চিঠি
চিঠি

চিঠিপত্র

চাকরিতে সনদের বৈধতা, নিয়োগ সমস্যা ও প্রয়োজনীয় সমাধান

একবার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বা অন্য কোনো পরীক্ষায় পাস করার পর কি নির্দিষ্ট সময় পর আবার সেই সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় আবার পরীক্ষা দিতে হয়? আবার একবার কেউ চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আবার তাঁকে ওই চাকরি না দিয়ে বলা হয়, তুমি আবার পরীক্ষা দাও কিংবা কিছুদিন পর বলা হয় তোমার বয়স শেষ, তুমি অযোগ্য? এমন কথা পৃথিবীর কোথাও না থাকলে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠানে আছে, নাম তার বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

একজন শিক্ষার্থী একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ অর্জন করে সেটি সেই প্রতিষ্ঠানে সেই শিক্ষার্থীর সব যোগ্যতা অর্জনের পর প্রদান করেন। যদি সেই প্রতিষ্ঠানের সনদের ওপর আস্থা না থাকে, সেই প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়ন ঘটাতে হবে, অন্যথায় বন্ধ করে দিতে হবে।

কোনো শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ সনদ অর্জনের পর সংশ্লিষ্ট আর কোনো সনদের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে হয় না। তাহলে অর্জিত সনদের প্রতি প্রশ্নের ইঙ্গিত করে। আবার নতুনভাবে অর্জন করা সনদের নির্দিষ্ট মেয়াদ বেঁধে দেওয়া ওই সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিও প্রশ্নের সৃষ্টি করে যে তাহলে প্রথম সনদ প্রদান কি যথার্থ ছিল না?

আবার চাকরির উদ্দেশ্যেই যদি পরীক্ষা নেওয়া হয়, তবে তাদের চাকরি না দেওয়া কি প্রহসন নয়? প্রতিষ্ঠানটি তাদের কাজ সহজ করতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নিয়ম করেছে। আগের সমস্যার সমাধান না করেই এতে করে জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এখান থেকে অসাধু কর্মকর্তারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে দিয়েছে জাল সনদ। এই জাল সনদধারীরা চাকরি করেছেন। এখন ধরাও পড়ছেন।

এখন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে জাল সনদধারী কর্মরত (ও) শিক্ষকদের চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করে তাঁদের নিয়োগ–পরবর্তী গ্রহণ করা যাবতীয় অর্থ ফেরত নেওয়া এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। যাঁরা এই জাল সনদ দিয়েছেন, তাঁদের চাকরিচ্যুত করে বিচারের আওতায় আনা। এই জাল সনদধারীদের কারণে বৈধ সনদধারী যাঁরা চাকরিবঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের নিয়োগ প্রদান করে আদায় করা অর্থ থেকে যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।

প্রথম নিবন্ধন থেকে বৈধ নিবন্ধনধারী আছেন, তাঁদের অনেকে নিয়োগ না পেয়ে মারাও গেছেন, অনেকে অন্য পেশায় আছেন, কারও অবসর গ্রহণ করা হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা হয়তো বেশি হবে না। তাঁদের এভাবে বঞ্চিত করে রাখা যাবে না। বারবার তাঁরা তাঁদের অধিকার আদায়ে রাজপথে নামবেনই। তাই এর সমাধান জরুরি।

  • মো. শাহাদৎ হোসেন শিক্ষক, দোসাইদ অধন্য কুমার কলেজ

ইমেইল: shahadat.dasc@gmail.com