সব পক্ষের রাজনৈতিক সদাচার কাম্য

শান্তি ও স্থিতিশীলতা

বিবদমান দুই রাজনৈতিক পক্ষের নমনীয়তার কিছু স্পষ্ট লক্ষণ পরিস্ফুট হয়েছে, যা দেশবাসীর জন্য স্বস্তিদায়ক। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় খুলে দেওয়া, দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনলাভ ও বাসভবনে ফিরে যাওয়া, তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের সদিচ্ছার বার্তা এবং দেশজুড়ে রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস পাওয়া—এসব ঘটনা ইতিবাচক। এসবের মধ্য দিয়ে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসার যে আশাবাদ জেগেছে, তা যেন সত্য হয়, সেই সদিচ্ছা নিয়েই এখন সব পক্ষের কাজ করা উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ যেমনটি মনে করেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচন সরকার, বিরোধী দল, নির্বাচন কমিশন ও ভোটারদের জন্য একটি বড় সুযোগ এনে দিয়েছে।
তাঁর মতো আমরাও ভাবতে চাই, এই নির্বাচনের সুবাদে দেশে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আবার শুরু হবে। সে জন্য এ তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হওয়া বাঞ্ছনীয়।
আপাতত নমনীয় দুই পক্ষতবে একই সঙ্গে বিবেচনায় রাখতে হবে, দেশে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরানোর তাগিদটি শর্তহীন ও উপলক্ষমুক্ত এবং তা টেকসই করার প্রয়োজনীয়তা একটি জাতীয় বিষয়। সব পক্ষকেই মেনে নিতে হবে যে গত তিন মাসের রাজনৈতিক সহিংসতা ও নাশকতার ফলে জাতির বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, যা অনিবার্য ছিল না। বিবদমান উভয় পক্ষকেই উপলব্ধি করতে হবে, তাদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের প্রধান শিকার হয়েছে নিরীহ জনসাধারণ ও জাতীয় সম্পদ। এবং এই উপলব্ধি থেকেই সংকল্প করতে হবে যে রাজনৈতিক বিরোধকে কখনোই এমন গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছাতে দেওয়া চলবে না, যার ফলে জাতি সামগ্রিকভাবে বিপর্যস্ত হয়।
গত তিন মাসের ঘটনাবলির পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়। বিরোধী দলগুলো যেন দায়িত্বশীলতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ পন্থায় নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করে। সরকার যেন বিরোধী দলগুলোর সংবিধানপ্রদত্ত রাজনৈতিক অধিকারগুলো প্রয়োগে বাদ না সাধে, তাদের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন–পীড়ন বন্ধ করে।