব। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো বিস্তার লাভ করছে ভাইরাসজনিত ফ্লু। অনেক শিশু ইতিমধ্যেই ভয়ংকর এই ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে।

সড়কেও প্রাণ ঝরে অনেক শিশু-কিশোরের

পঞ্চগড় সদর উপজেলার (হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরিরডাঙ্গা-বালুরঘাট এলাকায় তালমা-মডেলহাট সড়ক) মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা পঞ্চগড়বাসী কখনো ভুলবে কি? ঈদের পরের দিন মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল তিন কিশোর। পথে তাদের মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য আরেকটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোটরসাইকেলসহ তারা সড়কের পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ঘটনায় তিনজনই মারা যায়।

ঈদের দিন মেহেরপুর শহরের জিসান, সামিউল, সাদাত ও সিয়াম তিনটি মোটরসাইকেলে করে মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহর ঘুরে বাড়ি ফিরছিল। নতুন দরবেশপুর এলাকায় পৌঁছালে সামনে থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে জিসানের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি ধাক্কা লাগার উপক্রম হয়। জিসান মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারালে যানটি রাস্তার কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা খায়। পেছনে থাকা দুটি মোটরসাইকেলের চালকও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে জিসানের মৃত্যু হয়। আর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহত অন্যদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর সামিউল মারা যায়। সবার বয়স ১৩ থেকে ১৪ বছর।

অন্য এক ঘটনায় ঈদের আনন্দে বন্ধুদের নিয়ে মোটরসাইকেলে লালমনিরহাটের বুড়িমারী কামারেরহাট থেকে তিন বন্ধু মিলে পাটগ্রাম যাওয়ার পথে মেসিরপার এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় তিন বন্ধু ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা ঘটনাস্থল থেকে তাদের দ্রুত উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক গোলাম রাব্বিকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ঈদে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫১ শতাংশের বয়স ১৩ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। দুর্ঘটনার সব পরিসংখ্যান কখনো কেউ জানতে পারে না। কেবল বড় দুর্ঘটনা আর মৃত্যুর খবরই চাউর হয়। মৃত্যুর খবরের বাইরেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলো নথিভুক্ত হয় না। অনেক পঙ্গুত্বের খবর চাপা পড়ে থাকে।

কী করা যায়

ছুটির আনন্দকে আরও উপভোগ্য করার স্বার্থে শিশু, বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিশেষ নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। বাড়ির বড়দের এটা নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণা বলছে, মা বা তত্ত্বাবধায়কের ১০০ গজ দূরত্বের মধ্যেই শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় বা দুর্ঘটনার শিকার হয়। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটছে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে, অর্থাৎ মায়েরা যখন ঘরকন্নার কাজে ব্যস্ত থাকছেন। শুধু এই সময়টায় নজরদারি বাড়ালে অনেক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

যেসব শিশুর সামান্যতম খিঁচুনির ঝোঁক আছে, তাদের কোনোভাবেই উপযুক্ত পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির তত্ত্বাবধান ছাড়া পানি, আগুন (বাজি পোড়ান), গাছে চড়া ইত্যাদিতে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। যেসব শিশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাচ্ছে, তাদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার সময় ওষুধ সঙ্গে রাখতে হবে।

ঈদ বা যেকোনো বড় ছুটির আগে-পরে শিশু-কিশোরদের মোটরসাইকেল চালানো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত করা উচিত। এটা ট্রাফিক কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলেই পারে। থানার আওতাধীন এলাকায় ঈদের আগে এ বিষয়ে মাইকিং করা যায়। আইন আছে, তারপরও মনে করিয়ে দেওয়াটা অনেক জরুরি।

আইনের প্রতি কম শ্রদ্ধা প্রদর্শনে অভ্যস্ত একটা সমাজে একটা খুশি উদ্‌যাপনের উপচার হিসেবে বেআইনি মোটরসাইকেল চালনা বন্ধ করা কঠিন। কেউ কেউ এটা চালাবেই আর দুর্ঘটনায় পড়বে, তাতে কোনো ভুল নেই। হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি রাখতে হয়। গত বছর ঈদের দিন প্রথম ছয় ঘণ্টায় এক জেলা শহরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে স্থানীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া কিশোরের সংখ্যা ছিল ২৭।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার, বাংলাদেশে আলু-পটোল, পেঁয়াজ-মরিচ, গরু-খাসি-ব্রয়লারের দাম বাড়লেও মোটরসাইকেলের দাম কমে। ঈদে-উৎসবে ছাড়ের ওপর ছাড় চলতে থাকে বেশুমার। বিজ্ঞাপনে মন খারাপ কিশোরের মান ভাঙাতে মোটরসাইকেল দিয়ে চমকে দেওয়ার গল্প দেখানো হয়। প্রচারিত হয় না সংবিধিবদ্ধ কোনো বাণী, থাকে না গতিসীমার কথা, বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সের কথা, দুজনের বেশি না-চড়ার কথা, সব সময় হেলমেট ব্যবহারের কথা। এই দিকও আমাদের ভেবে দেখতে হবে।

  • গওহার নঈম ওয়ারা লেখক ও গবেষক