চতুর খ্যাঁকশিয়ালের চলাফেরা

দেশের দুর্লভ এক স্তন্যপায়ী প্রাণীর নাম খ্যাঁকশিয়াল। দুরন্ত লম্ফবিদ, দৌড়বিদ, চতুর, কুশলী ও বুদ্ধিমান এই প্রাণী এলাকাভেদে ফেউ, খেকি বা বাড়াল নামেও পরিচিত। একসময় দেশব্যাপী এদের আবাস ছিল, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলে। কিন্তু নানা কারণে বর্তমানে প্রাণীটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে। ঈশপের গল্পে বুদ্ধিমান প্রাণীটির নাম সবাই শুনলেও বাস্তবে তাদের দেখা পেয়েছেন—এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। খোলা মাঠে তাড়িয়ে দেশি বাঘা কুকুরও ধরতে পারে না এদের। এরা আহত, মৃত বা ঘুমিয়ে থাকার অভিনয় করে পাখিদের কাছে এনে শিকার করতে যেমন জানে, তেমনি ধাওয়াকারী কুকুর বা শত্রুকে ঘোল খাইয়ে দেওয়ার চমৎকার কৌশলও জানে। এরা মানুষের সঙ্গে কৌতুক করতে ভালোবাসে। খ্যাঁকশিয়ালের চোখ কাচের মার্বেলের মতো চকচকে, দুষ্টুমিষ্টি চাহনি, মুখজুড়ে কেমন যেন একটা কৌতুক বা হাসি হাসি ভাব থাকে। চোখা-লম্বাটে মুখ, ফণীমনসার পাতার মতো চমৎকার লম্বাটে খাঁড়া কান, কাশফুলের মতো লোমশ লেজ। বড়রা লালচে-ধূসর, তাতে অস্পষ্ট সাদাটে ফুটকি, লেজ ধূসর, লেজের আগা কালো। এরা নিশাচর, তবে গর্তে ছানা থাকলে দিনেও বের হয় ছানাদের জন্য খাবার আনতে। এদের মূল খাদ্য ছোট-মাঝারি পাখি, নির্বিষ সাপ, ঘাসফড়িং, মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া, মেঠো ইঁদুর। সুযোগ পেলে গৃহস্থ বাড়ির হাঁস-মুরগিও শিকার করে। পাকা খেজুর, গাব, সফেদা, কলা, কাঁঠাল, জাম ইত্যাদি ফল যদি পাকার পরে মাটিতে পড়ে, সেগুলোও খায় এরা। সম্প্রতি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে পাওয়া গেছে সংকটাপন্ন এই প্রাণীর সন্ধান। তা নিয়েই ছবির এ গল্প।

ভোরের আলো ফোটার আগেই দেখা যায় ওদের
ভোরের আলো ফোটার আগেই দেখা যায় ওদের
শিকারের খোঁজে বের হলেও চারপাশে চতুর দৃষ্টি প্রাণীটির
খাবারের সন্ধানে ছুটেছে
শব্দ পেয়েই কান খাড়া করে দাঁড়িয়ে গেল
আয়েশে বসে তাকিয়ে আছে
বিড়াল আকৃতির শরীর হলেও লেজ অনেক লম্বা ও মোটা
ধীরপায়ে চুপি চুপি এগিয়ে শিকার ধরতেও পটু
সব সময় কান খাড়া করে সজাগ থাকে এরা
ঘুরে তাকিয়েছে খুদে শিয়ালটি